১১ বছর আগের ভয়ঙ্কর স্মৃতি হাতড়ে সৌরভ

‘সে দিন ভাগ্য ভাল ছিল বলে বেঁচে আছি’

ভুলে যেতে চাইলেও পঁচিশ বছরের তাজা ফিলিপ হিউজের আকস্মিক মৃত্যু তাঁকে বারবার ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ১১ বছর আগের সেই দিনটাতে। বক্সিং ডে টেস্টের চতুর্থ দিনের শুরুতে ব্র্যাড উইলিয়ামসের বুক সমান উচ্চতায় ওঠা বাউন্সার নীচু হয়ে ছাড়তে গিয়ে কাঁধ ও গলার মাঝখানে আঘাত পেলেন। সে দিন শরীরের যে অংশে আঘাত পেয়ে শেষ পর্যন্ত জীবনযুদ্ধেই হারতে হল অস্ট্রেলিয়ার তাজা ক্রিকেটারকে, প্রায় সেখানেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৪৪
Share:

এগারো বছর আগের সেই দিন।

ভুলে যেতে চাইলেও পঁচিশ বছরের তাজা ফিলিপ হিউজের আকস্মিক মৃত্যু তাঁকে বারবার ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ১১ বছর আগের সেই দিনটাতে। বক্সিং ডে টেস্টের চতুর্থ দিনের শুরুতে ব্র্যাড উইলিয়ামসের বুক সমান উচ্চতায় ওঠা বাউন্সার নীচু হয়ে ছাড়তে গিয়ে কাঁধ ও গলার মাঝখানে আঘাত পেলেন। সে দিন শরীরের যে অংশে আঘাত পেয়ে শেষ পর্যন্ত জীবনযুদ্ধেই হারতে হল অস্ট্রেলিয়ার তাজা ক্রিকেটারকে, প্রায় সেখানেই। আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেননি ক্রিজে। মারাত্মক যন্ত্রণা নিয়ে তাঁকে ফিরে যেতে হয়েছিল ড্রেসিংরুমে। সেই যন্ত্রণা নিয়ে পরে নেমে অবশ্য ৭৩ করেছিলেন। যা পারলেন না হিউজ।

Advertisement

তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।

সেই আঘাত যে ঠিক কতটা যন্ত্রণাদায়ক, তা তাঁর চেয়ে ভাল আর কে বুঝবে? “আমি ভাগ্যবান যে, সে দিন আমি মারা যাইনি। ভাগ্য ভাল ছিল বলেই বেঁচে আছি। কিন্তু ফিল হিউজের ভাগ্য সঙ্গ দিল না। ওর নিয়তিই ওকে মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে গেল”, বৃহস্পতিবার ইডেনের ড্রেসিংরুমের সামনে দাঁড়িয়ে বলছিলেন সৌরভ। বলেন, “ক্রিকেট মাঠে এ রকম (শরীরে বলের আঘাত লাগা) ঘটনা আকছার ঘটে। আমারই কত বার লেগেছে।” রাতে বাড়িতে ফিরে ক্রিকেট জীবনের সেই ভয়ঙ্কর মুহূর্তগুলির একটার কথা টেনে এনে বললেন, “এমসিজি-তে ব্র্যাড উইলিয়ামসের বাউন্সারে সে দিন যা লেগেছিল, তার পর এক মাস জায়গাটা ফুলে ছিল। যন্ত্রণা হত। ক্রিকেট বল যে মানুষ খুন করতে পারে। এই ঘটনাই তো তার প্রমাণ।”

Advertisement

হিউজের মৃত্যুর পর ক্রিকেট দুনিয়া জুড়ে রব উঠেছে, ব্যাটসম্যানদের রক্ষা করার জন্য আরও উন্নত সাজসরঞ্জাম প্রয়োজন। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক কিন্তু তাঁদের সঙ্গে পুরোপুরি একমত নন। তাঁর মতে, “হেলমেট নিয়ে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ঠিকই। আইসিসি-ও নিশ্চয়ই এখন থেকে আরও সুরক্ষিত হেলমেট তৈরির নির্দেশ দেবে নির্মাতাদের। তবে যে কোনও খেলাতেই এমন দুর্ঘটনা হয়ে থাকে। ফুটবল নরম বলে খেলা হলেও কত দুর্ঘটনা ঘটে। কুস্তি, বক্সিংয়েও তো বেকায়দায় লেগে যাওয়ার ঘটনা প্রচুর। কেউ যদি দুর্ভাগ্যবান হয়, তা হলে তার এ রকমই পরিণতি হবে। কত আর সুরক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া যায়!”

এই দুর্ঘটনার পর সারা ক্রিকেট দুনিয়ায় শোকের ছায়া। অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেট স্তব্ধ। ভারতীয় দলের দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ বাতিল। প্রথম টেস্ট নিয়েও অনিশ্চয়তার কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু ব্রিসবেনে যদি শেষ পর্যন্ত টেস্ট হয়, তা হলে ব্যাটসম্যানদের উপর যে তুমুল মানসিক চাপ থাকবে, তা নিয়ে সৌরভ বলেন, “ফিল হিউজই তো শেষ ব্যক্তি নয়, ক্রিকেট মাঠে যার মাথায় বল লাগল। এটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। এমন দুর্ঘটনার জন্য তৈরিই হয়েই মাঠে নামতে হয়। হয়তো বলের আঘাত লাগবেও। সতর্ক থাকতে হবে। ছেলেটার সময় বোধহয় ফুরিয়ে গিয়েছিল। না হলে কেউ এ ভাবে মাঠে মারা যায়!”

এই অবস্থায় সেই বোলার শন অ্যাবটের কী অবস্থা, তাও ভাবছেন সৌরভ। বললেন, “দলের সতীর্থের আঘাত লাগলেই খারাপ লাগে। ওরা তো বন্ধু। তবে ওকে দ্রুত উঠে দাঁড়াতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন