ঘাতকের নাম হ্যাজলউড। শুক্রবার। ছবি: গেটি ইমেজেস।
পনেরো উইকেটের মহানাটকীয় দিনের শেষে অস্ট্রেলীয় পেসারদের আগুনে পুড়ে ছারখার পাকিস্তান ব্যাটিং। যে টিম মাসকয়েক আগে লর্ডসে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল, গাব্বায় প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষে তারা ৯৭-৮!
২৮৮-৩ স্কোরে যখন প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছিল অস্ট্রেলিয়া, তখন বোঝা যায়নি দ্বিতীয় দিন এমন ব্যাটিং পরীক্ষা নিয়ে উপস্থিত হবে গাব্বার উইকেট। সারফেস এমন বিপজ্জনক রকম দ্রুত হয়ে উঠবে যে, পাকিস্তান ৪৩-১ থেকে ৬৭-৮ হয়ে যাবে। তা-ও আবার পনেরো ওভারেরও কমে!
গাব্বায় ফ্লাডলাইটের নীচে এ দিন সেটাই হল। অস্ট্রেলিয়ার পেস ত্রয়ী— মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউড এবং জ্যাকসন বার্ড রীতিমতো ছিঁড়ে খেলেন পাক ব্যাটিংকে। দিনের শেষ সেশনে পড়ল সাত-সাতটা উইকেট। স্টার্ক আর হ্যাজলউড তিনটে করে, বার্ড সাত রানে দু’উইকেট। এর মধ্যে নিজের পঞ্চম ওভারে দু’বলে দুটো উইকেট তুলে নেন হ্যাজলউড। ক্রিজে আছেন সরফরাজ আহমেদ (৩১) ও মহম্মদ আমের (৮)। পাক প্রতিরোধ বলতে ছিলেন একমাত্র ওপেনার সামি আসলাম। যিনি ১০০ বল খেলে ২২ করতে দু’বার হেলমেটে খেয়েছেন এবং শেষমেশ উইকেটকিপার ম্যাথু ওয়েডের হাতে ক্যাচ জমা দিয়েছেন। আজহার আলি (৫), বাবর আজম (১৯), ইউনিস খান (০), মিসবা উল হকরা (৪) চূড়ান্ত ব্যর্থ।
তার আগে অস্ট্রেলিয়াকে বড় রান করতে সাহায্য করেন পিটার হ্যান্ডসকোম্ব (১০৫)। নিজের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা পঁচিশ বছরের তরুণ প্রথম দিনের শেষে ৬৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। এ দিন প্রথম সেশনে অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ (১৩০), নিক ম্যাডিনসন (১), ম্যাথু ওয়েড (৭) এবং স্টার্ক (১০) ফিরে যাওয়ার পরে তিনি অস্ট্রেলীয় ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন। চা-বিরতির কিছুক্ষণ পরে কেরিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করে ফেরেন হ্যান্ডসকোম্ব। শেষ উইকেটে ৪৯ জুড়ে নাথান লায়ন (২৯) এবং বার্ড (১৯) অস্ট্রেলিয়াকে ৪২৯ রানে নিয়ে যান। পাকিস্তানের দুই পেসার আমের (৪-৯৭) এবং ওয়াহাব রিয়াজও (৪-৮৯) সফল। কিন্তু দিনের শেষে সেটা ছাপিয়ে শিরোনামে উঠে এসেছে পাক ব্যাটিংয়ের ধস।
এ দিকে, ৯৭ রানে তিনি যে আউট ছিলেন, মেনে নিলেন স্টিভ স্মিথ। আমেরের বলে তাঁর ক্যাচ উইকেটকিপার সরফরাজের হাতে গিয়েছিল। কিন্তু মাঠের আওয়াজের মধ্যে বল যে স্মিথের ব্যাটে লেগেছিল, সেই আওয়াজটা সম্ভবত শুনতে পায়নি পাকিস্তান। তাদের কোনও প্লেয়ারই আউটের আবেদন করেননি। স্মিথও ব্যাট করে যান। পরে অবশ্য তিনি বলেছেন, ‘‘আমি তো অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। ব্যাটে-বলে বেশ জোর আওয়াজ হয়েছিল।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘গ্যালারি থেকে প্রচুর আওয়াজ আসছিল। কিন্তু হ্যাঁ, বল আমার ব্যাটে লেগেছিল। তবে কেউ যখন আবেদন করল না, আমি কেন ক্রিজ ছেড়ে যাব?’’