মনোজ তিওয়ারি অভিযোগ না করে খেলুক: অরুণ লাল

রবিবার বাংলার অনুশীলন শুরু হওয়ার কথা ছিল ১০টা থেকে। কিন্তু ৯.২৫-এর মধ্যেই মাঠে চলে এলেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর কাছে এখনও শৃঙ্খলাই শেষ কথা। ক্রিকেটারদের মাঠের মাঝখানে জড়ো করে প্রায় এক ঘণ্টার ক্লাস নিলেন মেন্টর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:২৯
Share:

বিভাজনের প্রশ্নকে গুরুত্বই দিতে চাইলেন না বাংলার নতুন মেন্টর অরুণ লাল।

দলের মধ্যে ওঠা বিভাজনের প্রশ্নকে গুরুত্বই দিতে চাইলেন না বাংলার নতুন মেন্টর অরুণ লাল। রবিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাস মাঠে তিনি জানিয়ে দিলেন, তাঁর রঞ্জি ট্রফি জয়ের সময়েও ড্রেসিংরুমের পরিবেশ আহামরি কিছু ছিল না। শুধুমাত্র দক্ষতার উপর ভর করেই বিপক্ষকে জবাব দিয়েছেন তাঁরা। বাংলার বর্তমান ক্রিকেটারদেরও সেই বার্তাই দিলেন বাংলার মেন্টর অরুণ লাল।

Advertisement

রবিবার বাংলার অনুশীলন শুরু হওয়ার কথা ছিল ১০টা থেকে। কিন্তু ৯.২৫-এর মধ্যেই মাঠে চলে এলেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর কাছে এখনও শৃঙ্খলাই শেষ কথা। ক্রিকেটারদের মাঠের মাঝখানে জড়ো করে প্রায় এক ঘণ্টার ক্লাস নিলেন মেন্টর। সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, অনুষ্টুপ মজুমদারদের তিনি জানিয়ে দিলেন, লক্ষ্য স্থির করে রঞ্জি ট্রফি জেতার জন্য ঝাঁপাও। বাইরে কে কী বললো তাতে কান দিও না। অরুণ লাল বলেন, ‘‘খেলাটা জটিল করে ফেলা উচিত নয়। হাতে ব্যাট আছে, বল আছে, সেটা কাজে লাগাক ক্রিকেটারেরা। ব্যাটসম্যানরা যদি রান করে আর বোলাররা যদি উইকেট পায়, তা হলে আমাদের কে আটকাবে! তা ছাড়া, নিজের রাজ্যকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারার মতো অনুপ্রেরণা আর কী হতে পারে? ২০ বছর পরে বাংলার টুপি মাথায় দিতে পেরে আমি নিজেই তো উত্তেজিত বোধ করছি।’’

বাংলার ড্রেসিংরুমের পরিবেশ নষ্ট হওয়া নিয়ে মাথা ঘামাতেই চান না অরুণ। বলে দিচ্ছেন, ‘‘ড্রেসিংরুম পরিবেশ আবার কী? যাও মাঠে গিয়ে পারফর্ম করো।’’ প্রথম দিন বাংলার অনুশীলনে উপস্থিত হয়েই অরুণের বার্তা, ‘‘আমরা যখন রঞ্জি ট্রফি জিতেছিলাম, তখন কি আমাদের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ সব চেয়ে ভাল ছিল? পরিবেশ যাই হোক, মাঠে গিয়ে তো খেলতে হবে। বাংলার জার্সি পড়ে যখন মাঠে ঢুকছ, তখন শুধু একটাই চিন্তা মাথায় থাকা উচিত, কী ভাবে দলকে জেতাব। বাকি আর কোনও কিছুর গুরুত্ব নেই।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: বাংলার স্বার্থে প্রথম ম্যাচেই শুধু নেতৃত্বে রাজি মনোজ

দেওধর ট্রফির ফাইনাল খেলে শনিবার রাতেই শহরে পৌঁছেছেন বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। মাঠে এসেই তিনি সরাসরি চলে গেলেন মেন্টরের সঙ্গে কথা বলতে। ঘণ্টাখানেক আলোচনা করেন তাঁরা। মনোজের সঙ্গে কী কথা বলেছেন তা না জানালেও অরুণের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ক্রিকেটারদের বুঝতে হবে কোনও অভিযোগ অথবা অজুহাত দলকে জেতাতে পারবে না। শুধুমাত্র দলগত প্রচেষ্টার সাহায্যে চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব। সব কিছু ভুলে রঞ্জি ট্রফিতে বাংলার ভাল ফল করা নিয়েই ভাবতে হবে। আমার বিরুদ্ধে কে কী মন্তব্য করল, তা নিয়ে ভেবে কী হবে? লোকের কথাকে অতিরিক্ত মূল্য দিলে ম্যাচ জিতবে কী করে?’’

আরও পড়ুন: তিন ম্যাচে ন’শো রান, ভাবতে হবে বোলিং নিয়েও

প্রাক্তন ভারতীয় ব্যাটসম্যান এটাও মনে করেন যে, সামগ্রিক ভাবে মানের দিক থেকে অনেকটাই এগিয়েছে ক্রিকেট। বলেন, ‘‘ভারতীয় দলে জায়গা করা এখন অত্যন্ত কঠিন। দেখা যাচ্ছে বিদর্ভ রঞ্জি ট্রফি জিতছে, গুজরাত জিতছে। তার মানে একটাই, জাতীয় স্তরে ক্রিকেটের মান অত্যন্ত উন্নত হয়েছে। যা অত্যন্ত ভাল একটি ইঙ্গিত।’’ বাংলা থেকে খুব উচ্চ মানের ক্রিকেটার উঠছে কোথায়? শেষ বার রঞ্জি ট্রফি এসেছে যখন তাঁরা খেলতেন, ১৯৮৯ সালে। অরুণ তবু আশাবাদী। প্রশ্ন শুনে তাঁর উত্তর, ‘‘বাংলার দু’জন ক্রিকেটার ভারতীয় দলে রয়েছে। সংখ্যাটা মোটেও খারাপ নয়। একটা সময় ছিল যখন মুম্বই থেকে সাত-আট জন পর্যন্ত খেলত। এখন কোনও একটা রাজ্যের একাধিপত্য নেই। সমস্ত দিকেই ভাল খেলোয়াড় তৈরি হচ্ছে। বাংলা থেকে আরও ক্রিকেটার বেরোবে।’’

সোমবার সকাল ১০.৩০-এর বিমানে চণ্ডীগড় উড়ে যাচ্ছেন মনোজেরা। সেখানে থেকে আমতারের পথে রওনা হবে বাংলা। অধিনায়ক, কোচ নিয়ে নানা বিতর্কের ঝড়ের মধ্যে একটাই কবচ— সঙ্গে একটা অরুণ লাল আছে! দুরারোগ্য ক্যানসারকে হারিয়ে অদম্য তিনি যাচ্ছেন দলের সঙ্গে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন