প্রথাগত ‘মি়ড সানডে’-র ছুটির পর সোমবার উইম্বলডন তার দ্বিতীয় সপ্তাহে পড়ছে কোর্ট ভর্তি সব চতুর্থ রাউন্ডের মেগা ম্যাচ নিয়ে। কে নেই সেখানে? ফেডেরার থেকে জকোভিচ। মারে থেকে ওয়ারিঙ্কা। শারাপোভা থেকে ওজনিয়াকি। কিন্তু লন্ডনের সময় দুপুর একটায় ঐতিহাসিক সেন্টার কোর্টে প্রথম বল পড়বে যে ম্যাচে, সেটাই ‘দ্য ম্যাচ’।
সেরেনা বনাম ভেনাস! উইলিয়ামস বোনেদের পারিবারিক মহাযুদ্ধ।
যার বয়স ১৭ বছর। মোট সংখ্যা ২৫। কেবল উইম্বলডনের বিচারে ১৫ বছর। ৫ ম্যাচ।
কিন্তু ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ডে মিস উইলিয়ামস ভার্সাস মিস উইলিয়ামস দেখার মাদকতাই যে আলাদা! সব সময় বাড়তি তাৎপর্যের।
পঁয়ত্রিশের দিদির চেয়ে ৪৬৬ দিনের ছোট সেরেনা সোমবারের ম্যাচ নিয়ে বলেছেন, ‘‘জানি কাল অনেক বেশি মানুষ ভেনাসের জন্য গলা ফাটাবে। সম্ভব হলে আমিও দিদির জন্য গলা ফাটাতাম। কিন্তু মুশকিলটা হল, কাল আমার কোর্টের উল্টো দিকে যে ভেনাসই থাকবে!’’
ভেনাস আবার বলছেন, ‘‘কাল পারলে সেরেনাকেই সমর্থন করতাম। কিন্তু কোর্টের ভেতরে ওর উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে সেটা করলে একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে বোধহয়!’’
দু’জনের কোচেরও কেমন যেন ভ্যাবাচাকা খাওয়ার মতো অবস্থা! ভেনাসের কোচ ডেভিড উইট বলেছেন, ‘‘কেউই জানি না কাল কী ঘটবে? দুই বোনকে নিজেদের মধ্যে অসংখ্য বার খেলতে দেখেছি। আর অসংখ্য রকমের রেজাল্ট হতেও দেখেছি। বিশেষ করে উইম্বলডনে। খুব ভাল ম্যাচ হতে দেখেছি। খুব খারাপ ম্যাচ হতেও দেখেছি।’’
সেরেনার কোচ-কাম-প্রেমিক প্যাট্রিক মোরাতোগ্লো আবার বলছেন, ‘‘সেরেনার কাছে ম্যাচটা সব সময় সুপার স্পেশ্যাল। প্রথমত ভেনাস সুপার প্লেয়ার। দ্বিতীয়ত ঘাসে আরও বেশি ভাল খেলে। তৃতীয়ত সেরেনার দিদি ও।’’
শুক্রবারই সেরেনার কাছে আগের রাউন্ডে নির্ণায়ক তৃতীয় সেটে ৩-০ এগিয়েও অবিশ্বাস্য হারা ব্রিটিশ এক নম্বর হেদার ওয়াটসন উইলিয়ামস বোনেদের প্রি-কোয়ার্টার লড়াইয়ের প্রিভিউয়ে লিখেছেন, ‘‘দু’জনের খেলার স্টাইল প্রায় একই রকম। এবং সেটাই স্বাভাবিক। এই অবস্থায় দুই আমেরিকান বোনের মধ্যে সোমবার যার সার্ভিস রিটার্ন ভাল হবে সে জিতবে।’’
আটানব্বইয়ের অস্ট্রেলীয় ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডে উইলিয়ামস বোনেদের নিজেদের মধ্যে প্রথম সাক্ষাৎ ঘটার পর দু’জনের শেষ লড়াই গত বছর মন্ট্রিয়ল ওপেনে। যে ম্যাচে তৃতীয় সেটে সেরেনার হারের সাক্ষী হেদারের মনে হচ্ছে, ‘‘সে দিন সেরেনার একটা অফ ডে ছিল। যেমন একটা অফ ডে দু’দিন আগেই আমার বিরুদ্ধে আসতে আসতেও এল না। কিন্তু ব্যাপারটা ভেনাসকে আত্মবিশ্বাস জোগাবে।’’
ওয়াকিবহাল মহল আবার অন্য একটা সম্ভাবনাও দেখছে। বোনকে কেরিয়ারের দ্বিতীয় ‘সেরেনা স্ল্যাম’, স্টেফি গ্রাফের ২২ স্ল্যামের আরও কাছে পৌঁছে দিতে দিদি ম্যাচটা হালকা ভাবে নেবে না তো? উইলিয়ামস বোনেদের পারিবারিক মহাযুদ্ধের এমন অদ্ভুতুড়ে অতীত নজির কিন্তু আছে! তবে তাতেও অবশ্য বিশ্বের এক নম্বরের কাছে টুর্নামেন্টের ১৬ নম্বর বাছাইয়ের হার তেমন কোনও বড় অঘটন হিসেবে বিবেচিত হবে না।