VVS Laxman

সাফল্য সামলানো কঠিন, হার্দিক-রাহুল ইস্যুতে বললেন লক্ষ্মণ

সাফল্য সামলাতে পারছেন না উঠতি ক্রিকেটাররা। এমনই মনে করছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার ভিভিএস লক্ষ্মণ। তাঁর মতে, হার্দিক পান্ড্য-লোকেশ রাহুলদের নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কের কারণ সেটাই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

মুম্বই শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ ১৪:৩২
Share:

হার্দিক-রাহুল ইস্যুতে মুখ খুললেন ভিভিএস লক্ষ্মণ।

ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠা তুলনায় সহজ। কিন্তু, সাফল্যে অবিচল থাকা কঠিন। এমনই মনে করছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার ভিভিএস লক্ষ্মণ। হার্দিক পান্ড্যলোকেশ রাহুলকে নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটের সাম্প্রতিক বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে এমনই মনে করছেন তিনি।

Advertisement

লক্ষ্মণের মতে, “ওরা যা বলেছে, তা অত্যন্ত অন্যায়। ওদের সঠিক শাস্তিই দেওয়া হচ্ছে। তবে ওরা মানুষ হিসেবে খারাপ নয়। ওদের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে হবে।” লক্ষ্মণের সুরে সুর মিলিয়েই প্রাক্তন ক্রিকেটার সঞ্জয় মঞ্জরেকর এই ব্যাপারে পরিণত মানসিকতার দেখানোর আবেদন রেখেছেন। তিনি টুইট করেছেন, “ওরা অপরিণত, কিন্তু আমরা তো পরিণত।” হার্দিকরা কেন এমন মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে লক্ষ্মণের ব্যাখ্যা, “১৮, ১৯ বা ২০ বছর বয়সে এই ক্রিকেটারদের ব্যাঙ্কে পাঁচ থেকে দশ কোটি থাকছে। এই সাফল্য সামলাতে পারছে না ওরা। ব্যর্থতা কিন্তু সামলে নেওয়া সহজ। সাফল্য হজম করা কঠিন। এখানেই সঠিক পথে গাইড করার গুরুত্ব আসছে।’

ক্রিকেটপ্রেমীরা হার্দিক-রাহুলদের আগের প্রজন্মের রাহুল দ্রাবিড়, সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়দের দেখে শিক্ষা নিতে বলছেন। প্রকাশ্যে কেমন আচরণ করা উচিত, তা শিখতে বলা হচ্ছে। লক্ষ্মণ বলেছেন, “মানুষ লক্ষ্য করেন ক্রিকেটারদের। নিজের অজান্তেই পরবর্তী প্রজন্মের ক্রিকেটারদের প্রভাবিত করে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা।” ফলে, ক্রিকেটারদের সংযত থাকা দরকার আচরণে, এমনই মনে করছেন লক্ষ্মণ।

Advertisement

আরও পড়ুন: জাডেজার সরাসরি থ্রোয়ে আউট খাওয়াজা, দেখুন ভিডিয়ো​

আরও পড়ুন: হার্দিকদের নিয়ে তোপ শ্রীসন্থের

প্রসঙ্গত, ‘কফি উইথ কর্ণ’ অনুষ্ঠানে গিয়ে গিয়ে দুই ভারতীয় ক্রিকেটার নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। যা নারীবিদ্বেষী ও বর্ণবিদ্বেষী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা নিয়ে উঠছে সমালোচনার ঝড়। ঠিক কী বলেছিলেন দু’জনে? কর্ণের প্রশ্নের উত্তরে রাহুল জানিয়েছিলেন যে, ১৮ বছর বয়সেই তাঁর ঘরে কন্ডোম পান মা। এবং ভয়ানক রেগে যান। তবে তাঁর বাবা কন্ডোম ব্যবহার করতে দেখে পিঠ চাপড়ে দিয়েছিলেন বলে জানান ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

তুলনায় হার্দিকের মন্তব্য বেশি সমালোচিত হচ্ছে। পার্টিতে গিয়ে মেয়েদের ‘নড়াচড়া’ লক্ষ করেন বলে ওই অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন তিনি। যে মন্তব্য ‘অশালীন’ লেগেছে অনেকেরই। এ ছাড়াও বাবা-মায়ের সঙ্গে খোলাখুলি সম্পর্কের কথা বোঝাতে হার্দিক যা বলেন, সেটাও মানতে পারছেন না অনেকে। অনুষ্ঠানে হার্দিক বলেন, প্রথম ‘ভার্জিনিটি’ হারানোর দিনে তিনি বাড়িতে এসে বাবা-মাকে জানান যে, ‘আজ করকে আয়া’! আরও একটি পার্টিতে হার্দিককে তাঁর বাবা-মা জিজ্ঞেস করেন যে, কে তাঁর বিশেষ বান্ধবী? হার্দিক নাকি তখন সেই পার্টিতে উপস্থিত মহিলাদের মধ্যে থেকে গুনে শেষ করতে পারছিলেন না যে কার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল না!

মোদ্দা কথা, হার্দিকের মন্তব্যে মহিলাদের প্রতি অসম্মান প্রকাশ পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডও ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাসিত করা হয়েছে উভয়কে। শোকজও করা হয়েছে দু’জনকে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের দল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রাখা হয়নি নিউজিল্যান্ড সফরেও দলে। দু’জনেই অবশ্য ক্ষমা চেয়েছেন।

এদিকে,প্রশাসকদের কমিটি বা সিওএ আবার দু’জনের শাস্তির ব্যাপারে মতপার্থক্যে ভুগছে। কে তদন্ত করবেন, কী শাস্তি দেওয়া হবে, সব বিষয়েই সিওএ প্রধান বিনোদ রাইয়ের সঙ্গে অন্যতম সদস্য ডায়না এডুলজির মতান্তর পরিষ্কার। ডায়না চাইছেন দীর্ঘমেয়াদি শাস্তি। বিশ্বকাপের দলে না-রাখার কথা বলেছেন তিনি। কিন্তু তদন্ত হওয়ার আগেই তিনি কী করে এটা বলতে পারেন, পাল্টা প্রশ্ন থাকছে। বোর্ডের তা দেওয়ার আইনি অধিকার কতটা রয়েছে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ক্রিকেটমহলের একাংশ আবার পরিণত মানসিকতা দেখানোর দাবি তুলেছে। লক্ষ্মণ তো সহানুভূতি দেখানোর কথাও বলেছেন। যা অবস্থা, তাতে ক্ষমা চাওয়ার পরেও বোর্ড-রাজনীতির টানাপোড়েনে ভুগতে হচ্ছে দুই ক্রিকেটারকে।

(আইসিসি বিশ্বকাপ হোক বা আইপিএল ,টেস্ট ক্রিকেট, ওয়ান ডে কিংবা টি-টোয়েন্টি। ক্রিকেট খেলার সব আপডেট আমাদের খেলা বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন