সমালোচনা আর চাপকে উড়িয়ে প্রস্তুতি ধওয়নের

অতীতে আইসিসির বড় বড় প্রতিযোগিতায় প্রায় সব সময় সফল হয়েছেন ধওয়ন। তা সে ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হোক কী ২০১৫ বিশ্বকাপ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৯ ০৩:০৩
Share:

দৃপ্ত: সমালোচনায় কান দিতে রাজি নন ধওয়ন। —ফাইল চিত্র।

বল যে পরিবেশে সুইং করে, সেখানে তাঁর টেকনিক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু বিশ্বকাপের আগে এই সব প্রশ্নকে মাথাতেই রাখছেন না শিখর ধওয়ন। ভারতের বাঁ হাতি ওপেনার বরং আত্মবিশ্বাসী, আসন্ন ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে সফল হবেন তিনি।

Advertisement

অতীতে আইসিসির বড় বড় প্রতিযোগিতায় প্রায় সব সময় সফল হয়েছেন ধওয়ন। তা সে ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হোক কী ২০১৫ বিশ্বকাপ। চার বছর আগের বিশ্বকাপে ভারতের সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন ধওয়নই। যে প্রসঙ্গ উঠলেই ধওয়ন বলেছেন, ‘‘সবাই বলে, আইসিসি প্রতিযোগিতাগুলোয় আমার রেকর্ড দারুণ। কিন্তু ঘটনা হল, ব্যাট হাতে নামলে আমি সব সময় একশো ভাগই দেওয়ার চেষ্টা করি। তা সেটা আইসিসির কোনও প্রতিযোগিতা হোক বা অন্য কোনও খেলা। আইসিসি প্রতিযোগিতায় ভাল করা মানে এই নয় যে অন্যান্য জায়গায় আমি নিজের একশো ভাগ দিই না।’’ এর পরেই তিনি যোগ করেন, ‘‘আমি আত্মবিশ্বাসী, এ বারও ভাল কিছু করতে পারব।’’

আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে ৫২১ রান করে ছন্দে ফিরেছেন ধওয়ন। তার আগে অবশ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তেমন রান করতে পারেননি। সামনে বিশ্বকাপ বলে কি আলাদা চাপ ছিল? মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকার ধওয়ন বলেছেন, ‘‘একেবারেই না। আমি কখনও কোনও চাপ অনুভব করি না। আমি যে কোনও পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারি।’’ তিনি রান না পেলেই সমালোচনার ঝড় ওঠে। সমালোচকদের নিয়ে ধওয়নের মন্তব্য, ‘‘সমালোচকরা ওদের কাজ করে। আমি যদি ৫-১০টা ম্যাচে রান না পাই, তা হলে সব কিছু শেষ হয়ে যায় না। আমি কী ধরনের খেলোয়াড় আর আমি কী করতে পারি, সে সম্পর্কে আমার পরিষ্কার ধারণা আছে।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এখনও পর্যন্ত ১২৮ ওয়ান ডে ম্যাচে ১৬টি সেঞ্চুরি-সহ ৫৩৫৫ রান করেছেন ধওয়ন। কিন্তু অফস্টাম্পের বাইরে তাঁর টেকনিক নিয়ে প্রশ্ন ওঠা থামেনি। তাঁর টেকনিকের বিশ্লেষণও হয়েছে নানা ভাবে। এ সব কি তাঁকে প্রভাবিত করে? ধওয়নের জবাব, ‘‘আমার সম্পর্কে কে কী বলছে, তা জানতে গেলে হয় কাগজ পড়তে হবে না হলে টিভি দেখতে হবে। দুটোর একটাও করি না। কাগজও পড়ি না, টিভিও দেখি না। তাই কে কী বলছে, তা নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না।’’

সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব নিয়ে ধওয়ন বলেছেন, ‘‘আমার টুইটার, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থাকলেও সে সব বেশি ব্যবহার করি না। মাঝে মাঝে দেখি। একটা কথা আপনাদের পরিষ্কার বলে দিতে চাই, আমার জীবনে নেতিবাচক ভাবনার জায়গা নেই।’’ এ বারের আইপিএলে ধওয়ন পাশে পেয়েছেন দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার— রিকি পন্টিং এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। ভারতীয় ওপেনার মনে করেন, একেবারে ঠিক সময় ওই দুই কিংবদন্তির কাছ থেকে পরামর্শ পেয়েছেন। ধওয়নের কথায়, ‘‘রিকি এবং দাদা (সৌরভ), দু’জনেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সফল অধিনায়ক, কারণ ওরা চ্যাম্পিয়ন তৈরি করতে জানে। ওদের অভিজ্ঞতা দারুণ ভাবে কাজে এসেছে। দু’জনেই বলে দিয়েছিল, আমার টেকনিকে কোনও সমস্যা নেই।’’

পনেরো বছর হয়ে গেল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে ধওয়নের। কিন্তু সফল হওয়ার সেই খিদেটা এতটুকু কমেনি। ‘‘ক্রিকেট জীবনের শুরুতে যে রকম আবেগ ছিল, এখনও তাই আছে। যদি এই আবেগ আর খিদেটা না থাকত, তা হলে ভারতের হয়ে খেলতে পারতাম না,’’ বলেন তিনি।

ক্রিকেটের পাশাপাশি এখন ক্লাসিকাল সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ জন্মেছে ধওয়নের। শিখছেন বাঁশি বাজানো। কেন হঠাৎ সঙ্গীতের দিকে ঝুঁকছেন? ধওয়ন বলছেন, ‘‘আমি সুফি সঙ্গীতের খুব ভক্ত। এখন বাঁশি বাজানো শিখছি। প্রথমে ইউ টিউবে বাঁশি শুনি। তার পরে দেখলাম, যখন ক্রিকেট খেলছি না, তখন হাতে ফাঁকা সময় থাকছে। সেই সময় বাঁশি শিখব ঠিক করি। কারণ ব্যাপারটা আমাকে খুব টানছিল।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘ভেবে দেখলাম, অবসর সময় হোটেলে বসে গল্পগুজব না করে বাঁশি শেখায় মন দিই। সব মানুষেরই কিছু না কিছু শখ থাকা উচিত। এই শখই মানুষকে চাপমুক্ত রাখে। আমার শখ হল, বাঁশি বাজানো।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন