প্রত্যয়ী: মেয়েদের সাফল্যের বড় কারণ দলীয় সংহতি। ফাইল চিত্র
বাংলার ক্রিকেটে নতুন স্রোত মেয়েদের হাত ধরে। এ বারের ক্রিকেট মরসুমে তিনটি ট্রফি এনে দিয়েছেন বাংলার মেয়েরা। জাতীয় ওয়ান ডে-তে চ্যাম্পিয়ন বাংলার সিনিয়র দল। অনূর্ধ্ব-২৩ ওয়ান ডে প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন। অনূর্ধ্ব-১৯ ওয়ান ডে-তেও অপরাজিত বাংলা। কিন্তু কী ভাবে এই সাফল্য?
অগস্ট থেকে শুরু হয়ে গিয়েছিল মেয়েদের অনুশীলন। বাংলার ক্রিকেটে প্রথম বার ইয়ো ইয়ো টেস্ট দিয়ে মরসুম শুরু করেন মেয়েরা। কিংবদন্তি পেসার ঝুলন গোস্বামী ও ফিজিক্যাল ট্রেনার রাহুল দেবের মূল লক্ষ্য ছিল প্রত্যেকের ফিটনেস বাড়ানো। ঝুলনদের দেখেই ইয়ো ইয়ো টেস্ট শুরু হয়েছিল বাংলার পুরুষ দলের।
মেয়েদের অনুশীলনে যে শুধু সিনিয়ররাই উপস্থিত থাকতেন, তা কিন্তু নয়। অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-২৩ সিনিয়র দলের সঙ্গেই অনুশীলন করত। বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার মিঠু মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘এক সঙ্গে অনুশীলন করার ফলই পেয়েছে মেয়েরা। কারণ, অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অনেকেই খেলেছে অনূর্ধ্ব-২৩ দলে। আবার অনূর্ধ্ব-২৩ দলের অনেকেই খেলেছে সিনিয়র দলে। জুনিয়র দলের মেয়েরা যখন সিনিয়র দলের সঙ্গে অনুশীলন করে, তখন এমনিতেই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা যায়। তৈরি হয় দলীয় সংহতি। আর প্রত্যেককে ছাত্রীর মতো ভালবাসত ঝুলন। কার কোন জায়গায় সমস্যা হচ্ছে, তা শিক্ষকের মতো দেখিয়ে দিত।’’
মেয়েদের সাফল্যের হাত ধরেই এ বছর শুরু হল সিএবি-র ওয়ান ডে ও টি-টোয়েন্টি লিগ। যেখানে আটটি করে দল গড়া হয়েছে। ভাগ করা হয়েছে দু’টি গ্রুপে। আটটি দলের কোচ নিয়োগ করা হয়েছে বাংলার মেয়েদের দলের কোচ এবং সাপোর্ট স্টাফদের। যেমন ফিজিক্যাল ট্রেনার রাহুল দেব সিএবি ‘পিঙ্ক’ দলের দায়িত্বে রয়েছেন। একটি দলের দায়িত্বে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ চরণজিৎ সিংহের। মিঠু বলছিলেন, ‘‘সাপোর্ট স্টাফ বা কোচেদের এই দায়িত্ব দেওয়ার কারণ যাতে আগে থেকেই মেয়েদের তাঁরা তৈরি করে দিতে পারেন। এখান থেকে সেরা ক্রিকেটারদের বেছে নেওয়া অনেক সহজ। ৪০ ওভারের ম্যাচে ২৫০ রান উঠছে। এখানেই তো বোঝা যাচ্ছে যে, বাংলার মেয়েরা উন্নতি করছে।’’
নতুন প্রতিযোগিতার প্রশংসা করলেন ঝুলনও। বলছিলেন, ‘‘সিএবি-র নতুন লিগ চালু হওয়ায় বাংলার ক্রিকেট আরও উন্নতি করবে। মেয়েদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হবে। উঠে আসবে নতুন প্রতিভা। আমি নিজেও দেখেছি জেলা থেকে কত নতুন প্রতিভা উঠে আসছে। তার পিছনে মেয়েদের সাফল্য অন্যতম কারণ। আরও একটি কারণ মেয়েদের আইপিএল শুরু হওয়া। মনে রাখতে হবে পুরুষদের দল শক্তিশালী হতে শুরু করেছে আইপিএল শুরু হওয়ার পরেই। আশা করা যায় মেয়েদের আইপিএলও সে কাজটাই করবে। যেখানে বেশি সুযোগ পাবে বাংলার মেয়েরা।’’