হুঙ্কার: অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়ে স্টার্ক। অ্যাডিলেডে। ছবি: এএফপি
অ্যাডিলেড টেস্টের শেষ দিনে ঠিক কি ছিল স্টিভ স্মিথের স্ট্র্যাটেজি? অবশ্যই জো রুটের বিরুদ্ধে তাঁর সেরা পেসারদের আক্রমণে নিয়ে আসা। কিন্তু এর বাইরেও একটা স্ট্র্যাটেজি নিয়েছিলেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। টেনশনের হাত থেকে মুক্তি পেতে মঙ্গলবার রাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে শুয়েছিলেন স্মিথ।
বুধবারের খেলা শুরু হওয়ার পরে অবশ্য বেশি সময় টেনশন সহ্য করতে হয়নি স্মিথকে। শেষ দিনে ১৭৮ চাই, হাতে ছয় উইকেট। এই অবস্থায় ইংল্যান্ডের ভরসা ছিল অধিনায়ক জো রুট। কিন্তু নিজের তৃতীয় ওভারেই রুটকে (৬৭) ফিরিয়ে দেন জস হেজেলউড। তার আগে প্রথম ওভারে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন অন্য অপরাজিত ব্যাটসম্যান ক্রিস ওকস-কে। হেজেলউডের এই দু’টো ডেলিভারিতেই ম্যাচ ঘুরে যায় অস্ট্রেলিয়ার দিকে। এর পর বিধ্বংসী মিচেল স্টার্কের সামনে দাঁড়াতে পারেননি বাকি ব্যাটসম্যানরা। হেজেলউড দু’টো এবং স্টার্ক পাঁচটি উইকেট নেন। ইংল্যান্ডের ইনিংস শেষ হয়ে যায় ২৩৩ রানে। অ্যাডিলেড টেস্ট ১২০ রানে জিতে সিরিজে ২-০ এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
কিন্তু সে তো বাইশ গজের ঘটনা। তার আগে যে তাঁকে কতটা টেনশন সহ্য করতে হয়েছিল, সেটা টেস্ট জিতে উঠে বলেছেন স্মিথ নিজেই। ‘‘মঙ্গলবার রাতে আমাকে ঘুমের ওষুধ খেতে হয়েছিল। সত্যি কথা বলতে কী, আমি বেশ নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। আসলে এ সবই দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার একটা অঙ্গ। মাঝে মাঝে কেউ ভুল সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। আমরা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকেই তো শিখি।’’
আরও পড়ুন: পুলিশ এ বার বন্ধ করে দিল এটিকে ম্যাচও
এই টেস্টে সুযোগ পেয়েও ইংল্যান্ডকে ফলো অন করাননি স্মিথ। যা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছিল। ফলে এই টেস্ট হারলে স্মিথকে নিশ্চিত ভাবে কাঠগড়ায় তোলা হতো। স্মিথও ঘুরিয়ে স্বীকার করে নিচ্ছেন, তাঁকে ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘আমাকে দেখতে হবে নিজের অধিনায়কত্বে আরও কী কী ব্যাপারে আমি উন্নতি ঘটাতে পারি।’’
সিরিজে ০-২ পিছিয়ে থাকলেও ইংল্যান্ড অধিনায়ক রুট কিন্তু আশা করছেন, সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে তাঁদের সমস্যা হবে না। রুট বলেছেন, ‘‘আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে যে ভাবে ব্যাট করেছি, সেটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে আমরা এই সিরিজ থেকে এখনও হারিয়ে যাইনি।’’ দু’টো টেস্টে হারের পরেও একটা ব্যাপার নিয়ে আশাবাদী রুট। তিনি বলেছেন, ‘‘দু’টো টেস্টে দেখেছি, বেশ কয়েকটা সেশনে আমরা অস্ট্রেলিয়ার থেকে ভাল খেলেছি। কিন্তু পুরো পাঁচ দিন ধরে আমরা ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে রাখতে পারিনি। সেটাই আমাদের করতে হবে।’’
শোনা যাচ্ছে, তৃতীয় টেস্টের আগে ইংল্যান্ড দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন বেন স্টোকস। অন্য দিকে ওপেনার অ্যালেক্স হেলসের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও অভিযোগ না আনায় এই ওপেনারকেও দলে নেওয়ার ব্যাপারে এখন কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড এই দুই বিতর্কিত ক্রিকেটারকে দলে ফিরিয়ে নেয় কি না, সেটাই দেখার।