virat kohli

ইংল্যান্ডকে হারানোর ৫ কারণ ব্যাখ্যা করলেন বিরাট কোহালি

দাপুটে কামব্যাক করে চেন্নাইয়ের ‘শিক্ষিত’ দর্শকদের ধন্যবাদ জানালেন অধিনায়ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৬:০৭
Share:

সিরিজে সমতা ফেরানোর পর বিরাট কোহালিকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন জো রুট। ছবি - টুইটার

তাঁর অধিনায়কত্বে লাগাতার চার টেস্ট হারতেই গেল গেল রব উঠে গিয়েছিল। তবে দারুণ প্রত্যাবর্তন করে প্রথম টেস্টে ২২৭ রানে হারের বদলা নিল বিরাট কোহালির ভারত। যে চিপকে প্রথম টেস্টে দল লজ্জার হার হজম করেছিল, সেই চিপকের দ্বিতীয় টেস্টে ৩১৭ রানের বিশাল ব্যবাধানে জিতল বিরাটবাহিনী। শুধু তাই নয়। সিরিজের সমতা ফিরিয়ে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকেও ছুঁয়ে ফেললেন ‘কিং কোহালি’।

Advertisement

ঘরের মাঠে সর্বাধিক ২১ টেস্ট জেতার নজির এতদিন ‘ক্যাপ্টেন কুল’এর কাছে ছিল। দেশে ৩০টি টেস্টে অধিনায়কত্ব করে এই রেকর্ড নিজের নামে করেছিলেন বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক। সঙ্গে ছিল ৩টি হার ও ৬টি ড্র। এবার সেই রেকর্ডে ভাগ বসালেন বিরাট। ২৮টি টেস্টে অধিনায়কত্ব করে ২১টি ম্যাচে জয় পেলেন কোহালি। ২টি টেস্ট হারের পাশাপাশি ৫টি ম্যাচ ড্র করে তাঁর দল। টেস্ট জয়ের নিরিখেও ধোনিকে পিছিয়ে দিয়েছেন কোহালি। মাহির টেস্ট জয়ের হার যেখানে ৭০ শতাংশ, সেখানে বিরাটের জয়ের হার ৭৭.৮শতাংশ।

আর তাই এমন দাপুটে কামব্যাক করে চেন্নাইয়ের ‘শিক্ষিত’ দর্শকদের ধন্যবাদ জানালেন অধিনায়ক। একইসঙ্গে দলের দুই তরুণ অক্ষর পটেল ঋষভ পন্থকে প্রশংসায় পঞ্চমুখ তিনি। প্রথম ইনিংসে রোহিত শর্মা মারমুখী মেজাজে ১৬১ রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৬ রান ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। দীর্ঘ দিনের সতীর্থকে ধন্যবাদ জানানোর সাথে চিপকের উইকেট বিতর্ক নিয়েও মুখ খুললেন কোহালি।

Advertisement

সুধীরের মত গ্যালারিতে থাকা অন্য দর্শকরাও দলকে সারাক্ষণ সাহস জুগিয়ে গেলেন। ছবি - টুইটার।

চেন্নাইয়ের দর্শকরাই অনুপ্রেরণা: অনেকদিন পর ঘরের মাঠে খেলতে নামার পর অদ্ভুত অনুভুতি হচ্ছিল। কারণ প্রথম টেস্টে গ্যালারি ফাঁকা ছিল। হয়তো সেই জন্যই সেই টেস্টের দুই দিন আমরা কেমন যেন গুটিয়ে ছিলাম। দর্শকদের চিৎকার কানে না এলে শরীর গরম হয় না। যদিও প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা অনেক ভাল খেলেছিলাম। আসলে স্টেডিয়ামে দর্শক না থাকলে মাঠে মজা পাই না। খাবারে নুন না থাকার মত ব্যাপার হয়ে যায়। তাই এই টেস্টে বারবার দর্শকদের উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ জনিয়েছিলাম। কারণ জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে ওঁদের ধন্যবাদ জানানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। কারণ, ওঁরাই আমাদের লড়াই করার অনুপ্রেরণা। তাছাড়া চেন্নাইয়ের সমর্থকরা ক্রিকেট সম্পর্কে যথেষ্ট শিক্ষিত। সেটাও আমার মাথায় ছিল। ওঁরাও কিন্তু আমাদের সারাক্ষণ উদ্বুদ্ধ করে গিয়েছে।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে অনবদ্য বিরাট। ছবি - টুইটার।

টস ফ্যাক্টর ও চিপকের পিচ: এই জয় আমাদের খুব দরকার ছিল। আক্ষরিক অর্থে জয়। চিপকের এই পিচ কিন্তু দুটো দলের কাছেই কঠিন। দুই ইনিংসে আমরা অনেক ভাল ব্যাট করেছি। তাই সহজে টেস্ট জিতলাম। প্রথমদিন থেকে বল ঘুরলেও আমরা কেঁপে যাইনি। বরং পিচের চরিত্র বুঝে আমরা ব্যাট করেছি। আর তাই দুই ইনিংস মিলিয়ে ৬০০ রানে বেশি করতে পারলাম। তাই কেউ এই পিচকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেও আমি কিন্তু পিচকে দোষ দেব না। সেই জন্য আমার মতে টস মোটেও ফ্যাক্টর হয়নি। সেটা হলে আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮৬ রান করতে পারতাম না। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড কিন্তু প্রবলভাবে ম্যাচে ছিল। যদিও ওরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি।

'টিম ম্যান' পন্থে মজেছেন অধিনায়ক। ছবি - টুইটার।

ঋষভ পন্থ অনবদ্য: গত অস্ট্রেলিয়া সফরে ব্যাটিংয়ের সাথে ফিটনেস নিয়েও পন্থ প্রচুর খেটেছে। সেই জন্য উইকেট কিপার হিসেবেও অনেক উন্নতি করেছে। যেটা প্রতি মুহূর্তে বোঝা যায়। ওর আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়েছে। তাই তো ঘরের মাঠে ঘূর্ণি পিচেও অনবদ্য কিপিং করল। তবে পন্থকে আরও উন্নতি করতে হবে। কারণ, মাঠে ওর উপস্থিতি দলকে উদ্বুদ্ধ করে।

অভিষেক টেস্টেই নজর কাড়লেন অক্ষর। ছবি - টুইটার।

অক্ষর পটেল দুরন্ত: প্রথম টেস্ট খেলতে নামলে সবাই একটু চাপে থাকে। তবে ওর মধ্যে বিন্দুমাত্র জড়তা ছিল না। অনেকদিন পর এমন রাজকীয় টেস্ট অভিষেক দেখলাম। জো রুট ও অন্যান্য ইংরেজ ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে অক্ষর পরিকল্পনা করে মাঠে নেমেছিল। সবসময় হাসছে। এমন ঘূর্ণি পিচে বোলিং করার জন্য এগিয়ে আসছে। তাই তো প্রথম টেস্ট (৪০/২, ৬০/৫) খেলতে নেমেই সফল হল। আশাকরি অক্ষর ভবিষ্যতেও এমনভাবেই মেলে ধরবে। আগামী দুই টেস্ট আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এদের মত তরুণ দলের কাছে সম্পদ। তাই আমি কোনও ভুল করলেও ম্যাচ হারব না। এই বিশ্বাস ওদের প্রতি তৈরি হয়ে গিয়েছে। কারণ এরাই ভবিষ্যতে দলকে এগিয়ে যাবে।

'ম্যাচের সেরা' অশ্বিনের সঙ্গে ক্রিজে তখন কোহালি। ছবি - টুইটার।

অশ্বিন প্রকৃত চ্যাম্পিয়ন: অশ্বিন চিপকের এই পিচকে হাতের তালুর মত চেনে। তাই ও খুব সহজে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে গেল। শুধু তো ব্যাট করা নয়, সেই ইনিংসে ইংরেজ বোলারদের রীতিমত আক্রমণ করেছে অশ্বিন। ওকে দেখে তো আমিও উদ্বুদ্ধ হয়েছিলাম। তবে এই জয় এখন অতীত। পরের টেস্ট গোলাপি বলে খেলা হবে। আর সেই টেস্ট কিন্তু আমাদের জন্য বেশ কঠিন হতে পারে। তাই সজাগ থাকতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন