রবি শাস্ত্রী। —ফাইল চিত্র।
বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে ব্যর্থতার পর ভারতীয় দল এবং ক্রিকেটারদের শৃঙ্খলায় বাঁধার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন গৌতম গম্ভীর। বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। শুরুতে তা নিয়ে কিছু বিতর্ক হলেও, ভারতীয় দলের পারফরম্যান্স সন্তোষজনক হওয়ার পর থেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন ক্রিকেটারেরাও। ভারতীয় শিবিরের এই পরিবর্তন নিয়ে মুখ খুলেছেন রবি শাস্ত্রী। ভারতীয় দলের প্রাক্তন কোচ জানিয়েছেন, তিনি বেশি কড়াকড়ির পক্ষে ছিলেন না।
অস্ট্রেলিয়ার একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ভারত-অস্ট্রেলিয়া এক দিনের সিরিজ়ের অন্যতম ধারাভাষ্যকার। তাতে উঠে এসেছেন নানা প্রসঙ্গ। বিদেশ সফরে ভারতীয় ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত রাঁধুনি নিয়ে যাওয়ার পর গম্ভীরের নিষেধাজ্ঞার কথাও উঠেছে। শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমি দায়িত্বে থাকার সময় কেউ রাঁধুনি নিয়ে ঘুরত বলে মনে পড়ছে না। থাকলে তাঁকে আমাকে নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকতে হত। দু’এক জন থাকলে হয়তো আপত্তি করতাম না। তা হলে পানীয়ের সঙ্গে বিভিন্ন রকম পদ আমারও জুটত। সব সময় হোটেলের রুম সার্ভিসের উপর নির্ভর করতে হত না। আবার এটাও ঠিক, বিদেশ সফরে কিছু নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার। দলের চার পাশে প্রচুর লোকজন থাকলে সমস্যা হয়। বিভিন্ন বিষয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’’
শাস্ত্রী ব্যক্তিগত ভাবে খুব কড়াকড়ির পক্ষে না হলেও, গম্ভীর জমানার বিধিনিষেধ নিয়েও আপত্তির কিছু দেখছেন না। তিনি বলেছেন, ‘‘ও নিশ্চই বুঝেছে, পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছিল। তাই একটা সীমারেখা টানতে চেয়েছে। কী উচিত, কী নয় পরিষ্কার করে দিতে চেয়েছে। গম্ভীরের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে ও একজন স্থিতিশীল, সংযত, শান্ত অধিনায়ক পেয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেটের আগামী এক দশকের স্বার্থে শুভমন গিলই সেরা লোক।’’
গম্ভীরের দলের একটি খামতিও ধরা পড়েছে পূর্বসূরির চোখে। শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘গম্ভীরকে একটা জিনিস তৈরি করতে হবে নতুন করে। সেটা হল জোরে বোলিং ইউনিট। মহম্মদ শামি-জসপ্রীত বুমরাহেরা হয়তো আর খুব বেশি দিন খেলতে পারবে না। তাই অন্তত তিন জন ভাল মানের জোরে বোলার তৈরি করতে হবে গম্ভীরকে।’’
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ের পর বিদেশ সফরে সঙ্গে পরিবার নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও ক্রিকেটারদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন গম্ভীর। সে প্রসঙ্গে শাস্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘পরিবার নিশ্চই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ক্রিকেটারদের একটা জিনিস বুঝতে হবে। যেমন ওরা এখানে (অস্ট্রেলিয়ায়) এসেছে একটা উদ্দেশ্য নিয়ে। এখানে কেউ ছুটি কাটাতে আসেনি। খুব কম ক্রিকেটারই এই সাজঘরে ঢোকার সুযোগ পায়। খুব কম জনই দেশকে গর্বিত করার সুযোগ পায়। তবে আমি সঙ্গে পরিবার রাখার বিপক্ষে নই।’’
শাস্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি বেশি কড়াকড়ির পক্ষে না হলেও কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। যাঁরা দেশের হয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলেন, তাঁদেরও সীমা বোঝা উচিত। এমন কিছু করা উচিত নয়, তাতে কোচকে সীমারেখা টেনে দিতে হয়।