শীর্ষ বৈঠক। হাবাসের সঙ্গে ব্যারেটো। মঙ্গলবার যুবভারতীতে। ছবি: উত্পল সরকার
গুপ্তচর হোসে ব্যারেটোর গোপন রিপোর্টে মিশন গুয়াহাটির সব পরিকল্পনাই ওলট-পালট।
বৃহস্পতিবার ম্যাচের দিন গুয়াহাটি যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে আজ বুধবারই জন আব্রাহামের টিমের বিরুদ্ধে খেলতে যাচ্ছে আটলেটিকো দে কলকাতা। কোচ আন্তোনিও হাবাস মত বদলে শেষমুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিলেন, যুবভারতীর কৃত্রিম টার্ফে নয়, গুয়াহাটির ঘাসের মাঠেই অনুশীলন করাবেন লুই গার্সিয়াদের।
আটলেটিকো কোচের মত বদলের পরই ছোটাছুটি শুরু হয়ে যায় টিম ম্যানেজমেন্টের। বিমানের টিকিট বদল থেকে হোটেল বুকিং সবই নতুন করে করতে হয় তাঁদের। শেষ পর্যন্ত আজ দুপুরের বিমান ধরে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় গুয়াহাটির মাঠে অনশীলন করার সব ব্যবস্থা পাকা হয় অর্ণব-শুভাশিসদের।
হঠাত্ কেন এই যাত্রা-সিদ্ধান্ত বদল? জানা গিয়েছে, সহকারী কোচ ব্যারেটো এসে কোচ হাবাসকে নাকি বলেছেন, নর্থইস্ট মাঠের টার্ফের সঙ্গে যুবভারতীর মাঠের পার্থক্য অনেক। গুয়াহাটিতে আগাম এক দিন অনুশীলন না করলে সমস্যা হতে পারে। কাপদেভিয়ার টিমের প্রথম ম্যাচ দেখে এতটাই সতর্ক হাবাস যে দুপুরের মধ্যেই মত বদল করেন।
‘মিশন গুয়াহাটি’-র জন্য রওনা হওয়ার আগে যুবভারতীর কৃত্রিম টার্ফে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অনুশীলন করলেন গার্সিয়া-হোফ্রেরা। শুরুতে সংবাদমাধ্যমকে দেখতে দেওয়া হলেও পরে ‘ক্লোজড-ডোর’ অনুশীলন করে আটলেটিকো। দেখা গেল, পজেশনাল ফুটবল খেলার চেষ্টা চালাচ্ছে হাবাসের টিম। দুই দলে ভাগ করে ক্রসিং, শু্যটিং, পাসিং প্র্যাকটিসও হয় এ দিন।
সোমবার নর্থইস্ট ইউনাইটেড বনাম কেরল ব্লাস্টার্সের ম্যাচ দেখার জন্য প্রতিটি ফুটবলারকে বলেছিলেন আটলেটিকো কোচ। কেমন দেখলেন কাপদেভিয়ার টিমকে?
সাংবাদিক সম্মেলনে এসে অর্ণব মণ্ডল বললেন, “টিমটার গতিই সম্পদ। ওরা খুব দৌড়োয়। টিমটাও ব্যালান্সড। প্রথম ম্যাচ জেতাটা যে কোনও দলেরই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। ওরা জিতে যেমন আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। আমরাও তেমন আত্মবিশ্বাসী।” সঙ্গে আটলেটিকো ডিফেন্ডার যোগ করেন, “কোচের নির্দেশ মতোই আমরা সবাই নর্থইস্টের প্রথম ম্যাচ টিভিতে দেখেছি। কোচও টিম মিটিংয়ে বলেছেন গুয়াহাটির টিমটা বেশ ভাল। আমরা মনোযোগ দিচ্ছি নিজেদের খেলাতেই। গত ম্যাচে যে ভুলত্রুটি হয়েছে সেগুলো শুধরে নিতে হবে।”
এক দিকে অর্ণব যখন ভাবছেন ভুলত্রুটি কী করে শোধরাবেন, তখন আটলেটিকোর মাঝমাঠের তারকা হোফ্রে ম্যাতিউ চিন্তিত নর্থইস্টের ‘আইকন’ ফুটবলার হোয়ান কাপদেভিয়াকে নিয়ে। যাঁকে ব্যক্তিগত ভাবেও চেনেন হোফ্রে। “আমি জানি কাপদেভিয়াকে। ও যে ভাল ফুটবলার তা নিয়ে সন্দেহ নেই। আমাদের আলাদা করে নজর রাখতে হবে ওর ওপর। কিন্তু আমাদের দলেও ভাল ফুটবলার আছে। যারা ওকে আটকাতে পারবে।” আটলেটিকো জার্সিতে প্রথম ম্যাচে ভারতীয় ফুটবলারদেরও পাস মার্ক দিয়ে দিলেন হোফ্রে। বলেন, “ভারতীয়দের সঙ্গে মাঠে বোঝাপড়া বাড়ানোর জন্যই তো মাদ্রিদে প্রাক্ মরসুম শিবির করা হয়েছে। ভারতীয় ফুটবলাররা খুবই ভাল। কোনও পার্থক্য বুঝতে পারলাম না ওদের খেলার ধরনের সঙ্গে।”
আচমকা কোচের এক দিন আগে গুয়াহাটিতে যাওয়ার সিদ্ধান্তে কোনও মতেই অবাক নন হোফ্রে। বরং এতে সুবিধাই হবে, সে কথাই মানছেন প্রাক্তন বার্সেলোনা ফুটবলার। “এক দিন আগে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা ভালই। বরং ওদের মাঠে অনুশীলন করতে পারলে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া যাবে। প্রথমে ম্যাচে ভাল খেলেছে দল। আশা করছি গুয়াহাটি থেকেও তিন পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে পারব,” বলেন হোফ্রে।
অর্ণব আবার এক পয়েন্ট পেলেও সন্তুষ্ট থাকবেন। “নর্থইস্টের ঘরের মাঠে সমর্থন দেখে খুব ভাল লাগল। ব্যাপারটা খুব সহজ হবে না। কিন্তু তিন পয়েন্ট পেলে দারুণ ফল করব। তবে এক পয়েন্ট পেলেও খারাপ নয়।”