এ বার মোহনবাগানে আনসুমানা ক্রোমা।—ফাইল চিত্র।
ইস্টবেঙ্গলের চেয়ে বেশ কিছুটা দেরিতে দলবদলের বাজারে নেমেও তিন তারকা বিদেশি নিশ্চিত করে ফেলল মোহনবাগান। তবে সবথেকে যেটা তাৎপর্যপূর্ণ তা হল, যাঁদের নেওয়া হয়েছে সবাই পরীক্ষিত এবং আই লিগে খেলা চেনা মুখ। ড্যারেল ডাফি, ইউসা কাতসুমি, এদুয়ার্দো ফেরিরা বিদায়ের পর চেনা বিদেশিই চাইছিলেন কর্তারা। বিতর্ক এড়াতে।
সোমবার রাতে রীতিমতো গোপনে সবুজ-মেরুন তুলে নিল আইজল এফসি-র স্ট্রাইকার কামো স্টিফেন বায়ো-কে। আই লিগে ছ’টি গোল নিজে করেছেন, করিয়েছেন আরও পাঁচটি।
বায়ো মূলত বক্স স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেন। গোল চেনেন। তাঁর সঙ্গে সাপোর্টিং স্ট্রাইকার হিসাবে খেলার জন্যও সফল বিদেশিও দলে নিলেন কর্তারা। নাম আনসুমানা ক্রোমা। গত মরসুমে চার্চিল ব্রাদার্সের জার্সি পরে লাইবেরিয়ান এই ফুটবলার কলকাতার দুই প্রধান তো বটেই, আইজল-বেঙ্গালুরুর মতো টিমের বিরুদ্ধেও দারুণ খেলেছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে গোলও করেছেন। আই লিগে গতবার ১৬ ম্যাচে ৮ গোল ছিল ক্রোমা-র।
আইজলের স্টপার কিংসলে ওবুমানেনে মোহনবাগানে সই করে দেশে ফিরে গিয়েছেন সপ্তাহখানেক আগেই। ইস্টবেঙ্গল ওই পাহাড়ি দলেরই মিডিও মহম্মদ আল আমনাকে অনেক আগে সই করিয়েও আপাতত থমকে। লাল-হলুদ দলে নিতে পারে এ রকম প্রচুর নাম বাজারে ঘোরাফেরা করছে। চার্চিলের ক্রোমার উপর নজর ছিল ইস্টবেঙ্গলের। কিন্তু রবিবার দুপুরে কলকাতায় এসে তিনি পরের মরসুমে মোহনবাগানে খেলা নিশ্চিত করে যান।
আইএসএলে খেলার চেষ্টা চালিয়েও সফল না হওয়ার ধাক্কা। স্পনসর নেই সাড়ে তিন বছর। অসময়ে যিনি টাকা জোগাতেন সেই প্রেসিডেন্টও পদত্যাগ করেছেন। শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাব তাঁবু অন্ধকার আর হতাশায় ডুবেছিল। এই অবস্থায় ক্লাবের সহ-সচিব এবং অর্থ- সচিব মাত্র তিন দিনের মধ্যেই দল গঠনে অনেকটাই টেক্কা দিলেন পড়শি ক্লাবকে। দুই কর্তারই দাবি, বিদেশিদের মতো ঘরোয়া ফুটবলারদের ক্ষেত্রেও তাঁরা সফল হবেন। তাঁদের আশা, কামো-ক্রোমা বা কা-ক্রো জুটি এ বার সফল হবে। জানা গিয়েছে, তিন বিদেশিকেই সই করানো হচ্ছে শুধু কলকাতা লিগের জন্য। পারফরম্যান্সে কোচেরা সন্তুষ্ট হলে আই লিগের জন্য চুক্তি হবে। কর্তাদের ইঙ্গিত, সনি নর্দেকে তাঁরা পেয়ে যাবেন আই লিগে।
কলকাতা লিগে বিদেশি নিশ্চিত হয়ে গেলেও কোচ সঞ্জয় সেনকে পাচ্ছে না মোহনবাগান। এ দিন ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় টানা চার বছর দায়িত্ব থাকা সঞ্জয় জানিয়ে দেন, এ বারও শুধু আই লিগেই কোচিং করাতে চান। নিমরাজি হলেও কর্তারা শেষ পর্যন্ত তা মেনেও নেন। কিন্তু সঞ্জয়কে বলে দেওয়া হয়েছে, প্রাক-মরসুম প্রস্তুতি-সহ টিমের সব ম্যাচে সঙ্গে থাকতে। ফলে দুই লিগের জন্য এ বারও দুই কোচ মোহনবাগানে। কলকাতা লিগে সহকারী কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী পুরো দায়িত্বে। আর সঞ্জয় কোচিং করাবেন আই লিগে। জানা গিয়েছে, সঞ্জয়ের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ২০১৭-র সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮-র মার্চ পর্যন্ত। সঞ্জয় বললেন, ‘‘কলকাতা লিগে রিজার্ভ বেঞ্চে না থাকলেও অনুশীলন থেকে ম্যাচ, টিমের সঙ্গে সবসময় থাকব।’’