হরভজনের হুঙ্কার।
এ তো অচেনা চেন্নাই!
মঙ্গলবার ওয়াংখেড়েতে মুম্বই-চেন্নাই লড়াই দেখতে দেখতে বারবার এই কথাটাই মনে হচ্ছিল।
চেন্নাই সুপার কিংগস মানে তাদের দুশো তাড়া করে জিততে বলুন, তাও করে দেবে। আবার অল্প রানে বিপক্ষকে আটকাতে হলে, সেটাও করবে। ওদের ইমেজটা এ রকমই। অথচ মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের দেওয়া ১৮৮-র টার্গেটের পিছনে দৌড়তে কী হিমশিমটাই না খেল সিএসকে! সে জন্যই এই ম্যাচে বেশ অচেনা লাগল ধোনিদের। তবে এটা বোধহয় হওয়ারই ছিল।
ব্রেন্ডন ম্যাকালামের অভাবটা ভাল ভাবেই টের পেল এম এস ধোনিরা। আসলে ম্যাকালাম শুরুতে যে ঝড়টা তুলছিল, সেটা তোলার লোক আর নেই সিএসকে-তে। ফলে মিডল অর্ডারে চাপটা বেশি পড়ে গেল। এবং সেটা এমন একটা ম্যাচে যেখানে হার-জিতটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও শুক্রবার জিতলে ধোনিরা ফাইনালে উঠে যাবে। কিন্তু এ দিন ওয়াংখেড়েতে ওদের আত্মবিশ্বাস যে ধাক্কা খেল, সেটা সামলে ওঠা সহজ হবে না।
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রাঁচির উইকেটের সাহায্য পেতে পারে সিএসকে। ওখানকার উইকেট সাধারণত কিছুটা স্পিন সহায়ক হয়। তাই ওখানে অশ্বিন, জাডেজা, নেগিরা কাজে লাগতে পারে। ব্র্যাভো অনেকটা ছুটে এসে বল করলেও আখেরে তা স্লো বলই। রায়নাও স্পিন করে। রাঁচিতে একটু স্লো-লো উইকেট। যে উইকেটে সুবিধাটা পেতে পারে চেন্নাই। ওয়াংখেড়ের সমস্যাগুলো রাঁচিতে হয়তো থাকবে না ধোনিদের সামনে।
এ দিন মুম্বই বড় স্কোর তুলে দেওয়ার পর চেন্নাই হেরে গেল কয়েকটা কারণে। সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ কারণটার কথা আগেই বলেছি। ব্রেন্ডন ম্যাকালামের ইংল্যান্ড সিরিজ যাওয়া। বাকিগুলো, রায়নার ফর্মে না থাকা। শুরুতেই ডোয়েন স্মিথের দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হয়ে ফিরে যাওয়া এবং ধোনির এসেই আউট হওয়া। একটা ওভারে হরভজন রায়না-ধোনি দু’জনকেই আউট করে দিল। ওটাও একটা ফ্যাক্টর।
অন্য দিকে মুম্বইকে দেখুন। প্রথম উইকেটেই দশ ওভারে ৯০ তুলে দিল পার্থিব ও সিমন্স। মিডল অর্ডারে রান তোলার কাজটা করে দিল পোলার্ড। এ বারের আইপিএলে মুম্বইয়ের সোনার দৌড়টা শুরু হয়েছে পোলার্ড রানে ফেরার পর থেকেই। মঙ্গলবারও
ওর ওই ১৭ বলে ৪১-এর ইনিংসই মুম্বইকে বড় স্কোরে পৌঁছে দিল।
ধরাশায়ী ধোনিদের দেখলেন সপুত্র অমিতাভ বচ্চন। ছবি বিসিসিআই
মুম্বইয়ের টানা জয়ের পিছনে আরও দুটো ফ্যাক্টর কাজ করছে। এক, ওপেনারদের ফর্ম। এবং দুই, নতুন বলে মালিঙ্গা-ম্যাকক্লেনাঘন জুটি। নিউজিল্যান্ডের বাঁ হাতি পেসার আসার পর থেকে মালিঙ্গার উপর চাপটা অনেকটা কমে গিয়েছে। আর ও খোলা মনে বলটা করতে পারছে।
চেন্নাইয়ের ব্যাটিং সমস্যায় ভুগলেও ধোনিদের বোলিংটা কিন্তু মোটেই খারাপ নয়। একেই নেহরা বেশ ভাল ফর্মে। ব্র্যাভোও যথেষ্ট ভাল বল করছে। তার উপর অশ্বিনকে দিয়ে শুরু করে এ দিন একটা ফাটকা খেলেছিল ধোনি। যেটা ও প্রায়ই করে থাকে। রান আটকানোর দিক থেকে ফাটকাটা লেগে গেলেও অবশ্য উইকেট তুলতে পারেনি অশ্বিন। এই বোলিংয়ের বিরুদ্ধেও যে মুম্বইয়ের ব্যাটসম্যানরা এই রানটা তুলতে পারল, ফাইনালে ওঠাটা তারই পুরস্কার বলতে পারেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ১৮৭-৬ (সিমন্স ৬৫, পার্থিব ৩৫, পোলার্ড ৪১, ব্র্যাভো ৩-৪০)
চেন্নাই সুপার কিঙ্গস ১৬২ (দুপ্লেসি ৪৫, রায়না ২৫, মালিঙ্গা ৩-২৩)