ব্রিসবেনে আজ বডিলাইন ফেরানোর ডাক ওয়ার্নের

অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তি তাঁর দেশের একটি সংবাদপত্রে লেখা কলামে পেস এবং আগ্রাসনে ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দেওয়ার উপদেশ দিয়েছেন স্টিভ স্মিথদের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১৩
Share:

চ্যালেঞ্জ: অ্যাশেজের লড়াই শুরুর আগে ট্রফি নিয়ে দুই অধিনায়ক। অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ এবং ইংল্যান্ডের জো রুট। বুধবার ব্রিসবেনে। ছবি: এএফপি

ব্রিসবেনের গতিসম্পন্ন পিচে আজ, বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে অ্যাসেজের লড়াই। তার আগে চাঞ্চল্যকর ভাবে বডিলাইন ফেরানোর দাবি তুললেন শেন ওয়ার্ন।

Advertisement

অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তি তাঁর দেশের একটি সংবাদপত্রে লেখা কলামে পেস এবং আগ্রাসনে ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দেওয়ার উপদেশ দিয়েছেন স্টিভ স্মিথদের। এখানেই থেমে থাকেননি ওয়ার্ন। তাঁর দেশের ক্রিকেটারদের প্রতি ডাক দিয়েছেন, বডিলাইন সিরিজের বদলা নেওয়ার।

১৯৩২-৩৩ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিতর্কিত বডিলাইন বোলিংয়ের অস্ত্র প্রয়োগ করেছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ডগলাস জার্ডিন। মূলত রানমেশিন ডন ব্র্যাডম্যানকে থামানোর জন্যই এই ছক কষেছিলেন তিনি। জার্ডিনের বডিলাইনের দুই বিখ্যাত মুখ ছিলেন তাঁর দুই ফাস্ট বোলার হ্যারল্ড লারউড এবং বিল ভোস। বডিলাইন অর্থাৎ, শরীর লক্ষ্য করে ক্রমাগত শর্ট বল করার রণনীতি সফলও হয়েছিল। বার্ট ওল্ডফিল্ডের মাথায় বল লেগেছিল। বিল উডফুলের বুকে এত জোরে আছড়ে পড়েছিল লারউডের বাউন্সার যে, উপস্থিত অনেকে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন, বড় কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে। ব্র্যাডম্যান কোনও আঘাত পাননি কিন্তু তাঁর ব্যাটিং গড় কমে এসেছিল পঞ্চাশের ঘরে। সিরিজও জিতে নেয় জার্ডিনের ইংল্যান্ড।

Advertisement

বডিলাইন সিরিজের পরেই প্রবল বিতর্কের মধ্যে পাল্টে যায় ক্রিকেটের নিয়ম। জার্ডিন যে ভাবে পুরো লেগের দিকে ফিল্ডার বাড়িয়ে আক্রমণ করেছিলেন, সেটা এখন আর সম্ভব হবে না। ফিল্ডিং বিধিনিষেধ চলে আসে তার পর থেকেই। ওয়ার্ন তবু স্লোগান তুলেছেন বডিলাইন ফেরাও, জার্ডিনের দেশের বিরুদ্ধেই। ‘পঁচাশি বছর হয়ে গেল ধুরন্ধর ডগলাস জার্ডিন লারউডকে দিয়ে বিল উডফুলের অস্ট্রেলিয়াকে আক্রমণ করিয়েছিলেন। আমার মনে হচ্ছে, এই অস্ট্রেলীয় দলের ক্ষমতা আছে জো রুটের ইংল্যান্ডকে একই ভাবে বিপর্যস্ত করে দেওয়ার,’ প্রাক্তন লেগস্পিনার কলামে লিখেছেন।

অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান দলে তিন পেসার মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স এবং জশ হেজ্‌লউড। এর মধ্যে স্টার্ক এবং কামিন্স এক্সপ্রেস গতির বোলার। কয়েক বছর আগের মিচেল জনসনের মতোই ভয়ঙ্কর বোলিং করে তাঁরা ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের মনে ভয় ধরিয়ে দিতে পারেন বলে অস্ট্রেলীয় প্রচারমাধ্যম বাজনা বাজাতে শুরু করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে পুরোমাত্রায় ফিরে এসেছে স্লেজিং। নেথান লায়ন পর্যন্ত হুঙ্কার ছেড়েছেন, জনসনের ভয়ঙ্কর গতির সামনে বিধ্বস্ত সেই ইংল্যান্ড দলের অনেকের ক্রিকেট জীবনই থেমে গিয়েছিল। অনেকে অবসর নিয়ে ফেলেছিলেন। এ বারও সেরকম হলে অবাক হওয়ার নেই।

ওয়ার্ন সেই আগুনকে আরও উস্কে দিলেন সিরিজ শুরুর এক দিন আগে। ব্রিসবেনে এ বার খুবই বাউন্সি এবং গতিসম্পন্ন পিচ হয়েছে বলে পূর্বাভাস। সেই বাইশ গজে বাউন্সারের বন্যা বইয়ে দিতে বলেছেন ওয়ার্ন। তাঁর মতে, জনসনের মতোই ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলতে পারেন প্যাট কামিন্স। ‘মিডল এবং লোয়ার অর্ডারে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং খুবই নড়বড়ে। ওখানেই বডিলাইনটা প্রয়োগ করতে হবে,’ লিখছেন ওয়ার্ন। অতিথিদের ‘স্বাগত’ জানাতে ভোলেননি অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ-ও। বলেছেন, মিচেল জনসনের চেয়েও নিষ্ঠুর এবং ভয়ঙ্কর হতে পারে এ বারের পেসাররা। স্মিথ বলেছেন, ‘‘২০১৩-তে আমি নেটে জনসনকে খেলছিলাম। ওকে যেমন ভয়ঙ্কর দেখাত, এ বার স্টার্ক-কামিন্সদের তার চেয়েও নির্মম দেখাচ্ছে।’’

একদল নিজেদের দেশের আগুনে পিচে ভয় ধরাতে চায়। অন্য দলটিকে ভয়কে জয় করতে হবে। অ্যাশেজের দিকে নজর গোটা ক্রিকেট দুনিয়ার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন