Cricket

বিরাট জয়ে সিরিজে ফিরল ভারত, ২০৩ রানে হারল ইংল্যান্ড

প্রত্যাশিত ভাবেই ট্রেন্টব্রিজ টেস্ট জিতল ভারত। শেষ দিন এক উইকেট নিতে বেশিক্ষণ সময় লাগল না। পাঁচ টেস্টের সিরিজ ২-১ করে লড়াইয়ে ফিরল ভারত।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৮ ১৫:৪৭
Share:

বাকি আর দুই টেস্ট। বিরাটরা কি সিরিজ জিততে পারবেন? ছবি: রয়টার্স।

বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হল না। শেষ উইকেটে জেমস অ্যান্ডারসন ও আদিল রশিদের প্রতিরোধ দশ মিনিটও স্থায়ী হল না। বুধবার, পঞ্চম দিনের সকালে খেলা শুরুর ১৭ বলের মধ্যেই এল জয়। দিনের তৃতীয় ওভারে পঞ্চম বলে ফিরলেন অ্যান্ডারসন। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে অ্যান্ডারসনের ক্যাচ ধরলেন অজিঙ্ক রাহানে। ট্রেন্টব্রিজে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট ২০৩ রানে জিতলেন বিরাট কোহালি বাহিনী। প্রথম দুই টেস্ট হেরে সিরিজে পিছিয়ে পড়ার পর এই জয়ের স্বাদই আলাদা।

Advertisement

জেতার জন্য মাত্র এক উইকেট দরকার ছিল ভারতের। ইংল্যান্ডকে খেলতে হত সারা দিন। অলৌকিক কিছু ঘটেনি। অধিনায়ক কোহালি শুরু করেছিলেন হার্দিক পান্ড্যকে দিয়ে। পরের ওভার দেন মহম্মদ শামিকে। তৃতীয় ওভার দেন অশ্বিনকে। অফস্পিনারই হানলেন শেষ আঘাত। ৫২১ রানের জয়ের লক্ষ্য তাড়া করে ইংল্যান্ড থামল ৩১৭ রানে। ৩৩ রানে অপরাজিত থাকলেন রশিদ। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সফলতম জশপ্রীত বুমরা। তিনি নিলেন পাঁচ উইকেট।

ইংল্যান্ডে এর আগে মাত্র ছয় টেস্ট জিতেছিল ভারত। হেরেছিল ৩২ টেস্টে। ইংল্যান্ডের মাটিতে এটা ভারতের সপ্তম জয়। ১৯৭১ সালে লন্ডনের কেনিংটন ওভালে প্রথমবার ইংল্যান্ডে টেস্ট জিতেছিল ভারত। ওই টেস্ট জয়ের সুবাদেই এল অজিত ওয়াদেকরের নেতৃত্বে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়। ইংল্যান্ডে দ্বিতীয় টেস্ট জয় ১৯৮৬ সালে লর্ডসে। সেই সিরিজেই হেডিংলিতে এল আবার জয়। সিরিজ জিতল কপিল দেবের ভারত। ২০০২ সালে লিডসে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ফের টেস্ট জয়। সিরিজ ড্র হয়েছিল। পরের টেস্ট জয় রাহুল দ্রাবিড়ের নেতৃত্বে, ২০০৭ সালে ট্রেন্টব্রিজে। সিরিজও জিতেছিল ভারত। চার বছর আগে, ২০১৪ সালে লর্ডসেও টেস্ট জিতেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারত। কিন্তু, সেই জয়ের রেশ ধরে রাখা যায়নি।

Advertisement

দেখুন টেস্ট জয়ের মুহূর্তের ভিডিয়ো

ট্রেন্টব্রিজে বুধবারের জয়ের তাত্পর্য অবশ্য আলাদা। এই জয় শুধু পাঁচ টেস্টের সিরিজে ২-১ করে ভারতকে লড়াইতেই ফেরাল না। একইসঙ্গে সিরিজের বাকি দুই টেস্টের আগে করে তুলল আত্মবিশ্বাসী। প্রথম দুই টেস্টে ভারতীয় ব্যাটিংকে দেখাচ্ছিল ভঙ্গুর। ওপেনাররা রান পাচ্ছিলেন না। মিডল অর্ডারকেও দেখাচ্ছিল দিশেহারা। ট্রেন্টব্রিজে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপ ফিরল স্বমহিমায়। শিখর ধাওয়ান ও লোকেশ রাহুল, দুই ওপেনার বড় রান না পেলেও নতুন বলের পালিশ তুলে দিলেন। তিন নম্বরে চেতেশ্বর পূজারা দিলেন নির্ভরতা। পাঁচে অজিঙ্ক রাহানে বড় রানের জুটিতে নিজস্ব ছন্দে ব্যাট করলেন। আর কোহালি তো যথারীতি ছিলেনই নিজস্ব মেজাজে। চার বছর আগের রান-খরা সুদে-আসলে পুষিয়ে নিতে এবার বদ্ধপরিকর দেখাচ্ছে তাঁকে। ম্যাচের সেরা হলেন তিনি। এই জয় কেরলের বন্যা-দুর্গতদের উত্সর্গ করলেন তিনি। শতরান উত্সর্গ করলেন স্ত্রী অনুষ্কা শর্মাকে।

ম্যাচের সেরা হলেন বিরাট কোহালি। দেখুন ভিডিয়ো

বিশেষজ্ঞরা ছয় ব্যাটসম্যান খেলানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন টেস্ট শুরুর আগে। ভারত তা করেনি। ভরসা রাখা হয়েছিল অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ড্যর ওপর। ব্যাটে-বলে তাঁর সাফল্য সেজন্যই ভারসাম্য আনছে। বলে পাঁচ উইকেটের পর ব্যাটে দ্বিতীয় ইনিংসে পঞ্চাশ করেছেন তিনি। অভিষেকেই ঋষভ পন্থের ভয়ডরহীন ব্যাটিংও গভীরতা আনছে। বার্তাও থাকছে যে, ছয় বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান না খেলিয়েও ভারত বড় রান তুলতে পারে।

বোলিংয়ে জশপ্রীত বুমরা চোট সারিয়ে ফিরে এসেই নিলেন পাঁচ উইকেট। শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় নতুন বলে করলেন আগুন-ঝরানো স্পেল। ভারতীয় পেসাররা সারাক্ষণ গতির তুফান তুললেন। অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ড্যও প্রথম ইনিংসে গতি আর সুইংয়ের মিশেলে নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। ইশান্ত শর্মা, মহম্মদ শামিও রয়েছেন ছন্দে। ফলে,ভারতীয় পেস আক্রমণ বিপক্ষ শিবিরে ত্রাস আনছে। সিরিজের চতুর্থ টেস্ট ৩০ অগস্ট থেকে। ফলে, বেশ কয়েকদিন বিশ্রামও পেয়ে যাবেন পেসাররা। চিন্তা রয়েছে শুধু অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে নিয়ে। কোমরের নীচের দিকের মাংসপেশিতে টান ধরায় এই টেস্টে স্বমহিমায় পাওয়া গেল না তাঁকে। তবে চতুর্থ টেস্টের আগে তিনিও সময় পেয়ে যাচ্ছেন ফিট হয়ে ওঠার।

আরও পড়ুন: শুটিংয়ে ফের সোনা, বাজিমাত রাহির

আরও পড়ুন: এশিয়াড ২০১৮: হকিতে এ বার হংকংকে ২৬ গোল দিল ছেলেরা​

(ক্রিকেটের খবর,ফুটবলের খবর, টেনিসের খবর, হকির খবর - খেলার খবরের সেরা ঠিকানা আমাদের খেলা বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন