দুই কোচ যেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ বাছেন, ভাষ্যকার নয়

সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে টিমের কাজে আসতে পারাটা খুবই তৃপ্তির। ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারও পেলাম। কিন্তু এখানে আমার একটা কথা বলার আছে। একটা স্বীকারোক্তি করার আছে। টিম স্পোর্টে ম্যাচের সেরার পুরস্কার দেওয়ার এই যে রেওয়াজ, এটা আমি মন থেকে মেনে নিতে পারি না। বরং বিশ্বাস করি, এটা তুলে দেওয়া উচিত। আমি জানি এটা এমন একটা রীতি যা বছরের পর বছর ধরে চলছে।

Advertisement

গৌতম গম্ভীর

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:০২
Share:

সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে টিমের কাজে আসতে পারাটা খুবই তৃপ্তির। ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারও পেলাম। কিন্তু এখানে আমার একটা কথা বলার আছে। একটা স্বীকারোক্তি করার আছে। টিম স্পোর্টে ম্যাচের সেরার পুরস্কার দেওয়ার এই যে রেওয়াজ, এটা আমি মন থেকে মেনে নিতে পারি না। বরং বিশ্বাস করি, এটা তুলে দেওয়া উচিত। আমি জানি এটা এমন একটা রীতি যা বছরের পর বছর ধরে চলছে। কিন্তু ক্রিকেটের মতো টিম স্পোর্টে টিমের সদস্যদের প্রচুর অবদান থাকে। সেখানে যে কোনও একজনকে ম্যাচের সেরা বেছে নেওয়া— অন্যায় নয়?

Advertisement

মানছি, আমি ৬০ বলে ৯০ করেছি। টিমকে জিতিয়ে তবে ফিরেছি। কিন্তু সেটা শুধুমাত্র সম্ভব হয়েছে আমার বোলিং ইউনিট হায়দরাবাদকে ১৪২ রানে আটকে রেখেছিল বলে। স্কোরবোর্ড প্রেশারে তো আমাকে পড়তেই হয়নি। যদি উমেশ আর মর্নি মর্কেল শুরুতে ওই বিস্ফোরণ না ঘটাত, যদি না ওরা হায়দরাবাদ ব্যাটিংয়ের সেরা তিন ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে না দিত, ওদের স্কোর আরও বেড়ে যেতে পারত। তার পর মাঝে ধরুন সাকিব আল হাসান, সুনীল নারিন, আন্দ্রে রাসেল। ছোট কিন্তু অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ সব অবদান ওরা রেখে গেল। ওয়ার্নারদের রানকে বাড়তে দিল না। আবার রাসেল-পীযুষ মিলে নমন ওঝার যে অসাধারণ ক্যাচটা নিল— সেটাও বা কে ভুলতে পারবে? নমন কিন্তু সেট হয়ে গিয়েছিল তখন। শনিবার শুরুর দিকে ব্যাটিংয়ের সময় আমি অসুবিধেয় পড়ছিলাম। তখন রবিন উথাপ্পা দায়িত্বটা নিয়ে নিল। যতক্ষণ না আমি গুছিয়ে নিতে পারছি, স্কোরবোর্ডকে চালু রাখার কাজটা রবিন ঠিক করে গেল। বলতে চাইছি, উপরের সব ক’টা ব্যাপার জুড়ে আমার টিমকে সে দিন জিতিয়েছিল। তা হলে শুধু একজনকে ম্যাচের হিরো হিসেবে বেছে নেওয়াটা কি ঠিক? সেটা অন্যায্য নয়?

আমার মতে, টিম যতক্ষণ না জিতছে, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের গুরুত্ব ততক্ষণ তেমন থাকে না। ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে মাহেলা জয়বর্ধনে যে অসাধারণ সেঞ্চুরিটা করেছিল, ক’জন আজ আর মনে রেখেছে? কারণ শ্রীলঙ্কা সে দিন হেরে গিয়েছিল। বরং আমার আর এমএস ধোনির দু’টো নব্বই রানের ইনিংস অমর হয়ে গিয়েছে। চিরকাল স্মৃতিতে থেকে যাবে। এতে আরও একবার বোঝা যায় যে, টিম কী করল না করল সেটাই আসল। ব্যক্তির অসাধারণ কীর্তি নয়। কেউ কেউ বলে এটা ভাল করার জন্য মোটিভেশন ইত্যাদি। কিন্তু আমার কাছে মোটিভেশন সেই মুহূর্তে চলে আসছে যখন আমি একটা টিম জার্সি পরছি। সেটা স্কুল, কলেজ, রাজ্য, দেশ—যা-ই হোক না কেন। এক্ষেত্রে যেমন ফ্র্যাঞ্চাইজি। এর পরেও যদি কারও মোটিভেশনের প্রয়োজন পড়ে, তা হলে বলতে হবে সে মরীচিকার পিছনে ছুটছে।

Advertisement

আমার আরও একটা কথা বলার আছে। এই ম্যান অব দ্য ম্যাচের প্রথা যদি চালাতেই হয়, দু’টো টিমের কোচকে কেন বলা হবে না তা বাছতে? আমার তো মনে হয়, হেরে যাওয়া টিমের কোচ সবচেয়ে ভাল বলতে পারবে বিপক্ষের কে তার টিমকে সবচেয়ে বড় আঘাতটা করল। কে তার থেকে ম্যাচটা নিয়ে চলে গেল। শুনলাম যে, এখনও পর্যন্ত ম্যাচের সেরা নির্বাচন করে কমেন্টেটররা। কিন্তু আমার মনে হয়, যদি এটা চালাতেই হয় তা হলে ব্যাপারটা দু’টো টিমের কোচদের উপর ছাড়ো। সিদ্ধান্ত তারা নিক।

আর সেটা যতক্ষণ না হচ্ছে, কেকেআরে আমরা টিম পারফরম্যান্সে বেশি গুরুত্ব দেব ব্যক্তিগত ঝলকানির উপর বিশেষ ভরসা না করে। কিংগস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে আজ গ্রুপ হিসেবে আমাদের মাঠে নামা দরকার। ওদের টিমটা খুবই ভাল। ডেভিড মিলার ক্যাপ্টেন। মুরলী বিজয়-মনন ভোরা বেশ ভাল ফর্মে আছে। মনে হয়, ম্যাচটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হবে। তবে আমরাও তার জন্য প্রস্তুত। ও হ্যাঁ, ব্র্যাড হগের ফুড পয়জনিং সারিয়ে এখন সুস্থ। সংসারের ‘ইয়ংস্টার’-কে পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন:
আইপিএলের সময়সূচি
আইপিএলের পয়েন্ট টেবল

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন