বাইশ গজ যে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় রহস্য, তা বারবার প্রমাণ হলেও উইকেট-চর্চা কখনও থামেনি। আসন্ন ভারত-অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট যুদ্ধ শুরুর আগেও স্বাভাবিক ভাবেই অব্যাহত সেই জল্পনা। আগ্রহ বাড়ছে ইডেনের উইকেট ঘিরে। গত বছর এই সময়ে ভারত-নিউজিল্যান্ড টেস্টে ইডেন পিচের চরিত্রে অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন দেখে অনেকে যা অবাক হয়েছিলেন, তার পরে এ বার ইডেনের বাইশ গজ নিয়ে কৌতূহল থাকাই স্বাভাবিক।
এই কৌতূহল মেটাতে বাংলার রঞ্জি ক্রিকেটারদের পূর্বাভাস, ইডেনের বাইশ গজে সম্ভবত বড় স্কোর অপেক্ষা করে আছে বিরাট কোহালি ও স্টিভ স্মিথদের জন্য। বুধবার ইডেনের নতুন উইকেটে অনুশীলনের পরে অন্তত সে রকমই ধারণা তাঁদের। সব ঠিকঠাক চললে ২১ সেপ্টেম্বর ইডেনে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে রানের ফোয়ারা দেখা যেতে পারে।
ঠিক এক সপ্তাহ পরেই ইডেনে ফের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আসর। ভারত-অস্ট্রেলিয়া হাই ভোল্টেজ ওয়ান ডে যুদ্ধে ইন্ধন জোগানোর যথেষ্ট রসদ নাকি রয়েছে এই বাইশ গজে, যা এ বার নতুন করে তৈরি হয়েছে। এ দিন বাংলার সম্ভাব্য রঞ্জি দলের ক্রিকেটাররা নিজেদের মধ্যে ম্যাচ-পরিস্থিতিতে অনুশীলন করতে নেমেছিলেন এই উইকেটে। যার জন্য বোর্ডের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নিতে হয়েছিল। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অনুশীলনের পরে বাংলার কোচ সাইরাজ বাহুতুলে বলেন, ‘‘স্পোর্টিং উইকেট। বাউন্স ও ক্যারি ভাল রয়েছে। বল ব্যাটে ভাল আসছে। এই উইকেটে স্ট্রোক নেওয়া সহজ হবে ব্যাটসম্যানদের পক্ষে।’’ এ দিন কিছুক্ষণের জন্য স্লিপে ফিল্ডিং করতে দেখা যায় সাইরাজকে।
আরও পড়ুন: স্মিথ, ওয়ার্নারের জন্য অস্ত্রে শান মহম্মদ শামির
বুধবার সকালে ইডেনের উইকেট দেখে নাকি দলের সাপোর্ট স্টাফের কাছে বাইশ গজের প্রশংসা করেন ভিশন ২০২০-র ব্যাটিং উপদেষ্টা ভিভিএস লক্ষ্মণও। এই ইডেনেই এক ঐতিহাসিক ইনিংস খেলে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিনি টেস্ট জিতিয়েছিলেন। এই বর্ষার মরসুমেও এত কঠিন উইকেট দেখে তিনি নাকি বেশ অবাকই হয়ে যান। অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের লক্ষ্মণ বলেন, ‘‘ভাল উইকেট তৈরি হয়েছে। এখানে একটা জমজমাট ওয়ান ডে ম্যাচ উপভোগ করার আশা করছি।’’ বাংলার প্র্যাকটিসে এ দিন তিনি ছিলেন আম্পায়ারের ভূমিকায়। প্রায় সাদা পিচে হালকা সবুজের আভা দেখা যাচ্ছিল উইকেটে। এই উইকেটই বিরাটদের দেওয়া হতে পারে বলে জানান কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়।
এক ব্যাটসম্যান জানান, ‘‘সকালে শুরুর দিকে বল একটু থমকে আসছিল। কিন্তু রোদ ওঠার পরে স্ট্রোক নেওয়ার পক্ষে পিচ বেশ সহজ হয়ে যায়। বৃষ্টি না হলে এই উইকেটে প্রচুর রান আছে।’’ মিডিয়াম পেসার সায়ন ঘোষ ও সৌরভ মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘বল বেশি নড়াচড়া করছে না। লাল বলে যদিও বা একটু হবে, সাদা বলে মুশকিল। আরও এক সপ্তাহে উইকেটটা ব্যাটিংয়ের পক্ষে আরও ভাল হতে পারে।’’ স্পিনারদের সুবিধা নিয়ে অবশ্য সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। রঞ্জি ক্রিকেটাররা এই পিচ-বার্তা দিলেও কোহালিদের এই পিচ পছন্দ হয় কি না, এখন সেটাই দেখার।