সাফল্য: রাজ্য দলে সুযোগ পেলেন মমতা কিস্কু। নিজস্ব চিত্র।
প্রতি দিন ভাইয়ের ক্রিকেট-শেখা দেখতে অ্যাকাডেমিতে আসত দিদি। সে রকমই এক দিন। হঠাৎ অ্যাকাডেমির প্রশিক্ষক প্রস্তাব দেন, ‘তুইও দেখ না খেলে।’ ব্যাট-বল হাতে মাঠ দাপানোটা সেই শুরু অন্ডালের বহুলার বাসিন্দা ১৭ বছরের মমতা কিস্কুর। নাগাড়ে পরিশ্রম। তার পরে সুযোগ মেলে অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলা দলে।
মমতার থেকে এক বছরের ছোট তার ভাই বিশাল। তার সঙ্গেই হরিপুর ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে প্রথম আসা মমতার। ২০১৪ সাল থেকে শুরু প্রশিক্ষণ। সে বছরই সুযোগ মেলে বর্ধমান জেলা দলে। সিএবি-র আন্তঃজেলা ক্রিকেট প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনালে বীরভূমের বিরুদ্ধে মমতা ব্যাট হাতে ৪২ রান ও বলে দু’টি উইকেট পায়। সেমিফাইনালে নদিয়ার কাছে দল হারলেও মমতা করে ৬৫ রান। ২০১৫ সালটা কিছুটা হতাশার। ইডেনে সিএবি-র প্রশিক্ষণ শিবিরে চূড়ান্ত পর্বে ঠাঁই মেলেনি তার। তবে হাল ছাড়েনি অলরাউন্ডার মমতা। জেলার হয়ে নজরকাড়া সাফল্যের পরে ২০১৬-র শেষ দিকে এক্কেবারে বাংলা দলে জায়গা করে নেয় সে। সম্প্রতি আন্তঃরাজ্য প্রতিযোগিতাতেও রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে সে।
তবে মমতার খেলার শুরুটা হয়েছিল হঠাৎই। কী রকম? হিরাপুরের অ্যাকাডেমির প্রশিক্ষক সুব্রত ঘোষাল বলেন, ‘‘বছর খানেক আগে বিশালের সঙ্গে ওকে দেখি। ক্রিকেটে আগ্রহ দেখে মমতাকে প্রশিক্ষণে যোগ দিতে বলি।’’ মিতালি রাজ আর ঝুলন গোস্বামীই তার আদর্শ বলে জানায় মমতা।
মমতার বাবা জয়রামবাবু পেশায় বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষী। মা গীতাদেবী গৃহবধূ। পরিবারে অভাব রয়েছে। কিন্তু জয়রামবাবু, গীতাদেবী বলেন, ‘‘মেয়ের খেলা বন্ধ হতে দেব না। ওর পাশে আছি।’’ বাড়ির এই ‘পাশে থাকা’র জোরেই বোধহয় ব্যাট হাতে মমতা বলে, ‘‘এখন লক্ষ্য জাতীয় স্তরে খেলা।’’