স্মিথদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ ভারতীয় বোর্ডের

ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া ডিআরএস-বিতর্ক থেমেও থামল না। বুধবার আইসিসি জানিয়েছিল, তারা স্টিভ স্মিথ-কে ডেকে পাঠাচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫০
Share:

ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া ডিআরএস-বিতর্ক থেমেও থামল না। বুধবার আইসিসি জানিয়েছিল, তারা স্টিভ স্মিথ-কে ডেকে পাঠাচ্ছে না। কিন্তু বৃহস্পতিবারেই ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থাকে পাল্টা বাউন্সার দিয়ে ভারতীয় বোর্ড সরকারি ভাবে স্মিথদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে দিয়েছে। আঙুল তোলা হয়েছে সেই সময় ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটসম্যান, অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ এবং তাঁর সঙ্গী ব্যাটসম্যান পিটার হ্যান্ডসকম্বের বিরুদ্ধে। এঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অন্যায় ভাবে ড্রেসিংরুম থেকে ডিআরএস নিয়ে সাহায্য নিচ্ছিলেন।

Advertisement

ভারতীয় বোর্ডের এমন চরমপন্থী মনোভাব দেখে অনেকের মনে হচ্ছে, নেপথ্যে আরও এক যুদ্ধ তীব্র আকার নিল। সেই যুদ্ধ হচ্ছে আইসিসি চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহরের সঙ্গে বিরাট কোহালিদের বোর্ডের। দু’তরফে মোটেই সখ্যতার সম্পর্ক নেই এই মুহূর্তে। আইসিসি থেকে ভারতীয় বোর্ডের প্রাপ্ত লভ্যাংশ কমিয়ে দিতে চান মনোহর। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে ভারত।

এর মধ্যেই আইসিসি যে দ্রুত বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, স্মিথের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে ভীষণই ক্ষুব্ধ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। কেউ কেউ টেনে আনছেন ‘মাঙ্কিগেট’ প্রসঙ্গ। সেই সময় হরভজন সিংহের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া বোর্ড। তার ফলে নিরপেক্ষ বিচারক দিয়ে শুনানির ব্যবস্থা করতে হয়েছিল আইসিসি-কে। যদিও সেই শুনানিতে প্রমাণিত হয়নি যে, হরভজন বর্ণবৈষম্যমূলক কোনও মন্তব্য করেছিলেন অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসকে। তবে তখনকার সেই অভিজ্ঞতা সেই সফরে থাকা অনেক ভারতীয় ক্রিকেটার ভোলেননি। সারা দিন ম্যাচ খেলে সন্ধ্যা থেকে তাঁদের বসতে হতো শুনানিতে।

Advertisement

আইসিসি-র সিদ্ধান্তে চটেছেন সুনীল গাওস্করও। এক টিভি চ্যানেলে গাওস্কর বলেছেন, ‘‘ভারতীয় কোনও ক্রিকেটার এর পরে যদি ডিআরএস নেওয়ার সময় ড্রেসিংরুমের সাহায্য চায়, তা হলে কি তাদের শাস্তি দেওয়া হবে?’’ গাওস্কর এও বলেন, ‘‘আমি দেখতে চাই, রাঁচীতে বিরাট কোহালি ডিআরএস নেওয়ার সময় ড্রেসিংরুমের দিকে তাকাচ্ছে। দেখব, ম্যাচ রেফারি আর আইসিসি তখন কী করে।’’

আরও দেখার, ভারতীয় বোর্ডের অভিযোগের ভিত্তিতে আইসিসি কোন রাস্তায় হাঁটে। অনেকেই নিশ্চিত, ভারতীয় বোর্ড লিখিত অভিযোগ জানানোয় নিরপেক্ষ বিচারক দিয়ে শুনানি করতে বাধ্য হবে আইসিসি। ভারতীয় বোর্ড প্রমাণ হিসেবে ম্যাচের সেই মুহূর্তের ভিডিও ক্লিপিংসও পাঠিয়েছে আইসিসি-কে। ভারতীয় বোর্ডের দাবি, সেই ক্লিপিংসে পরিষ্কারই স্মিথ ড্রেসিংরুমের পরামর্শ চাইছেন বলে প্রমাণ রয়েছে।

স্মিথের বিরুদ্ধে ‘লেভেল টু’ অপরাধ আনা হয়েছে। ঘটনার আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে এই অভিযোগ দায়ের করতে হয়। জানা গিয়েছে, আইসিসি কোনও পদক্ষেপ না করায় ভারতীয় বোর্ড এবং ক্রিকেটারেরা তো ক্ষুব্ধ ছিলেনই। তাঁরা আরও রেগে গিয়েছেন, অস্ট্রেলীয়রা ক্রমাগত পাল্টা বিবৃতি দিয়ে যাওয়ায়। ‘‘উল্টে এখন ওরাই আমাদের মিথ্যেবাদী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করছে,’’ উত্তেজিত ভাবে বললেন এক জন।

কোহালি সাংবাদিক সম্মেলনে এসে অভিযোগ করেছিলেন, স্মিথ-রা এই প্রথম নয়, আগেও দু’বার একই জিনিস ঘটানোর চেষ্টা করেছিলেন। ঘুরিয়ে তিনি প্রতারকই বলে দেন অস্ট্রেলীয় দলকে। সেই বিবৃতি নিয়ে বৃহস্পতিবারও অস্ট্রেলিয়ার সহকারী কোচ পাল্টা বলে যান, ‘‘এটা একেবারেই ভিত্তিহীন অভিযোগ।’’

ভারতীয় শিবিরে এ সব শুনেই আরও ক্ষোভ বেড়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, আইসিসি আমাদের নোটিশ পাঠাতে তো দেরি করে না। তা হলে স্মিথদের ডাকবে না কেন? ওদিকে, স্মিথ-রা এ নিয়ে খুল্লমখুল্লা বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। এমনকী, প্রথা ভেঙে ম্যাচ রেফারি স্টুয়ার্ট ব্রড পর্যন্ত অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন। যা দেখে ভারতীয়দের ক্ষোভ আরও বেড়েছে।

এর পরেই সিদ্ধান্ত হয়, লিখিত ভাবে অভিযোগ জানানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন