রঞ্জির দশ দিন আগে কোচ ছাঁটাই করার দিকে বাংলা

সকালে সল্টলেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস মাঠে রঞ্জির মহড়া শুরু করলেন বাংলার ক্রিকেটারেরা। সেখানে হাজির ভি ভি এস লক্ষ্মণ। যিনি ভিশন ২০২০-র সঙ্গে যুক্ত ব্যাটিং পরামর্শদাতা হিসেবে। আশ্চর্যজনক ভাবে সেই প্র্যাক্টিসে অনুপস্থিত বাংলার কোচ সাইরাজ বাহুতুলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৫২
Share:

সঙ্কট: বাহুতুলে সরলে তাঁর জায়গা কে, পরিষ্কার নয় এখনও। ফাইল চিত্র

এমন অভিনব ভঙ্গিতে বাংলার রঞ্জি ট্রফি প্রস্তুতি শুরু হতে আর কখনও দেখা গিয়েছে?

Advertisement

সকালে সল্টলেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস মাঠে রঞ্জির মহড়া শুরু করলেন বাংলার ক্রিকেটারেরা। সেখানে হাজির ভি ভি এস লক্ষ্মণ। যিনি ভিশন ২০২০-র সঙ্গে যুক্ত ব্যাটিং পরামর্শদাতা হিসেবে। আশ্চর্যজনক ভাবে সেই প্র্যাক্টিসে অনুপস্থিত বাংলার কোচ সাইরাজ বাহুতুলে।

আর বিকেলে সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হল ক্লাব হাউসের দোতলার ঘরে। সেখানে মোটামুটি ভাবে যা আলোচনা হল, তাতে কোচকে ছাঁটাইয়ের দিকেই এগোচ্ছে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা। কারও কারও মনে হচ্ছে, বাহুতুলেকে শুরুতে বড় চুক্তি দিয়ে আনাটাই বিরাট ভুল হয়েছিল। সেই সময় সিনিয়র ক্রিকেটে দারুণ কিছু সাফল্য বা অভিজ্ঞতা তাঁর ছিল না। তাঁর আমলে টিম স্পিরিট বিঘ্নিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে।

Advertisement

সরকারি ভাবে সিএবি-র পক্ষ থেকে কেউ এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে জানা গিয়েছে, বাহুতুলের চাকরি বাঁচানো কঠিন। বিজয় হজারেতে বাংলার ব্যর্থতার দায় তাঁর উপরেই চাপানো হচ্ছে। বৈঠকে বিজয় হজারেতে বাংলার ম্যানেজারকে ডাকা হয়েছিল। শোনা যাচ্ছে, ম্যানেজারের রিপোর্টও নাকি খুব একটা কোচের পক্ষে যাচ্ছে না।

রঞ্জিতে বাংলার অভিযান শুরু ১ নভেম্বর। হিমাচল প্রদেশে গিয়ে খেলতে হবে হিমাচলকে। মানে টেনেটুনে আর দশ দিন মতো বাকি। তার আগে কোচকে নিয়ে এমন টালবাহানা নজিরবিহীন। সব চেয়ে বড় প্রশ্ন উঠছে, বাহুতুলেকে এখন সরানো হলে পরিবর্ত হিসেবে কে আসবেন? সিএবি-তে দু’টো নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এক) মেন্টর হিসেবে অরুণ লালকে নিয়ে আসা, দুই) যুব দলের সঙ্গে কাজ করা প্রণব নন্দীর মতো কাউকে সিনিয়রের দায়িত্ব দেওয়া। অরুণ লালের যোগ্যতা নিয়ে কারও প্রশ্ন নেই। কিন্তু তাঁর সঙ্গে কতটা কী আলোচনা করে তাঁর নাম বাজারে ছাড়া হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে।

আগামী কয়েক ঘণ্টায় যে কোনও একটা কিছু ঘটতে পারে। এক) হয় অরুণ একা দায়িত্ব পেলেন, দুই) হয় তিনি মেন্টর হয়ে বাহুতুলে কোচ থাকলেন (সম্ভাবনা কম) এবং তিন) প্রণব নন্দীকে নিয়ে আসা হল, যাতে সর্বক্ষণ দলের সঙ্গে থাকতে পারলেন। কিন্তু সেখানেও প্রশ্ন, অতটা প্রাক্তন কাউকে কি এখনকার পাল্টে যাওয়া ক্রিকেটে দায়িত্ব দিলে ঠিক হবে?

সিএবি সচিব থাকার সময় বাহুতুলেকে কোচ করে এনেছিলেন সৌরভই। তিনি প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় রাজ্যের ক্রিকেট সংস্থা কোচ ছাঁটাইয়ের দিকে এগোচ্ছে দেখে এমনকি মুম্বই ক্রিকেট মহলেও বিস্ময় তৈরি হয়েছে। যদিও নানা সূত্রের খবর, বাহুতুলেকে নিয়ে দলের মধ্যেও বিভাজন তৈরি হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যের হচ্ছে, বাহুতুলের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির। কোচকে ছাঁটাই করার মানে ঘুরিয়ে অধিনায়কের দিকেও তির ছোড়া কি না, সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, মরসুম শুরুর আগে মনোজ নিজেই অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। ইস্তফাপত্র পকেটে নিয়ে তিনি জমা দিতে গিয়েছিলেন সিএবি-তে। প্রেসিডেন্ট সৌরভ এবং সচিব অভিষেক ডালমিয়া মিলে বুঝিয়ে-শুনিয়ে হঠকারিতা করতে বারণ করেন। তার পরেই গোটা মরসুমের জন্য মনোজকে অধিনায়ক ঘোষণা করে দেওয়া হয়। কিন্তু অধিনায়কের পছন্দের কোচকে নিয়ে অনিশ্চয়তার বাতাবরণে নেতৃত্বের পদে মনোজের আকাশও মেঘাচ্ছন্ন দেখালে অবাক হওয়ার নেই। যদিও সূত্রের খবর, এখনই তাঁকে না সরানো হতে পারে কারণ সেক্ষেত্রে ইস্তফাপত্র জমা দিতে আসার দিনে মনোজকে দেওয়া কথার মারাত্মক খেলাপ করা হবে। ওদিকে, সাইরাজ বাহুতুলে জানেন না, তাঁর ভবিষ্যতে কী লেখা আছে। সোমবার রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত যা খবর, সিএবি থেকে তাঁকে কেউ কিছু জানাননি, প্র্যাক্টিসে আসতে হবে কি হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন