মহম্মদ শামি। — ফাইল চিত্র।
রঞ্জি ট্রফিতে প্রথম দু’টি ম্যাচে জয় পেয়ে আত্মবিশ্বাসে ফুটছিল বাংলা। সেই আত্মবিশ্বাস ধাক্কা খেল ত্রিপুরার বিরুদ্ধে। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে যা অবস্থা, তাতে প্রথম ইনিংসে লিড নিয়ে তিন পয়েন্ট পাওয়ার স্বপ্নও ফিকে হচ্ছে শিবিরে। মরসুমে প্রথম বার পয়েন্ট নষ্টের আশঙ্কা অভিষেক পোড়েলদের। মঙ্গলবার, ম্যাচের শেষ দিন সকালে ভাল বল না করলে আগরতলা থেকে কার্যত খালি হাতেই ফিরতে হবে বাংলাকে।
ধাক্কা খেতে পারে ভারতীয় দলে মহম্মদ শামির প্রত্যাবর্তনের স্বপ্ন। এ দিন ১৯ ওভার বল করে ৭০ রান দিয়ে কোনও উইকেট পাননি তিনি। প্রথম দু’ম্যাচে ১৫ উইকেট নেওয়া শামি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ়ের দলে থাকবেন কিনা, তা অনেকটাই নির্ভর করবে এই ম্যাচে তাঁর পারফরম্যান্সের উপর।
অথচ সকালটা দেখে বোঝা যায়নি বাকি দিনটা এমন হতে চলেছে। এ দিন সকালে ৩৩৬ রানে প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে যায় বাংলার। ব্যাট করতে নেমে মহম্মদ কাইফ এবং ইশান পোড়েলের বোলিংয়ের সামনে ভেঙে পড়ে ত্রিপুরা। টপ অর্ডার দাঁড়াতেই পারেনি তাদের।
নবম ওভারে বিক্রম কুমার দাসকে (১৯) ফিরিয়ে প্রথম ধাক্কাটা দেন কাইফ। এর পর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে ত্রিপুরা। পর পর ফিরে যান ঋতুরাজ ঘোষ রায় (৫), শ্রীদাম পাল (৬), বি বি দেবনাথ (০), স্বপ্নিল সিংহ (৪)। ৫৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে ত্রিপুরা। সেন্টু সরকার (২০) ফেরার পর ৯৩ রানে ৬ উইকেট হারায় তারা। তখন বাংলা শিবির বিপক্ষকে ফলো-অন করানোর স্বপ্ন দেখছে।
সেখান থেকেই শুরু হয় ত্রিপুরার পাল্টা লড়াই। নেপথ্যে ভারতের টেস্ট ক্রিকেটার হনুমা বিহারি এবং ভারতের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা বিজয় শঙ্কর। হায়দরাবাদ ছেড়ে এখন ত্রিপুরার হয়ে খেলেন বিহারি। বাংলার বোলারদের সামনে তিনিই ঢাল হয়ে দাঁড়ান। শামি, ইশান, কাইফ, শাহবাজ় আহমেদ, রাহুল প্রসাদ— কেউই তাঁকে টলাতে পারেননি। দিনের শেষে ২১০ বলে ১২১ রানে অপরাজিত বিহারি।
মাঝে কিছু ক্ষণ শঙ্কর (৩৪) লড়াই করার পর ফিরে যান। এর পর বিহারির সঙ্গে যোগ দেন এমবি মুরা সিংহ। দিনের শেষে তিনি ৪২ রানে অপরাজিত। ত্রিপুরার স্কোর ৭ উইকেটে ২৭৩। অর্থাৎ বাংলার প্রথম ইনিংসের রান টপকে যেতে আর ৬৪ রান চাই। এখন যে জুটি ক্রিজ়ে রয়েছে তাঁদের কাছে কাজটা অসম্ভব নয়। মঙ্গলবার শুরুতেই এই জুটি ভাঙতে না পারলে বাংলাকে পয়েন্ট হারাতে হবে।
মন্দ আলোর কারণে প্রথম দু’দিনের খেলা ব্যহত হওয়ায় এই ম্যাচ থেকে যে পুরো পয়েন্ট পাওয়া যাবে এটা আগেই বুঝেছিল বাংলা। প্রথম ইনিংসে লিড নিয়ে তিন পয়েন্ট পাওয়ার আশাও কমছে। যা অবস্থা, তাতে এক পয়েন্ট নিয়েও ফিরতে হতে পারে, যা কার্যত হারেরই সমান।