অভিনেতা গিরিশ কুলকার্নি ও কোচ পিয়ারা রাম সোঁধি। ছবি: সংগৃহীত।
দঙ্গলে কোচেদের অপমান করা হয়েছে। এমনটাই মনে করছেন গীতা ফোগতের কোচ পিআর সোঁধি। তাঁর চরিত্র যেভাবে সিনেমায় দেখানো হয়েছে তা একদমই সত্যি নয়। গীতা ও ববিতা ফোগতের বাবা মহাবীর ফোগতের জীবন নিয়েই মূল সিনেমা। যেখানে উঠে এসেছে তাঁর দুই মেয়েকে কুস্তিগীর তৈরি করার কাহিনী। যে কারণে বড় ভূমিকা নিয়েছেন কোচ পিআর সোঁধি। তাঁর হাত ধরেই বিশ্বের দরবারে সাফল্য ফোগত বোনেদের। কিন্তু সিনেমায় সেই কোচকেই দেখানো হয়েছে নেগেটিভ ভূমিকায়। যেখানে সেই কোচকে দেখা গিয়েছে কমনওয়েলথের ফাইনাল ম্যাচে যখন গীতা ফোগত কোর্টে নামছেন তখন ভুলিয়ে মহাবীর ফোগতকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। কারণ হিসেবে দেখানো হয়, কোচ থাকতেও গ্যালারি থেকে মেয়েকে উপদেশ দিচ্ছিলেন তিনি। যেটা তিনি মানতে পারেননি বলেই এমনটা ঘটিয়েছেন। কিন্তু এমন কিছুই ঘটেনি। পিআর সোঁধি বলেন, ‘‘আমি সিনেমা দেখিনি। কিন্তু আমাকে অনেকেই বলেছে এই সিনেমায় আমাকে কী ভাবে দেখানো হয়েছে। এটা অপমানজনক। শুধু আমার নয় পুরো কোচিং কমিউনিটির অপমান। আমার আমিরের বিরুদ্ধে কিছু বলার নেই। শুটিংয়ের সময় আমার সঙ্গে লুধিয়ানায় দেখাও হয়েছিল। আমার বিশ্বাস আমির যদি জানতে পারে ওরও খারাপ লাগবে।’’
আরও খবর: পর্দার গীতাদের মধ্যেও পদক দেখছেন কোচ
২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ভারতীয় দলের কোচিং করিয়েছিলেন পিআর সোঁধি। ২০১০ কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জয়ী মহিলা দলের কোচ ছিলেন তিনি। গীতা ও ববিতাকেও সেই সময় কোচিং করিয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া ২০০৮ বেজিং অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জয়ী দলের কোচও ছিলেন তিনি। এত সাফল্যের পরও সিনেমায় তাঁর চরিত্র যেভাবে দেখানো হয়েছে সেটা গ্রহনযোগ্য নয়। তিনি বলেন, ‘‘মহাবীরজি আমার পুরনো বন্ধু। দিল্লি কমনওয়েলথের সময় এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি যেমনটা সিনেমায় দেখানো হয়েছে। আমি গীতাকে মেয়ের মতো দেখতাম। আমি অবাক এটা দেখে যে ফোগতের পরিবার থেকে কোনও প্রতিবাদ করা হল না।’’ ফোগত পরিবারের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও ভেবেছেন তিনি। যদিও এর সপক্ষে যুক্তি দেখিয়েছেন পিআর সোঁধির ভূমিকায় অভিনয় করা গিরিশ কুলকার্নি। তিনি বলেন, ‘‘সিনেমার শুরুতেই বলে দেওয়া হয়েছিল এটা ফিকশন। সিনেমা সম্পর্কে জানলে এটা জানবে সিনেমার এইটুকু স্বাধিনতা থাকে।’’
সোঁধির মতে যা সিনেমায় দেখানো হয়েছে সেটা একদম বিপরিত ঘটনা। তিনি বলেন, ‘‘এক সময় গীতাকে আমি সাহায্যও করেছি। যখন আন্তর্জাতিক ইভেন্টে যোগ দিতে যাওয়ার ঠিক কয়েক মিনিট আগে ওর পাসপোর্ট হারিয়ে গিয়েছিল। মহাবীর আমার কোচিংয়ে কখনও নাক গলায়নি। যেমনটা সিনেমায় দেখানো হয়েছে।’’ দঙ্গলের ডিরেক্টর নিমিশ তিওয়ারি সিনেমার সপক্ষে বলেন, ‘‘ড্রামাটাইজ করতে হত না হলে সেমিফাইনাল থেকে ফাইনাল ম্যাচের পার্থক্য বোঝাতাম কী করে।’’ তা বলে, রিয়েল লাইফ চরিত্র নিয়ে এই ছেলেখেলাটাও যে কোনও যুক্তিতেই মানতে পারছেন না গীতার কোচ সেটা পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।