পিচ নিয়ে নিশ্চিত হয়েও নতুন তদারকিতে নামছেন সৌরভ

শনিবার রাত সাড়ে বারোটার সময় ইডেন উইকেটের কাছে এক ব্যক্তির আগমন হয়। মোবাইলে ঘুরে ঘুরে উইকেটের ছবি তুলছিলেন সেই আগন্তুক। বোঝার চেষ্টা করছিলেন, কী করে আজ বল এতটা ঘুরল?

Advertisement

গৌতম ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৬ ০৩:৩৪
Share:

শনিবার রাত সাড়ে বারোটার সময় ইডেন উইকেটের কাছে এক ব্যক্তির আগমন হয়। মোবাইলে ঘুরে ঘুরে উইকেটের ছবি তুলছিলেন সেই আগন্তুক। বোঝার চেষ্টা করছিলেন, কী করে আজ বল এতটা ঘুরল?

Advertisement

মাঠে তাঁকে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হল। পিচ নিরাপত্তারক্ষীরা এক কথায় তাঁকে ছেড়ে দিল। তার একটাই কারণ। ম্যাচ সংগঠনের দায়িত্বে যে তিনিই ছিলেন। নাম— সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।

বাকি পৃথিবী যখন ইডেনের সংগঠনের প্রচণ্ড তারিফ করছে, তখনও সৌরভ, তিনি মনে মনে নিজেকে ফুল মার্কস দিতে পারছিলেন না। ক্রমাগত খোঁচা দিয়ে যাচ্ছিল একটা অশান্তি। মনে হচ্ছিল, পিচ কী করে এ রকম হয়ে গেল? তিনি তো চেয়েছিলেন ব্যাটিং পিচ বানাতে। সেটা এত ঘূর্ণি হয়ে গেল কী করে?

Advertisement

মাঝরাত পেরিয়ে গিয়েছে তখন। তবু সৌরভ যোগাযোগ করেন বিরাট কোহালির সঙ্গে। জানতে চান, পিচ সম্পর্কে কোহালির পর্যবেক্ষণ কী? তাঁর কি খুব শুকনো লেগেছে? কোহালি বলেন, না শুকনো ছিল না। উইকেট স্যাঁতস্যাঁতে ছিল।

কোহালির কথা শোনার পর সৌরভ আশ্বস্ত হন। নিশ্চিত হয়ে যান যে, উইকেট আচমকা ঘূর্ণি হয়ে যাওয়ার পেছনে তাঁদের কোনও অদক্ষতা নেই। নিছকই প্রকৃতির খেলা।

সিএবি এ দিন বন্ধ ছিল। তবু স্থানীয় ক্রিকেটমহলে রোববার জোর বলাবলি চলছিল যে, দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে দুপুর দুটোয় বৃষ্টি হয়ে গিয়েও রাত সাড়ে ন’টাতেও খেলা শুরু করা যায়নি। আর শনিবার পৌনে ছ’টায় বৃষ্টি শেষ হয়েছে। তবু সাড়ে আটটায় খেলা শুরু হয়ে গিয়েছিল। সুতরাং প্রমাণিত, বৃষ্টি থেকে উদ্ধার পাওয়ার যে বিকল্প বন্দোবস্তটা, অধুনা সৌরভের আমলে অনেক ভাল হয়েছে। সৌরভ অবশ্য তাতেও পুরো আশ্বস্ত হতে পারছিলেন না। খচখচানিটা লেগেই থাকছিল। যে, ফাইনালে তো আবার এই জিনিস হতে পারে। তার আগে রোগের কারণটা শনাক্ত করে নেওয়া ভাল। সে জন্যই অত রাতে পিচ দেখতে চলে গিয়েছিলেন।

কলকাতা ছাড়ার আগে রবি শাস্ত্রীও বললেন, ‘‘উইকেটটা স্যাঁতস্যাঁতে ছিল অতক্ষণ ওপরে কভার ছিল বলে। এটা প্রকৃতির জন্য হয়েছে।’’ সৌরভের সিএবি যে ভাবে বৃষ্টির পর ম্যাচের পুনর্নিমাণ করেছে, তাতে তাঁকে এবং অন্য পদাধিকারীদের টিমের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চান টিম ডিরেক্টর। বললেন, ‘‘দেয়ার এফার্ট ওয়াজ আউটস্ট্যান্ডিং।’’ আরও বললেন, ‘‘পিচ স্যাঁতস্যাঁতে ছিল বলেই আমরা টসের আগে ঠিক করি যে, জিতলে ফিল্ড করব। যাতে আমাদের ইনিংসে পিচ খানিকটা শুকিয়ে যায়। তবু বেশ স্যাঁতস্যাঁতে ছিল। পাকিস্তান ১৪০ করে ফেললে জানি না জিততে পারতাম কি না?’’

ইডেনে পরের ম্যাচ ২৬ তারিখ, বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ড। তার আগে পিচ তদারকির ব্যবস্থা নতুন করে ঝালিয়ে নিতে চান সৌরভ। তেসরা এপ্রিলের আগে ওটাই তাঁর শেষ ড্রেস রিহার্সাল। আগামী ক’দিন ঠিক করেছেন আরও ভাল করে রোল করবেন। জল দেবেন।

এখন তাঁর নতুন চ্যালেঞ্জ— মধ্যরাতে যে ক্ষতবিক্ষত ইডেন উইকেটের ছবি তুলেছেন, সেটা যেন তাঁর ক্যামেরায় বিশ্বকাপ ফাইনালের রাতে না ফেরে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement