সংশয়: অম্বাতি রায়ডুর ফর্ম নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। ফাইল চিত্র
বিশ্বকাপের জন্য বিরাট কোহালির দলের যোগ্য চার নম্বর ব্যাটসম্যান কি অম্বাতি রায়ডুই? সারা দেশের ক্রিকেট মহলে এই প্রশ্ন উঠে পড়েছে। দেখেশুনে মনে হচ্ছে, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির শহরে বিশ্বকাপ ভাগ্য নির্ধারণ হতে চলেছে রায়ডুর।
এমনিতে ভিভিএস লক্ষ্মণের শহর থেকে আসা রায়ডুর ব্যাটিং নিয়ে শিরোনাম দেওয়া যেতে পারে ‘কভি খুশি কভি গম’। কখনও উজ্জ্বল, কখনও নিষ্প্রভ। এবং, কখন কোন গিয়ারে থাকবেন, বোঝা যাচ্ছে না। সব চেয়ে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কঠিন সময়ে তাঁর ব্যর্থ হয়ে চলা। ২০১৯ সালে রায়ডু মাত্র ৩৫-এর ব্যাটিং গড়ে ২৪৫ রান করেছেন। একটি মাত্র হাফ সেঞ্চুরি। রায়ডুর খেলা দেখে মনে হচ্ছে, তিনি নিজের জায়গা বাঁচানোর জন্য খেলছেন। সেটা সব চেয়ে বেশি চিন্তার কারণ যে-হেতু কোহালির এই দলের মূল মন্ত্রই হচ্ছে, নিজের জন্য নয় দলের জন্য খেলো।
ভারতীয় দলের এ দিন বাধ্যতামূলক অনুশীলন ছিল না। বিরাট কোহালি এলেন না। যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামির মতো জোরে বোলাররা বিশ্রাম নিলেন। কিন্তু রানের মধ্যে না থাকা রায়ডু এলেন। কয়েক বার হেড কোচ রবি শাস্ত্রীকে দেখাও গেল তাঁকে ডেকে নিয়ে বোঝাচ্ছেন। কিন্তু শাস্ত্রী যতই ডাক্তারের ভূমিকা নিন, ওষুধ গিলিয়ে তো দিতে পারবেন না। রোগ সারাতে হবে রায়ডুকে নিজেই। যা ইঙ্গিত, ধোনির শহরেও একই দল খেলাতে পারে ভারত। সেক্ষেত্রে রায়ডু আরও একটা সুযোগ পাচ্ছেন নিজেকে প্রমাণ করার। যদি রাঁচীতেও তিনি হিমোগ্লোবিন বাড়াতে না পারেন, কাপ-কাঁটায় রক্তাক্ত হওয়াক আতঙ্ক থাকছে।
রায়ডুর সর্বনাশ হতে পারে কে এল রাহুলের পৌষ মাস। তার আরও কারণ হচ্ছে, দুই ওপেনারের আলো-আঁধারি ফর্ম। রোহিত শর্মার ব্যাটে সেই ঝলক দেখা যাচ্ছে না। শিখর ধওয়ন গত ১০ ম্যাচে ২৬৪ রান করেছেন। গড় মাত্র ২৯। দু’টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে কিন্তু একেবারেই আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছে না বাঁ হাতি ওপেনারকে। এই অবস্থায় তৃতীয় ওপেনাপ হিসেবে রাহুলের কথা বেশি করে উঠতে বাধ্য।
ঋষভ পন্থের জন্য তেমনই নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ থাকছে শেষ দুই ম্যাচে। যদি মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বিশ্রাম নেন, তা হলে মোহালি এবং দিল্লিতে খেলানো হতে পারে ঋষভকে। এই দু’টি ম্যাচে যদি ঝড় তুলে দিতে পারেন তিনি, তা হলে বিশ্বকাপের উড়ান তাঁকে ছাড়া টেক-অফ করানো কঠিন হবে। এ দিন বোর্ডের চুক্তিতেও উপরের দিকে উঠে এসেছেন ঋষভ। সমস্যা হচ্ছে, দীনেশ কার্তিকের দিকেও ভোট রয়েছে কারও কারও। মোহালি এবং দিল্লিতে ঋষভ রান না করতে পারলে কার্তিক-প্রেম আরও বাড়তে পারে।
এ দিকে, ০-২ পিছিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়াকে রাঁচীতে দেখে মনে হচ্ছে, তারা ইতিহাসের খোঁজে পিছোতে পিছোতে ডাইনোসর যুগে চলে যেতেও রাজি। এমনই শোচনীয় অবস্থা অ্যারন ফিঞ্চের এই দলের যে, কমেন্ট্রি করতে আসা ম্যাথু হেডেন এবং মিচেল জনসনকে তাঁরা ধরে নিয়ে এলেন এ দিনের প্র্যাক্টিসে। জনসন ভাষণ দিলেন বোলারদের। হেডেন ব্যাটসম্যানদের। যদি ধোনির শহরেই সিরিজ হার ঠেকানো যায় দুই প্রাক্তনকে দিয়ে। কেউ কেউ যা দেখে বলে ফেলছেন, যদি এতেও না হয় পড়ে রইল জনসনদের খেলতে নামিয়ে দেওয়া। বর্তমান এই অস্ট্রেলীয় দলের চেয়ে কত খারাপ আর হবে!