দুরন্ত প্রত্যাবর্তনে অষ্টমবার সাফ চ্যাম্পিয়ন ভারত
Sunil Chhetri

SAFF Cup 2021: মেসিকে গোলসংখ্যায় ছুঁয়ে নায়ক সেই সুনীল

শুভাশিসের কাঁধে জাতীয় পতাকা। ইগর খুঁজছিলেন সুনীলকে। এই ম্যাচটা যে তাঁর কাছেও ছিল অস্তিত্বরক্ষার লড়াই।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৪৭
Share:

উৎসব: নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে উচ্ছ্বাস সুনীলদের। শনিবার মলদ্বীপে। এআইএফএফ

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ

Advertisement

ভারত ৩ নেপাল ০

ভারতীয় ফুটবলে স্বপ্নপূরণের রাত। জাতীয় দলের হয়ে ৮০তম গোল করে লিয়োনেল মেসিকে ছুঁলেন সুনীল ছেত্রী। নেপালকে হারিয়ে মলদ্বীপে অষ্টমবার ট্রফি জিতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অব্যাহত ভারতের একচ্ছত্র শাসনও।

Advertisement

মলদ্বীপের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় বাধ্য হয়ে গ্যালারিতে বসেছিলেন কোচ ইগর স্তিমাচ। সঙ্গী আর এক নির্বাসিত শুভাশিস বসু। রেফারির শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে মাঠে ঢুকে পড়লেন তাঁরাও।

শুভাশিসের কাঁধে জাতীয় পতাকা। ইগর খুঁজছিলেন সুনীলকে। এই ম্যাচটা যে তাঁর কাছেও ছিল অস্তিত্বরক্ষার লড়াই। মাঠে নেমেই ভারত অধিনায়ককে বুকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি। গুরপ্রীত সিংহ সাঁধু কাঁধে তুলে নিলেন অনুজ সতীর্থ রহিম আলিকে। গ্যালারিতে তখন হাজার খানেক ভারতীয় সমর্থক উল্লাসে মাতোয়ারা। গ্যালারির ফেন্সিং টপকে মাঠে নেমে তাঁরা সুনীলকেই খুঁজছিলেন নিজস্বী তোলার জন্য।

কিন্তু সুনীল গেলেন কোথায়? টিভিতে দেখা গেল, তিনি তখনও কোচের আলিঙ্গন থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারেননি। সুনীলই তো ভগীরথ হয়ে ভারতকে অষ্টমবার ট্রফি জয়ের রাস্তা দেখালেন।

ভারতের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই রক্ষণ মজবুত করে খেলতে শুরু করেন নেপালের ফুটবলারেরা। এই কারণেই প্রথমার্ধে প্রায় ৭০ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখেও গোল করতে পারেননি সুনীলরা। সমস্যা আরও বাড়ে প্রবল বৃষ্টিতে মাঠের অবস্থা বেহাল হয়ে যাওয়ায়। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও চার মিনিটে ভারত এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। ইয়াসির মহম্মদের দূরপাল্লার শট বাঁচান নেপালের গোলরক্ষক কিরণ লিম্বু। বেরিয়ে আসা বল গোল লক্ষ্য করে ফের শট মারেন অনিরুদ্ধ থাপা। অবিশ্বাস্য দক্ষতায় তা-ও আটকান কিরণ। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক আগে নেপালের পেনাল্টি বক্সের মধ্যে থেকে সুনীল ক্রসবারের উপর দিয়ে বল উড়িয়ে দেন।

প্রথমার্ধে গোল করতে না পারলেও সুনীলরা মাঠ ছাড়েন কিছুটা স্বস্তি নিয়ে! কারণ, বৃষ্টি থেমে গিয়েছিল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই দেখা গেল বদলে যাওয়া ভারতকে। ম্যাচের শুরু থেকেই নেপালের প্রায় সব ফুটবলারই রক্ষণে নেমে যাচ্ছিলেন। ইগর বুঝে গিয়েছিলেন, দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে দুই প্রান্ত দিয়ে আক্রমণের ঝড় তুলতে না পারলে নেপালের রক্ষণে ফাঁটল ধরানো সম্ভব নয়। ডিফেন্ডার প্রীতম কোটালকেও তিনি বাড়তি দায়িত্ব দেন আক্রমণে সাহায্য করার জন্য।

নেপালের ফুটবলারেরা ভারতীয় দলের কোচের এই চালটাই বুঝতে পারেননি। ৪৯ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে ঝড়ের গতিতে উঠে বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে প্রীতমই বল ভাসিয়ে দেন। সুনীলের অনবদ্য হেড মাটিতে পড়ে গোলে ঢুকে যায়। সেই সঙ্গে তিনি স্পর্শ করেন মেসির ৮০টি গোল করার নজিরও। ৬৮ মিনিটে তাঁর শট নেপালের গোলরক্ষক না বাঁচালে আর্জেন্টিনীয় কিংবদন্তিকে টপকেও যেতে পারতেন সুনীল। ম্যাচের পরে তিনি বলেন, ‘‘এ বার সাফ জয়ের তাৎপর্যই আলাদা। কারণ, প্রথম দু’টি ম্যাচ আমরা ভাল খেলতে পারিনি।’’ প্রতিযোগিতার ও ফাইনালের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার পাওয়ার পাশাপাশি সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছেন ভারত অধিনায়ক।

সুনীলের গোলটাই নেপালের যাবতীয় পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়। ৫০ মিনিটে ইয়াসিরের পাস থেকে নিখুঁত শটে ২-০ করেন সুরেশ। জোড়া ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল নেপাল। ৭৭ মিনিটে রোহিত চন্দ্রের হেড গুরপ্রীতকে পরাস্ত করে ক্রসবারে লাগে। পরিবর্ত হিসেবে নেমে ৩-০ করেন সাহাল আব্দুল সামাদ।

সাফে রাজা ভারতই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন