ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অধিকাংশই চান আইএসএল খেলতে। ছবি: সংগৃহীত।
আই লিগ নয়, আইএসএল-ই প্রথম পছন্দ ভারতের ফুটবল তারকাদের।
এত দিন আইএসএল খেলে আই লিগের ক্লাবগুলোতে সই করতেন সুনীল ছেত্রী, জেজে লালপেখলুয়া-র মতো তারকারা। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। প্রথমত, তিন মাসের বদলে আইএসএল হচ্ছে পাঁচ মাসের। দ্বিতীয়ত, চলতি বছরের নভেম্বর থেকে একইসঙ্গে শুরু হবে আই লিগ ও আইএসএল। ফুটবলাররা কোন লিগে খেলতে আগ্রহী সেই প্রশ্নটাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অধিকাংশই চান আইএসএল খেলতে।
কেন? গত বছর আতলেতিকো দে কলকাতার হয়ে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন প্রীতম কোটাল। তার পরে লোনে সই করেছিলেন মোহনবাগানে। এ বছর কোথায় খেলবেন? প্রীতম বলছেন, ‘‘আমার প্রথম পছন্দ অবশ্যই আইএসএল। কারণ, ভাল বিদেশি কোচ ও ফিজিক্যাল ট্রেনারের কাছে অনুশীলনের সুযোগ পাই আমরা। টুর্নামেন্টের আগে বিদেশে আমাদের প্রস্তুতি শিবির হয়। তা ছাড়া অন্যান্য অত্যাধুনিক সুযোগসুবিধে অনেক বেশি পাওয়া যায় আইএসএলে। যা আই লিগে কল্পনাও করা যায় না।’’
নাম প্রকাশ করা যাবে না শর্তে জাতীয় দলের এক তারকা খোলাখুলিই বললেন, ‘‘আইএসএল-ই যে এখন দেশের এক নম্বর টুর্নামেন্ট, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। তা হলে কেন আমরা আই লিগের মতো দ্বিতীয় সারির টুর্নামেন্টে খেলব?’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘আই লিগে খেলা মানেই মানসিক চাপ বাড়ানো। জিতলে সবাই মাথায় তুলে নাচবে। কিন্তু খারাপ ফল হলেই ক্লাব কর্তা থেকে সমর্থক— দুর্ব্যবহার করেন। তা ছাড়া সময় মতো বেতনও পাওয়া যায় না। আইএসএলে সেই সমস্যা নেই।’’
অধিকাংশ ফুটবলারই যদি আইএসএলে আগ্রহী হন, তা হলে আই লিগে খেলবেন কারা? বেঙ্গালুরু এফসি ও টাটা আইএলএলে যোগ দেওয়ায় এ বার দশ দলের টুর্নামেন্ট হচ্ছে। প্রত্যেকটা দলে ১৭জন করে ভারতীয় ফুটবলার থাকবে। অর্থাৎ, মোট ১৭০ জন ফুটবলার খেলবেন আইএসএলে। জাতীয় দলের আর এক তারকা বলে দিলেন, ‘‘আই লিগের ক্লাবগুলোর পক্ষে ভাল দল গড়াই কঠিন। কারণ, প্রথম সারির সকলেই আইএসএল খেলবে। যারা কোথায় সুযোগ পাবে না, তারাই শুধু অস্তিত্বরক্ষার জন্য আই লিগের ক্লাবগুলোই সই করবে।’’
পরিস্থিতি কঠিন মেনে নিলেও কলকাতার দুই প্রধানের কর্তারা হাল ছাড়তে নারাজ। চুক্তি থাকায় অর্ণব মণ্ডল, কেভিন লোবো, অবিনাশ রুইদাস-দের আগামী মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের হয়েই খেলতে হচ্ছে। পাশাপাশি আইজল এফসি থেকে মহম্মদ আল আমনা, ব্রেন্ডন ভানলালরেমডিকা, লালরাম চুলোভার মতো বেশ কয়েকজনকে সই করিয়েছেন লাল-হলুদ কর্তারা। কোচ হিসেবে নিয়োগ করেছেন খালিদ জামিলকে। কিন্তু মোহনবাগান শিবিরের ছবিটা কিন্তু একেবারেই স্বস্তিদায়ক নয়। প্রথম দলের কোনও ফুটবলারের সঙ্গেই চুক্তি নেই তাদের। যদিও দুই ক্লাবের শীর্ষ কর্তারাই নিয়মিত সমর্থকদের আশ্বাস দিয়ে চলেছেন এই বলে যে, দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই শক্তিশালী দলই গড়া হচ্ছে। আদৌ তা সম্ভব কি না সেটা অবশ্য সময়ই বলবে।