লাল-হলুদ নয়। এ বার সবুজ-মেরুন জার্সিতে ডুডু।
মোহনবাগানে সই করার ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই ফিনল্যান্ড থেকে এল ডুডু ওমাগবেমীর হুঙ্কার। ‘‘সব ম্যাচে গোল করতে চাই। কিন্তু ডার্বিতে যদি গোল করতে পারি সেটাই হবে সব থেকে তৃপ্তির। সে জন্যই আবার কলকাতায় আসা।’’
ইস্টবেঙ্গল এ বার ডুডুকে ছেঁটে ফেলেছে। গতবার কলকাতা লিগে লাল-হলুদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে প্রচুর গোল করা সত্ত্বেও তাঁর জায়গা হয়নি টিমে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে একান্ত সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় সরাসরি পুরনো টিমের নাম করেননি। তবে তাঁর লেখা প্রতিটি শব্দের মধ্যে বেরিয়ে এসেছে অভিমান। জেদও। যেমন ইস্টবেঙ্গল স্ট্রাইকার র্যান্টি মার্টিন্সের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রশ্ন উঠতেই লিখেছেন, ‘‘র্যান্টি আর আমি দু’জনেই পেশাদার ফুটবলার। বন্ধুও। মাঠে কিন্তু আমরা একে অপরের শত্রু। আমি কলকাতায় আসছি তো ওদের হারিয়ে ট্রফি পেতেই।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘যে টিমের জার্সি পরে যখন নামব, সেই টিমকে জেতানোটাই পেশাদারদের কাজ। ডার্বিতেও যদি গোল করে মোহনবাগানকে জেতাতে পারি, তার থেকে ভাল আর কী হতে পারে!’’
মোহনবাগান ডুডু-কে সই করিয়েছে শুধু কলকাতা লিগের জন্যই। কোচ এবং টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সভা করে বেরিয়ে সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু বললেন, ‘‘আমাদের কোচ একজন পরিচিত ভাল স্ট্রাইকার চাইছিলেন। ডুডুকে কিন্তু কলকাতা লিগেই নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। তবেই আই লিগের জন্য ওকে নিয়ে ভাবব আমরা।’’ ক্লাব সূত্রের খবর, এ দিন বিকেলেই ভিসার কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। চেষ্টা হচ্ছে বাগানের দ্বিতীয় ম্যাচের আগেই তাঁকে উড়িয়ে আনার।
ডুডুর সঙ্গে ঘণ্টাখানেক ধরে প্রশ্ন-উত্তর চালাচালির পর মনে হচ্ছে, চ্যালেঞ্জটা নিয়েছেন ইউরোপে খেলে আসা স্ট্রাইকার। লিখে দিলেন, ‘‘আমাকে ভাল পারফরম্যান্স করে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে। শুধু কলকাতা লিগ নয়, আই লিগে প্রচুর গোল করেছি আমি। সেই ক্ষমতা এখনও আমার আছে।’’
গত বছর কলকাতা লিগে দারুণ পারফরম্যান্স করেছিলেন ডুডু। ইস্টবেঙ্গলকে লিগ চ্যাম্পিয়ন করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন ডুডু। তবে আই লিগে তাঁর পাস থেকে র্যান্টি বহু গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেও, নিজে সে ভাবে গোল পাননি। মোট ১৮ ম্যাচে তাঁর গোল সংখ্যা ৯। অর্থাৎ পঞ্চাশ শতাংশ। এ বার কী লক্ষ্য নিয়ে কলকাতায় আসছেন? ডুডুর উত্তর, ‘‘আবার একটা নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছি।’’
কলকাতা লিগে নামার আগে অবশ্য ডুডুর সঙ্গে আরও দুই ফুটবলারকে বেছে নিলন সঞ্জয় সেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রে খেলা কেন লুইস এবং অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের অধিনায়ক রবিনসনকে কলকাতা লিগের জন্য নেওয়া হল। লুইসের ছাড়পত্র আসা নিয়ে সামান্য জটিলতা রয়েছে। ট্রায়ালে থাকা বাকি সব ফুটবলারকেই ছেড়ে দেওয়া হল। ডুডুর সই করা নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি সঞ্জয় সেন। বাগান কোচ বললেন, ‘‘ডুডুকে পেলে সেটা নিঃসন্দেহে ভাল। আমার স্ট্রাইকার সমস্যা অনেকটা মিটবে। ও কবে আসবে জানি না। তা ছাড়া ও কতটা ফিট রয়েছে, সেটাও দেখতে হবে। টিমের সঙ্গেও মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপার তো রয়েছেই।’’
ডুডু বাগানে যোগ দেওয়ার পর অবশ্য ময়দান জুড়ে চূড়ান্ত আগ্রহ—র্যান্টি বনাম ডুডুর লড়াই ঘিরে। দেখার, শেষ পর্যন্ত কোন নাইজিরিয়ান আলো ছড়ান কলকাতা লিগে।