Novak Djokovic

ঘাসের কোর্টে হারব সত্যিই ভাবিনি! ফাইনালে হেরে সন্তানদের দিকে তাকিয়ে কেঁদে ফেললেন জোকোভিচ

ঘাসের কোর্টে নিজেকে অপ্রতিরোধ্য করে তোলা নোভাক জোকোভিচকে অবশেষে হার মানতে হল। মানতে না পেরে কেঁদে ফেললেন সার্বিয়ার খেলোয়াড়। সঙ্গে প্রশংসা করে গেলেন প্রতিপক্ষ কার্লোস আলকারাজের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৩ ০০:০৯
Share:

ফাইনালে হেরে কাঁদছেন জোকোভিচ। ছবি: রয়টার্স

উইম্বলডন জিতলেই প্রতি বার একটা কাজ নিয়ম করে করেন নোভাক জোকোভিচ। কোর্টের কিছুটা ঘাস ছিড়ে মুখে পুরে চিবিয়ে ফেলেন। সাত বার এই দৃশ্য দেখেছে উইম্বলডন। তার মধ্যে গত চার বার রয়েছে। এ বার সেই দৃশ্য আর দেখা গেল না। এক অন্য জোকোভিচকে দেখল অল ইংল্যান্ডের সেন্টার কোর্ট। এই জোকোভিচ হতাশায় র‌্যাকেট ভাঙলেন। এই জোকোভিচ পরিবারের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন। এই জোকোভিচ কাঁড়ি কাঁড়ি ভুল করলেন গোটা ম্যাচে।

Advertisement

ঘাসের কোর্টে জোকোভিচ নাকি অপ্রতিরোধ্য। এমনটাই বলেন সকলে। ঠিক যেমন রজার ফেডেরার ছিলেন। এ বার ট্রফি জিতলে সুইস খেলোয়াড়কে ছুঁয়ে ফেলতে পারলেন জোকোভিচ। তা আর হল না। ঘাসের কোর্টে খোলা আকাশের নীচে খেলার সুযোগ পেয়েও অবশেষে তারুণ্যের কাছে হেরে গেলেন। টানা ২৮ ম্যাচের দৌড় শেষ হল। ম্যাচের পর তাঁর মুখে তাই বার বার কার্লোস আলকারাজের কথা।

সার্বিয়ার খেলোয়াড় দ্বিধাহীন ভাবে বলে দিলেন, “ভেবেছিলাম এত দিন সুরকির কোর্ট বা কখনও কখনও হার্ড কোর্টে তোমার বিরুদ্ধে খেলতে সমস্যা হবে। এখন তো দেখছি ঘাসের কোর্টের সঙ্গেও দারুণ ভাবে মানিয়ে নিয়েছো। আমার লড়াই আরও বাড়ল। এর আগে মাত্র এক বার-দু’বার এই কোর্টে তুমি খেলেছো। এই প্রতিযোগিতার আগে ঘাসের কোর্টে দু’-একটা প্রতিযোগিতাতেও জিতেছো। এত তাড়াতাড়ি ঘাসের কোর্টের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে ভাবতে পারিনি।”

Advertisement

আলকারাজকে প্রথম সেটে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তার পরেই দুই সেটে পিছিয়ে পড়েছিলেন জোকোভিচ। চতুর্থ সেটে আবার প্রত্যাবর্তন। কিন্তু পঞ্চম সেটের তৃতীয় গেমে ব্রেক হওয়ার পরেই বুঝেছিলেন এই ম্যাচে ফেরা আর সহজ নয়। কতটা খারাপ লেগেছিল সেই সময়? জোকোভিচের উত্তর, “এ ধরনের ম্যাচে কখনওই হারতে চাই না। কিন্তু মনটা স্থির হলে বুঝতে পারব আমি কতটা ভাগ্যবান। এর আগের কয়েকটা বছরে অনেক কঠিন ম্যাচ জিতেছি। ২০১৯ সালে ফেডেরারের বিরুদ্ধে ম্যাচের কথাই মনে করুন। দু-দু’বার চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট থেকে এক ধাপ দূরে ছিল ফেডেরার। সেখান থেকে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছি। অনেকগুলো ফাইনালেও হারের মুখ থেকে জিতেছি। তাই এ বার মনে হয় শোধবোধ হয়ে গেল।”

অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ফরাসি ওপেন জেতার পর উইম্বলডনেও ফাইনালে। এ বারের মতো ‘ক্যালেন্ডার স্ল্যাম’ (এক বছরে চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামেই জেতা) জয়ের সুযোগ হাতছাড়া হল। তবে জোকোভিচ কথা দিলেন, আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরবেন। বললেন, “হয়তো কাল সকাল থেকে এটা নিয়ে ভাবব। আজ সেটা সম্ভব নয়। আসলে এ ধরনের মুহূর্তের জন্যে আমরা রোজ লড়াই করি। বড় মঞ্চে খেলার অপেক্ষা করি। গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনাল সবচেয়ে বড় মঞ্চ। আজ নিজের থেকে ভাল খেলোয়াড়ের কাছে হেরে গিয়েছি। কোনও দুঃখ নেই। এই ঘটনা পেরিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।”

এর পরেই আর আবেগ সামলাতে পারলেন না জোকোভিচ। সঞ্চালক পরিবারের কথা উঠতেই চোখ ভিজে এল তাঁর। দর্শকাসনে নিজের আসনের দিকে তাকিয়ে বললেন, “ওখানে আমার ছেলে বসে রয়েছে। দেখে ভাল লাগছে যে ওরা এখনও হাসছে।” স্টেডিয়ামের করতালির মধ্যেই জোকোভিচের চোখ ভিজে গেল। নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, “তোমাদের সবাইকে আমি ভালবাসি। আমার পাশে থাকার জন্যে ধন্যবাদ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন