Mohun Bagan

লিগ জয়ের আশা কার্যত শেষ মোহনবাগানের, মহমেডান উঠে এল দু’ নম্বরে

দীপেন্দু বিশ্বাসের কোচিংয়ে এ দিন উজ্জীবিত ফুটবল খেলল সাদা-কালো শিবির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৭:২৯
Share:

মিনি ডার্বিতে দীপেন্দু বিশ্বাস শেষ হাসি হাসলেন। —ফাইল চিত্র।

স্পেনীয় কোচ কিবু ভিকুনার স্বপ্ন ভেঙে দিলেন মহমেডান স্পোর্টিং কোচ দীপেন্দু বিশ্বাস। খেলোয়াড় জীবনে এই ধরনের বড় ম্যাচ বহু খেলেছেন দীপেন্দু। তাঁর গোল বহু ‘মিনি ডার্বি’র ভাগ্য গড়ে দিয়েছিল। এই ধরনের ম্যাচের গুরুত্ব তাঁর থেকে ভাল আর কে জানেন!

Advertisement

এখন বদলে গিয়েছে দীপেন্দুর ভূমিকা। তাঁর হাতে উঠেছে সাদা-কালো শিবিরের রিমোট কন্ট্রোল। মোহনবাগানের খেলা দেখে আগেই করে রেখেছিলেন হোমওয়ার্ক। তার প্রতিফলন দেখা গেল যুবভারতীতে। ম্যাচের স্কোরলাইন বলছে, মহমেডান স্পোর্টিং ৩ মোহনবাগান ২।

তবে সাদা-কালো শিবির যদি আরও গোলে জিতত, তা হলেও অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। দীপেন্দুর ছেলেরা বহু বার বাগানের গোলমুখ খুলে ফেলেছিলেন। সবুজ-মেরুন বারের নীচে দেবজিৎ ছিলেন বলে তিনটের বেশি গোল হজম করতে হয়নি কিবু ভিকুনার দলকে।

Advertisement

দীপেন্দুর হাতে বদলে গিয়েছে সাদা-কালো শিবির। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গতির ঝড় তুললেন তাঁর ছেলেরা। সেই ঝড়েই লণ্ডভণ্ড বাগান। বড় কোনও অঘটন না ঘটলে কলকাতা লিগ জয়ের স্বপ্ন বৃহস্পতিবারের যুবভারতীতেই শেষ হয়ে গেল মোহনবাগানের। এ দিন মহমেডান স্পোর্টিং জেতায় তারাও চলে এল চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে। ‘মিনি ডার্বি’র বল গড়ানোর আগে এই মন্ত্রেই তো ছেলেদের উজ্জীবিত করেছিলেন বহু যুদ্ধের সৈনিক। মাঠে নেমে নিজেদের উজার করে দিলেন তীর্থঙ্কররা। বৃষ্টির জন্য মহমেডান স্পোর্টিংয়ের ঘরের মাঠ কর্দমাক্ত। সেই মাঠে ভাল ফুটবল তুলে ধরা রীতিমতো কষ্টকর। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের মাঠ অনেক ভাল। সেই মাঠেই মহমেডান আগুন জ্বালাল।

জমে উঠেছে লিগের লড়াই। ইস্ট-মোহনের বাইরে কি তবে নতুন চ্যাম্পিয়ন পেতে চলেছে কলকাতা? পিয়ারলেস দুদ্দাড়িয়ে এগিয়ে চলেছে। এ দিন ক্রোমার পিয়ারলেস ২-০ ভবানীপুরকে হারানোয় লিগ জয়ের গন্ধ পেতে শুরু করেছে। লিগ টেবলের যা পরিস্থিতি, তাতে ক্রোমার দল ১৭ পয়েন্ট নিয়ে এক নম্বরে। মহমেডান স্পোর্টিং এ দিন জেতায় চলে এল দু’ নম্বরে (১৬)। মোহনবাগান নেমে গেল পাঁচে। ইস্টবেঙ্গল রয়েছে চার নম্বরে। লাল-হলুদ শিবিরের ঠিক উপরে রয়েছে ভবানীপুর। মোহনবাগান হেরে যাওয়ার খবর পৌঁছেছে প্রাক্তন কোচ চাত্তুনির কাছে। এ দিন তিনি বলছিলেন, ‘‘কলকাতা লিগ জেতার আশা আর নেই মোহনবাগানের। এই খবর শুনে খুব দুঃখ পেয়েছি। মোহনবাগান আমার প্রাক্তন ক্লাব। সব সময়ে মোহনবাগানের জয় দেখতে চাই। ডুরান্ড কাপের ফাইনালেও গোকুলমের কাছে হেরে গেল। এ বার কলকাতা লিগের দৌড় থেকেও ছিটকে গেল। খুব খারাপ লাগছে।’’ একই অবস্থা কিবুরও। দশ মিনিটের একটা ঝড়েই সব শেষ হয়ে গেল বলেই মনে করছেন বাগানের স্পেনীয় কোচ।

খেলার ১০ মিনিটের মধ্যে মহমেডান স্পোর্টিং ২-০ এগিয়ে যায়। খেলার সাত মিনিটে করিম ওমোলজা প্রথম গোলটি করেন। তার তিন মিনিট পরেই তীর্থঙ্কর ব্যবধান বাড়ান। গোটা ম্যাচে নজর কাড়লেন তীর্থঙ্কর। অথচ এই তীর্থঙ্করের সঙ্গে চুক্তি বাড়ায়নি মোহনবাগান। পুরনো দলের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠলেন তিনি। তাঁর বাঁ পা কথা বলল।ঠিকানা লেখা সব পাস বাড়ালেন। যার উত্তর ছিল না বাগান রক্ষণের কাছে।

আরও পড়ুন: কোহালি তোমাকে অভিনন্দন, ভারত অধিনায়ককে আফ্রিদির টুইট

আরও পড়ুন: শেষ মুহূর্তে রোনাল্ডোর ম্যাজিক, তবুও ম্যাচ ড্র, রইল সেই ভিডিয়ো

কিবু ভিকুনার দল ব্যবধান কমায় খেলার ২৪ মিনটে। ফ্রি কিক থেকে গোলটি করেন বেইতিয়া। তাঁর উপরেই এ দিন ভরসা করেছিল কিবু ভিকুনার দল। তিনি পাস বাড়ালেন, গোল করলেন। দ্বিতীয়ার্ধে পরিবর্ত হিসেবে নামা চামোরোকে দিয়ে গোলও করালেন। কিন্তু, এত কিছু করলেও দলকে জেতাতে পারলেন না বেইতিয়া। বিরতির পরে খেলার ৬১ মিনিটে চিডি মহমেডানকে ৩-১ এগিয়ে দেন। উল্লসিত দীপেন্দু ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন চিডিকে। বেইতিয়ার ফ্রি কিক থেকে হেডে বাগানের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন চামোরো। বাগান-স্ট্রাইকার তাঁর উচ্চতাকে কাজে লাগান। বেইতিয়াও তাঁর স্পেনীয় বন্ধুকে উদ্দেশ্য করেই বল ফেলেছিলেন। ম্যাচে ফিরতে হলে চামোরোর উচ্চতাকেই কাজে লাগাতে হত। সেটাই আর হল না। উল্টে মহমেডান আক্রমণাত্মক খেলা চালিয়ে গেল। সেই আগুনেই ঝলসে গেল বাগান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন