জবাব: শুরুতেই উইকেট তুলে ধাক্কা দিলেন ভুবনেশ্বর। ছবি: রয়টার্স
যে কোনও টেস্ট সিরিজেই প্রথম ম্যাচটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রথম টেস্ট যারা জেতে, তারা মানসিক ভাবে গোটা সিরিজেই ইতিবাচক থাকে।
এ বার দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম দুই টেস্টে হেরে ভারতীয় দল মানসিক ভাবে কিছুটা নড়বড়ে। তার উপর সকালবেলা জোহানেসবার্গের বাইশ গজ দেখে বোঝা যাচ্ছিল না, কোনটা পিচ আর কোনটা আউটফিল্ড। পিচ এতটাই ঘাসে ভরা!
এখানে থেকেই ভারত আরও কুঁকড়ে গিয়েছিল। তার ফলেই এই ব্যাটিং বিপর্যয়। ব্যতিক্রম কেবল বিরাট কোহালি এবং চেতেশ্বর পূজারার ৮৪ রানের জুটি। রান আউটের ভূত ঘাড়ে চেপে বসায় এ দিন অতিরিক্ত সতর্ক ছিল পূজারা। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের সুইংয়ে পরাস্ত হলেও ও মাটি কামড়ে উইকেটে পড়েছিল ‘লুজ’ বলের জন্য। যা শিক্ষানবীশ ক্রিকেটারদের কাছে একটা দৃষ্টান্ত। অন্য দিকে, বিরাট কোহালি মেজাজে ব্যাট করে এই পিচে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করে গেল। বিপক্ষ ফিল্ডারদের দু’বার সুযোগ দিলেও এই পিচে বিরাটের রানটা শতরানের সমান। তবে এনগিডি লুঙ্গির হাফভলি আউটসুইংয়ে আউট হওয়ার সময় আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে ড্রাইভ না করলেই পারত।
এই পিচে দরকার ছিল মনঃসংযোগ ঠিক রেখে খেলা। আর বলের একদম পিছনে ব্যাট নিয়ে গিয়ে যে বল মারতে হবে তা মারা। কিন্তু টি-টোয়েন্টি আর আইপিএল খেলে হার্দিক পাণ্ড্য আর পার্থিব পটেল-রা টেস্ট ক্রিকেটের এই শিক্ষা মাথায় রাখে না আজ।
আরও পড়ুন: পূজারার রান নিয়ে মজায় মাতল সোশ্যাল মিডিয়া
এখন প্রশ্ন হল, এই রান নিয়ে ভারত কতটা লড়তে পারবে? স্কোরবোর্ডে যদি আরও ৪০-৫০ রান বেশি হত তা হলে ভারতের লড়াই করার জায়গাটা অনেকটা পোক্ত হতো নিঃসন্দেহে। তবে এখনও লড়ার জায়গা রয়েছে ভারতীয় পেসারদের। কারণ ১৮৭ রানও এই পিচে লড়াই করার অনেকটা রসদ। ওয়ান্ডারার্সের পিচে এ দিন বল করতে নেমে ভুবনেশ্বরকুমাররা বল করেছে মোটে ছয় ওভার। বল প্রায় নতুন রয়েছে। ফলে বৃহস্পতিবার খেলা শুরুর পরে প্রথম দেড় ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পিচে বাউন্স রয়েছে। তাই ছয় ওভার পুরনো বল নিয়ে এই দেড় ঘণ্টায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে ভুবিদের। মার্করাম আউট হয়ে ফিরে যাওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে রয়েছে নয় উইকেট। সুতরাং প্রথম দেড় ঘণ্টায় যত দ্রুত দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানদের প্যাভিলিয়নে ফেরানো যাবে, ততই ম্যাচের রাশ থাকবে ভারতের হাতে।
অনেকেই ভাবতে পারেন এ দিন নতুন বলে মহম্মদ শামিকে কেন বল করানো হল না! আমার মতে, বিরাট কোহালি এটা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। কারণ শামি নতুন বলের চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর ১০-১১ ওভার হয়ে যাওয়া বলে। এই ধরনের বলে নিয়ন্ত্রণ অনেক বেশি থাকে শামির। শামি, ভুবি-দের মনে রাখতে হবে ডুপ্লেসি, আমলা থাকলেও এই দক্ষিণ আফ্রিকা দলে কিন্তু আসল লোক এবি’ ডিভিলিয়ার্স।