জোড়া গোলের পরে ডুডুর ডিগবাজি। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
ইস্টবেঙ্গল-৪ (র্যান্টি, ডুডু-২, প্রহ্লাদ)
পুলিশ এসি-১ (নীলকান্ত)
র্যান্টি-ডুডুর যুগলবন্দির দাপট দেখে বেলো রজ্জাক বলে দিলেন, “ওরা আমাদের বিরুদ্ধে গোল করতে পারবে না! র্যান্টি-ডুডুকে আটকে দিয়ে আমরাই চ্যাম্পিয়ন হব।”
বেলোর দল টালিগঞ্জ অগ্রগামী কলকাতা লিগ খেতাব জেতার অন্যতম দাবিদার।
লড়াইতে একটু পিছিয়ে থাকলেও দাবিদার তো মোহনবাগানও।
বেলোর মতো আর্মান্দোর টিমের ফল দেখার অপেক্ষায় ছিলেন মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীও। বলছিলেন, “ফুটবলে অসম্ভব বলে কিছু হয় না। ইস্টবেঙ্গল-টালিগঞ্জ ম্যাচ ড্র হলেই তো আমরা বেরিয়ে যাব। তবে এটা ঠিক, আমাদেরও সব ম্যাচ জিততে হবে। টানা তিন ম্যাচ জিতেছি। আশাবাদী তো হতেই পারি।”
টালিগঞ্জ আর মোহনবাগানের খেতাব জয়ের মরিয়া মনোভাবের খবর যে ডুডুদের কাছে যায়নি তা নয়। বুধবার পুলিশ এসি-র বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে উঠে ডুডু তাই বলে গেলেন, “আমরা জেতার জন্যই খেলি। কলকাতা লিগ আমরাই জিতব।”
টানা পাঁচ বার কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মাঝে লাল-হলুদের আর দু’টি গাঁট— সাই এবং টালিগঞ্জ অগ্রগামী। দু’টি ম্যাচে জিতে গেলে জটিল আর কোনও অঙ্ক নেই সামনে। দেখতে হবে না গোল পার্থক্যও। লিগ টেবলে এ রকম জায়গায় দাঁড়িয়েও আর্মান্দো কোলাসোর কপালের ভাঁজগুলো কিন্তু যাচ্ছে না। কেন?
১) জিতলেও প্রায় সব ম্যাচে গোল হজম করছে ইস্টবেঙ্গল।
২) মাঝমাঠ, রক্ষণের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব।
৩) র্যন্টি-ডুডুকে আটকে দিলে চাপে পড়ে যাচ্ছে পুরো টিম।
৪) কোনও ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করা চলবে নাএই চাপ নিয়ে জুনিয়রদের মাঠে নামতে হচ্ছে।
পাশাপাশি কতগুলো ভাল দিকও অবশ্য আছে লাল-হলুদের।
১) র্যান্টি-ডুডু গোলের মধ্যে আছেন। ভাল ফর্মেও।
২) ডার্বি থেকে টানা চার ম্যাচ জিতেছে ইস্টবেঙ্গল।
৩) প্রহ্লাদ রায়ের মতো জুনিয়াররাও গোল পাচ্ছেন।
৪) পিছিয়ে পড়ার পরও চার গোল হচ্ছে।
এ দিন যেমন হল। পুলিশের নীলকান্ত পারিয়ার গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ইস্টবেঙ্গলকে দেখে মনে হচ্ছিল টিমটার বুঝি সেই ঝাঁঝটাই নেই। ছন্নছাড়া ফুটবল খেলছিলেন সুবোধ-সফররাও। কিন্তু বিরতির কয়েক মিনিট আগেই গোলমেশিনের সেই ঝলক বদলে দিল সবকিছুই! র্যান্টি মার্টিন্সের পা থেকে বেরোল যেন গোলা! প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে। যা আছড়ে পড়ল পুলিশের জালে। এরপর ডুডুও দেখা গেল ছন্দে ফিরেছেন। জোড়া গোল করে বিরতির আগেই ৩-১ করে দিলেন ডুডু ওমাগবেমী। ম্যাচও শেষ।
ইস্টবেঙ্গলের সেই ঝাপটা আর রুখতে পারেনি পুলিশ। তাদের ব্যারিকেড ভেঙে পড়ে সহজেই। বলার মতো ঘটনা অবশ্য পরের অর্ধে একটাই ঘটল—প্রতিশ্রুতিমান প্রহ্লাদ রায়ের গোল।
চার ম্যাচে পাঁচ গোলআপনি কি সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন? প্রশ্ন শুনে ডুডু হাসেন। “সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়াটা লক্ষ্য নয়। চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাই আসল।”
বুঝতে অসুবিধা হয় না, লক্ষ্য বদলে ডুডুর চোখ এখন কলকাতা লিগেই!
ইস্টবেঙ্গল: অভ্র, অভিষেক, গুরবিন্দর, সফর, ধনরাজন, অবিনাশ, শেহনাজ, সুবোধ (অ্যান্টনি), প্রহ্লাদ, ডুডু, র্যান্টি (বার্তোস)।
বৃহস্পতিবারে কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে
মহমেডান : সাই (যুবভারতী, ৪-০০)
কালীঘাট : এরিয়ান (বারাসত)