মেলবোর্নের এই পিচ নিয়েই হয়েছে বিতর্ক। ছবি: এক্স।
জল্পনাই সত্যি হল। অ্যাশেজ় সিরিজ়ের চতুর্থ টেস্টে মেলবোর্নের উইকেট দেখে খুশি হতে পারেনি তারা। এই পিচে যে ব্যাট ও বলের সমান লড়াই হয়নি, তা জানিয়ে দিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ডকে শাস্তিও দিয়েছে তারা।
প্রতিটি ম্যাচ শেষে আইসিসি-র কাছে একটি রিপোর্ট জমা দেন ম্যাচ রেফারি। সেই ম্যাচে পিচ কেমন ছিল, তা নিয়েও নিজের মতামত জানান ম্যাচ রেফারি। সেই মতামত দেখে একটি নম্বর দেয় আইসিসি। যদি কোনও কারণ পিচ কম নম্বর পায় তা হলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। মেলবোর্নের ক্ষেত্রেও তেমনটা হয়েছে।
ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রো-র রিপোর্টের ভিত্তিতে মেলবোর্নের পিচকে ‘অসন্তোষজনক’ আখ্যা দিয়েছে আইসিসি। আইসিসি পিচের মান নিয়ে চারটি রেটিং দেয়। তার মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অসন্তোষজনক। তার অর্থ, এই পিচে ব্যাট ও বলের মধ্যে সমান লড়াই হয়নি। বোলারেরা অনেক বেশি সুবিধা পেয়েছেন। ফলে একটি ডিমেরিট পেয়েছে মেলবোর্ন। অথচ এই মাঠের পিচকেই গত তিন বছর ‘খুব ভাল’ আখ্যা দিয়েছিল আইসিসি।
মেলবোর্নের পিচ দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন পিচ প্রস্তুতকারক ম্যাট পেগ। খুশি হয়নি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াও। বোর্ডের চিফ অফ ক্রিকেট জেমস আলসোপ বলেন, “আমরা হতাশ যে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম দিনের টিকিট কাটা দর্শকেরা খেলা দেখতে পেলেন না। মেলবোর্নে সাধারণত যে পিচ দেখা যায়, তা এ বার দেখা গেল না। আমরা জানি, অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন মাঠে বছরের পর বছর ধরে ভাল পিচ তৈরি করা হয়। এ বারও সেই চেষ্টাই করেছেন পিচ প্রস্তুতকারকেরা। কিন্তু কোনও কারণে সেটা হয়নি। আশা করছি ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না।”
অ্যাশেজ় সিরিজ়ে প্রথম তিন টেস্ট জিতে সিরিজ় জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। মেলবোর্নে ১০ মিলিমিটার ঘাস রাখা হয়। কারণ, এই সিরিজ়ে অসি পেসারদের সামনে বার বার মুখ থুবড়ে পড়েছে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং। কিন্তু মেলবোর্নে ফল হয় উল্টো। অসি ব্যাটারেরাও খেলতে পারেননি। উল্টে চতুর্থ ইনিংসে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে ম্যাচ জিতে নেয় ইংল্যান্ড। অর্থাৎ, নিজেদের ফাঁদে নিজেরাই পড়ে অস্ট্রেলিয়া।
খেলা শেষে মেলবোর্নের পিচ নিয়ে মুখ খোলেন ইংল্যান্ডের তিন প্রাক্তন অধিনায়ক মাইকেল ভন, কেভিন পিটারসেন ও অ্যালিস্টার কুক। পিচের সমালোচনা করেন অস্ট্রেলিয়ার দুই প্রাক্তন পেসার গ্লেন ম্যাকগ্রা ও ব্রেট লি-ও। তার পরেও একটি আশা ছিল অসি বোর্ডের। পার্থেও দু’দিনে খেলা শেষ হয়ে গিয়েছিল। তার পরেও সেই পিচকে ভাল বলেছিল আইসিসি। কিন্ত এ বার সেই পথে হাঁটল না বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা।