ডুডু নামতেই বাগানে অকাল বসন্ত

গত কলকাতা লিগে ছিলেন লাল-হলুদের ‘পরশ পাথর’। সেই ডুডু ওমাগবেমি কি এ বার জার্সি বদলে মোহনবাগানে ‘মিডাস টাচ’ দিতে হাজির! টানা দু’ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট। গোলের দেখা নেই।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৫ ০২:২৬
Share:

হ্যাটট্রিকের হুঙ্কার। রবিবার বারাসতে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

মোহনবাগান-৫ : সাদার্ন সমিতি-২

Advertisement

(ডুডু-হ্যাটট্রিক, কাতসুমি-২), (স্নেহাশিস-পেনাল্টি, টরাস্ট)

গত কলকাতা লিগে ছিলেন লাল-হলুদের ‘পরশ পাথর’। সেই ডুডু ওমাগবেমি কি এ বার জার্সি বদলে মোহনবাগানে ‘মিডাস টাচ’ দিতে হাজির!

Advertisement

টানা দু’ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট। গোলের দেখা নেই। পাঁচ বছর না আসা লিগ তা হলে এ বারও কি... এ সব সাতপাঁচ ভেবে বাগান সমর্থকদের যখন রাতের ঘুমের দফারফা, ঠিক তখনই ফিনল্যান্ড থেকে তাঁর আগমন। আর সবুজ-মেরুনে ন’নম্বর জার্সি গায়ে প্রথম ম্যাচেই হ্যাটট্রিক।

তিরিশ বছর আগে বেঙ্গালুরুতে ফেড কাপে সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করেছিলেন এক বঙ্গসন্তান। তাঁরও জার্সি নম্বর ছিল নয়। সেই শিশির ঘোষ রিষড়ার বাড়ি থেকে ফোনে বললেন, ‘‘মোহনবাগান তো লড়ার অক্সিজেন পেয়ে গেল! ডং-য়ের হ্যাটট্রিকের পর এ বার ডুডুর পাল্টা! কলকাতা লিগ তো জমে গেল।’’ আর ম্যাচ সেরা ডুডু বলছেন, ‘‘আমার কাজই তো গোল করা। তবে এটা একশো শতাংশ পারফরম্যান্স নয়। আসল খেলা তো আই লিগে।’’

বাগান ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে এল অন্য গল্প। শনিবার গৌরীবাড়িতে সবুজ-মেরুন কর্মসমিতির এক সদস্যের গ্রহরত্ন শো-রুমের জন্মদিনে আমন্ত্রিত ছিলেন ডুডু। সেখানেই সেই কর্তাকে ডুডু বলেন, ‘‘চিন্তা নেই। রবিবার গোল করব। বাগানও ঠিক জিতবে।’’ মোহনবাগানের সেই কর্তা সিদ্ধার্থ রায় ম্যাচ শেষে হাসতে হাসতে বলে গেলেন, ‘‘যে ভাবে বলে বলে আজ গোল করল। তাতে ডুডু আমার জ্যোতিষীকেও পিছনে ফেলে দেবে!’’

শিশিরের মতো স্ট্রাইকার নন। ডুডু হলেন ফ্রি-ফুটবলার। যিনি বলের জন্য অপেক্ষা না করে বলের কাছে যান। জায়গায় দাঁড়িয়ে রিসিভ করেন না। প্রথম টাচটা বেশ। ডান-বাঁ দু’দিকেই অপারেট করতে পারেন। বিপক্ষ রক্ষণে বাঁ পায়ে ইনসাইড-আউটসাইড দু’দিক দিয়েই ঢুকতে সমস্যা নেই। সঙ্গে দুরন্ত হেড। বারাসতেও দেখা গেল ডুডু রয়েছেন ডুডুতেই। আর এই মূলধন সম্বল করেই তাঁর তিন গোল।

ডুডুর হ্যাটট্রিকের দিনে কাতসুমিও ঝলসালেন ফ্রিকিক থেকে অনবদ্য গোল করে। বক্সের কয়েক গজ আগে ডুডু-শৌভিক-লালকমলদের জটলা। আর সেখান থেকে আচমকা সোয়ার্ভিং ফ্রিকিকে ফুকুশিমার ছেলের গোল। দিন কয়েক আগে যা দেখা গিয়েছিল মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মহমেডানে। এ দিন কাতসুমির সেই গোল সম্পর্কে বাগান কোচ সঞ্জয় সেন বলে গেলেন, ‘‘এই প্র্যাকটিসটা শনিবার করিয়েছিলাম। মাঠে কাজে লাগল। তবে গোলের জন্য শুধু ডুডু ভরসা হলে চিন্তা থাকছেই।’’

চিন্তা তো ডুডু-কাতসুমি যুগলবন্দির দিনে রয়েই গেল। তা বাগানের রক্ষণ নিয়ে। স্নেহাশিস-শঙ্করদের আটকাতে এ দিন যে রকম ত্রাহি-ত্রাহি রব তুললেন সফর, সঞ্জয়রা— তা বাগান কোচের কপালে ভাঁজ ফেলার জন্য যথেষ্টই। লেফট ব্যাকে সুখেনের ওভারল্যাপ হচ্ছেই না। সঙ্গে বিপক্ষের আক্রমণের সময় লালকমলদের মাঝমাঠে আরও দায়িত্ববোধ দরকার।

যা দেখে এ দিন সম্প্রচার সংস্থার বিশেষজ্ঞ প্রাক্তন সবুজ-মেরুন ডিফেন্ডার অমিত ভদ্র বলে গেলেন, ‘‘রক্ষণে একটা লিডার দরকার বাগানের। না হলে কিন্তু সমস্যা বাড়বে।’’

মোহনবাগান: দেবজিৎ (বিনয়), প্রীতম, সঞ্জয়, সফর, সুখেন, রাম (লুইস), লালকমল, শৌভিক, কাতসুমি, পঙ্কজ, ডুডু (গুস্তাভো)।

সোমবার

কলকাতা লিগে: মহমেডান বনাম পুলিশ এসি (মহমেডান, ৩-৩০)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement