সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গল

গত মরসুমে খালিদ জামিলের কোচিংয়ে আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আইজল এফসি। এই মরসুমে সেই আইজলই লাল-হলুদের আই লিগ জয়ের পথে কাঁটা ছড়িয়ে দিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৭:১০
Share:

সুপার কাপের শেষ চারে ইস্টবেঙ্গল।

ম্যাচের শেষ মুহূর্তের নাটকীয় গোল। আইজল এফসি-কে হারিয়ে সুপার কাপের শেষ চারে ইস্টবেঙ্গল।

Advertisement

গত মরসুমে খালিদ জামিলের কোচিংয়ে আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আইজল এফসি। এই মরসুমে সেই আইজলই লাল-হলুদের আই লিগ জয়ের পথে কাঁটা ছড়িয়ে দিয়েছিল। ঘরের মাঠে ২-০ এগিয়ে গিয়েও ম্যাচ ড্র করে মাঠ ছেড়েছিলেন মহম্মদ আল আমনা-রা। ইনজুরি টাইমে গোল করে গত বারের চ্যাম্পিয়নদের হার বাঁচিয়েছিলেন উইলিয়াম লালনুনফেলা। আইজলে অ্যাওয়ে ম্যাচেও ফল ছিল গোলশূন্য। রবিবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে অবশেষে ছবিটা বদলাল। ইনজুরি টাইমে পেনাল্টি থেকে গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে জেতালেন গত মরসুমে আইজলের আই লিগ জয়ের অন্যতম কারিগর লালডানমাওয়াই রালতে। ডুডু ওমাগবেমি-র পরিবর্তে নামা আনসুমানা ক্রোমাকে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে ফাউল করেন আইজল গোলরক্ষক লালমপুইয়া। ঠান্ডা মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করেন রালতে।

টেকনিক্যাল ডিরেক্টর (টি়ডি) সুভাষ ভৌমিক ও কোচ খালিদের রণনীতি ছিল ডুডু ওমাগবেমিকে সামনে রেখে আইজলের বিরুদ্ধে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তোলা। একে ভুবনেশ্বরের প্রবল গরম। তার উপর লাল-হলুদের আক্রমণাত্মক ফুটবল। আইজলের ফুটবলাররা একেবারেই স্বস্তিতে ছিলেন না। যদিও গোলের স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের। একা ডুডু-ই নষ্ট করেন তিনটি সহজ সুযোগ। একটি সুযোগ নষ্ট করেন কাতসুমি। লাল-হলুদ শিবিরে অবশ্য অসন্তোষ রেফারিং নিয়ে। ম্যাচের ১২ মিনিটে আইজল পেনাল্টি বক্সে পড়ে যান আমনা। অভিযোগ, তাঁকে ফাউল করা সত্ত্বেও পেনাল্টি দেননি রেফারি। আইজল প্রথম আক্রমণ করে ম্যাচের ৪১ মিনিটে! যদিও মাসি সাইঘানির শট গোলের মধ্যে ছিল না।

Advertisement

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে একা আইজল গোলরক্ষক লালমপুইয়াকে পেয়েও গোল করতে পারেননি ডুডু। ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট পাঁচেক আগে ক্লান্ত নাইজিরীয় স্ট্রাইকারকে তুলে আনসুমানা ক্রোমাকে নামান সুভাষ ও খালিদ। যদিও তাঁদের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই মেনে নিতে পারেননি ডুডু। মাঠ ছেড়ে বেরোনোর সময় ক্ষোভে নিজের জার্সিই ছিঁড়ে ফেললেন লাল-হলুদ স্ট্রাইকার। রিজার্ভ বেঞ্চেও বসতে চাইছিলেন না ডুডু। কোনও মতে তাঁকে শান্ত করেন দলের অন্যান্যরা। ইনজুরি টাইমে পেনাল্টি থেকে রালতে গোল করার পরে সেই ডুডুকেই দেখা গেল উচ্ছ্বাসে লাফিয়ে উঠতে!

ম্যাচের পরে ভুবনেশ্বর থেকে ফোনে সুভাষ বললেন, ‘‘যে কোনও ভাল ফুটবলারই এ রকম করে। ডুডু দুর্দান্ত খেলেও গোল পায়নি। সেই হতাশাই ও প্রকাশ করছে। আমি এর মধ্যে কোনও অন্যায় দেখছি না।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘দারুণ খেলেছে ছেলেরা। রক্ষণের সমস্যা অনেকটাই দূর হয়েছে।’’ তার পরেই আসিয়ানজয়ী কোচের হুঙ্কার, ‘‘অনেকেই বলছিল, আইজলকে নাকি হারানো যায় না। আজ তা ভুল প্রমাণ করে দিলাম।’’ ডুডু প্রসঙ্গে খালিদ বলছেন, ‘‘কোনও ফুটবলারই চায় না মাঠ ছাড়তে। তাই হয়তো হতাশা প্রকাশ করে ফেলেছিল ডুডু।’’ লাল-হলুদ কোচ অবশ্য রেফারিং নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। বললেন, ‘‘ম্যাচ জিতে গিয়েছি। এখন আর রেফারিং নিয়ে কোনও কথা বলব না।’’ সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচে ১৬ এপ্রিল এফসি গোয়া বনাম জামশেদপুর এফসি ম্যাচে জয়ী দলের বিরুদ্ধে। এই কারণেই আজ, সোমবার কলকাতায় ফিরে আসছেন আমনা-রা। তবে এ বার আর টিম বাসে নয়। ট্রেনে ফিরছেন লাল-হলুদের ফুটবলাররা।

ইস্টবেঙ্গল: উবেইদ সি কে, সামাদ আলি মল্লিক, এদুয়ার্দো ফেরিরা, গুরবিন্দর সিংহ, লালরাম চুলোভা, খালিদ আউচো, কাতসুমি ইউসা, কেভিন লোবো, মহম্মদ আল আমনা, লালডানমাওয়াইয়া রালতে ও ডুডু ওমাগবেমি (আনসুমানা ক্রোমা)।

আইজল এফসি: লালমপুইয়া, মাসি সাইঘানি, আলফ্রেড জারিয়ান, লালমুয়ান কিমা, আন্দ্রেই ইয়োনেস্কু, লালডিনলিয়ানা, লালরাম মুয়ানমাওয়াইয়া, লালরোসাঙ্গা, মিংথাং মাওয়াইয়া, লালচাওয়ান কিমা ও দোদোজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন