বিধ্বস্ত: শেষ মুহূর্তের গেলে হেরে হতাশ রেহনেশ। ছবি: এআইএফএফ
ইস্টবেঙ্গল ১ : ২ চেন্নাই এফসি
রঙের উৎসবে বিবর্ণ লাল-হলুদ!
গোলরক্ষক রেহনেশ টি পি-র ব্যর্থতায় আই লিগের আট নম্বরে থাকা চেন্নাই সিটি এফসি-র কাছে হেরে ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন শুধু অধরাই থাকল না, খেতাবের দৌড় ফিরিয়ে আনল সনি নর্দে-দের! এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তাতে ১৪ ম্যাচে ২৭ পয়েন্টে লিগ টেবলের দু’নম্বরে থাকা উইলিস প্লাজা-দের শেষ চারটি ম্যাচ শুধু জিতলেই হবে না। তাকিয়ে থাকতে হবে আইজল এফসি ও মোহনবাগানের দিকে।
এই মুহূর্তে ১৪ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আইজল এফসি। মোহনবাগানের পয়েন্ট ২৩ হলেও তারা দু’টো ম্যাচ খেলছে। তাই এই দু’টো দল পয়েন্ট নষ্ট করলেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা বেঁচে থাকবে লাল-হলুদের। অথচ, এ দিন চেন্নাইয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধ দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে, হারের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়বেন রবিন সিংহ-রা।
চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধেই অন্তত ৩-০ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল মেহতাব হোসেন-দের। কিন্তু তা হল না ক্রিস পেইন ও লালরিনডিকা রালতের ব্যর্থতায়। ১৫ মিনিটে সহজ গোল নষ্ট করেন পেইন। আর ২৭ মিনিটে ডিকা-র শট ধাক্কা খায় ক্রস বারে। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার দু’মিনিট আগে কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান-কে স্বস্তি দেন প্লাজা। মহম্মদ রফিকের সেন্টার থেকে অসাধারণ হেডে গোল করেন তিনি। লাল-হলুদের কোচের স্বস্তি অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। নেপথ্যে রেহনেশের ব্যর্থতা।
লড়াই জমিয়ে দিল চেন্নাই।
চেন্নাইয়ের অনূর্ধ্ব-২২ ফুটবলার নন্দ কুমারের গড়ানো শট রেহনেশের দু’পায়ের ফাঁক দিয়ে গোলে ঢুকে যায়। ৯২ মিনিটে লাল-হলুদ গোলরক্ষক পা দিয়ে বল বিপন্মুক্ত করার চেষ্টা করলে বল চলে বিপক্ষের পায়ে। সেখান থেকে বিনা বাধায় গোলে ঠেলে দেন প্রশান্ত কারুথাডকুনি। ম্যাচের পর হতাশ মর্গ্যান চেন্নাই থেকে ফোনে বললেন, ‘‘রেহনেশের ভুলে গোল হয়েছে ঠিকই। কিন্তু হারের জন্য একা ওকে দায়ী করছি না।’’
আরও পড়ুন: জমে গেল আই লিগ
তা হলে বিপর্যয়ের কারণ কী? মর্গ্যান বলছেন, ‘‘ম্যাচের শেষের দিকে ফুটবলাররা ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। শারীরিক সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এই কারণেই আইজল ও চার্চিলের কাছে হেরেছিলাম। রবিবারও একই ঘটনা ঘটল। ত ছাড়া আমরা একেবারেই ভাল খেলতে পারিনি।’’ ম্যাচের পরে ড্রেসিংরুমে ক্ষোভও উগরে দেন তিনি।
তবে চেন্নাইয়ের কাছে হারের পরেই মর্গ্যানের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। লাল-হলুদ সচিব কল্যাণ মজুমদারের মন্তব্য, ‘‘এ ব্যাপারে ফুটবল-সচিবকে প্রশ্ন করুন।’’ ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল-সচিবের ফোন অবশ্য ম্যাচ শেষ হওয়ার পর থেকেই সুইচ্ড অফ! মর্গ্যান বলে দিলেন, ‘‘আমি দলের সঙ্গেই আছি। সোমবার অস্ট্রেলিয়া ফিরছি। ফিরব ২৫ মার্চ। তা ছাড়া আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা তো এখনও শেষ হয়ে যায়নি। তবে ওয়েডসন আনসেলমে-র না থাকাটাও দলের পক্ষে বড় ধাক্কা।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘শনিবার আইজল ও মোহনবাগান ড্র করায় খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু চেন্নাইয়ের কাছে হেরে আনন্দটা উপভোগ করতে পারলাম না।’’
ইস্টবেঙ্গল: রেহনেশ টি পি, রাহুল ভেকে, অর্ণব মণ্ডল, ইভান বুকেনিয়া, নারায়ণ দাস, নিখিল পূজারি (মহম্মদ রফিক), মেহতাব হোসেন, লালরিনডিকা রালতে (বিকাশ জাইরু), ক্রিস পেইন (অবিনাশ রুইদাস), রবিন সিংহ এবং উইলিস প্লাজা।