বিমানবন্দরে সস্ত্রীক।—নিজস্ব চিত্র।
তিনি ডার্বিতে র্যান্টি মার্টিন্সের সঙ্গী হবেন কি না এখনও জানেন না। কিন্তু শুক্রবার দুপুরে কলকাতায় পা দিয়েই ডুডু ওমাগবেমি জানিয়ে দিলেন, কলকাতা ফুটবলের উত্তেজনা উপভোগ করা আর ইস্ট-মোহন খেলার জন্যই গোয়া ছেড়ে লাল-হলুদে সই করেছেন তিনি।
লাল-হলুদ সদস্য-সমর্থকদের বাঁধভাঙা উল্লাস। তাঁকে ধরতে মিডিয়ার হুড়োহুড়ি। দমদম বিমানবন্দরে তখন নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারকে ঘিরে প্রবল হইচই। যা দেখে শুরুতে একটু যেন চমকে উঠলেন ইস্টবেঙ্গলের নতুন বিদেশি। গোয়ায় খেলেছেন, প্রচুর গোলও করেছেন কিন্তু কখনও এ রকম দৃশ্য দেখেননি। কিছুটা সড়গড় হওয়ার পর তাঁর স্বীকারোক্তি, “এই উন্মাদনার খোঁজেই তো ইস্টবেঙ্গলে আসা। আমার কাছে আরও দু’টো ক্লাবের প্রস্তাব ছিল। কিন্তু কলকাতা ডার্বি খেলার লোভ ছাড়তে পারলাম না।”
ডুডুর কথাতেই স্পষ্ট, রবিবারের ডার্বি খেলতে কতটা উৎসাহী তিনি। কিন্তু ডুডু কি আদৌ ম্যাচ ফিট? লাল-হলুদ স্ট্রাইকারের যুক্তি, “ফিনল্যান্ডে নিয়মিত প্র্যাকটিস করেছি। ফিটনেস নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। তবে ডার্বি খেলার বিষয়টা পুরোপুরি কোচের উপরই ছেড়ে দিচ্ছি। কোচ চাইলে খেলব।”
আর্মান্দো কোলাসোও যে ডার্বিতে ডুডুর খেলার বিষয়টা পুরোপুরি উড়িয়ে দিচ্ছেন, তা কিন্তু নয়। বরং বিকেলে আইএফএ অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করার সময় আর্মান্দো বললেন, “ডুডুকে অনুশীলনে না দেখে এখন কিছু বলতে পারব না। তবে প্র্যাকটিসে যদি ওকে ভাল লাগে, তা হলে রবিবারের ম্যাচে ব্যবহার করতেও পারি। সেটা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে। আমাকে এটাও খেয়াল রাখতে হবে যারা এত দিন ধরে খেলছে, তাদের হঠাৎ করে বসিয়ে দিলে টিমে একটা প্রভাব পড়তে পারে।” ক্লাব সূত্রের খবর, রবিবার আঠারোর জনের তালিকায় থাকতে পারে ডুডুর নাম। প্রয়োজনে লিও বার্তোসের জায়গায় তাঁকে নামানোর কথা ভাবছেন আর্মান্দো। আন্তঃদেশীয় ছাড়পত্র এসে যাওয়ায় শনিবারই তাঁর ইস্টবেঙ্গলে সই করতে কোনও বাধা নেই।
শুধু ডার্বি নয়, ডুডুর মাথায় ঘুরছে আই লিগে শীর্ষ গোলদাতা হওয়ার স্বপ্নও। আগের মরসুমে সালগাওকরের হয়ে ১০ ম্যাচে ৫ গোল করেছিলেন। শুক্রবার নতুন ক্লাব ইস্টবেঙ্গলে পা রেখেই ডুডু বলে দিলেন, “র্যান্টি খুব বড় ফুটবলার। ওর খেলা আমি দেখেছি। একবার মাঠে র্যান্টির সঙ্গে আমার জুটি জমে গেলেই আর কোনও অসুবিধা হবে না। ইস্টবেঙ্গলকে ট্রফি দেওয়ার যে স্বপ্ন দেখছি, সেটা আর কেউ আটকাতে পারবে না।”
ডুডুর সঙ্গে এসেছেন তাঁর স্ত্রী হেনি। স্বামীর কলকাতার নতুন ইনিংস নিয়ে তিনিও দারুণ উচ্ছ্বসিত। বিমানবন্দরের হইহুল্লোর দেখে অবাক হেনি বলছিলেন, “এখানেই এই অবস্থা, তা হলে ম্যাচে কী হবে? ভারতে ফুটবল কতটা জনপ্রিয়, সেটা একমাত্র কলকাতায় এলে বোঝা যায়।” ডুডুকে বিমানবন্দর থেকে আনতে অন্য কর্তাদের সঙ্গে গিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল টেকনিক্যাল ম্যানেজার অ্যালভিটো ডি’কুনহাও। সম্ভবত নিজের খেলোয়াড়জীবনে প্রথম বার এই দায়িত্ব পালন করতে হল অ্যালভিকে। ডুডুকে নিয়ে তিনি চলে গেলেন নিজেদের ডেরায়, দলের নতুন অস্ত্রে শান দিতে।