বন্যার মতো চোটও কারও জীবনে স্বাগত নয়। এর জেরে সব কিছু ওলটপালট হয়ে যায়। বাড়িঘর নষ্ট হয়। মানুষের সম্পদ জলে ধুয়ে যায়। সেখান থেকে সব কিছু নতুন করে গড়ে তোলা খুব কঠিন।
ভারতীয় দলের সামনেও এখন এ রকম কয়েকটা প্রশ্ন ঝুলছে। যদিও আমরা সবাই জানি, এটা রিজার্ভ বেঞ্চের শক্তি পরখ করে নেওয়ার একটা সুযোগও। মাঠে নামার বদলে এখন লোকেশ রাহুল, শিখর ধবন আর ভুবনেশ্বর কুমার ক্লিনিকে ঘুরছে।
মরসুমের এত শুরুর দিকেই। মাত্র আট দিনের সিরিয়াস ক্রিকেট খেলে। তবে এর জন্য টিম ফিজিওর নিজেকে দোষী ভাবার কোনও কারণ নেই। চোট কোনও বাঁধা গত মেনে হয় না। খুব সতর্ক পরিবেশেও তা আপনাকে ধাক্কা দিয়ে চলে যেতে পারে। আর এক দিক দিয়ে ভাবলে ভারতীয় দলের গভীরতার জন্য এটা সুখবরও হয়ে যেতে পারে। কারণ এই ঠাসা মরসুমে বিরাট কোহালিদের সুটকেস সম্বল করে দিন কাটাতে হবে। গৌতম গম্ভীর নিজেকে প্রমাণ করার একটা সুযোগ পেতে পারে বলে মনে হচ্ছে। বোলিংয়ে অমিত মিশ্র আর শার্দূল ঠাকুরকে খেলানোর প্রলোভন থাকছে যে হেতু সিরিজ জেতা হয়ে গিয়েছে।
ভারত এখন ছ’জন ব্যাটসম্যান খেলাচ্ছে। না হলে অমিত মিশ্র কিন্তু নিয়মিত প্রথম এগারোয় থাকত। বল আর ব্যাট হাতেও ওর অবদান কী, সেটা নতুন করে বলার দরকার নেই। ঠাকুরও এমন একজন পেসার যার উপর সবার নজর রয়েছে। ও বেশ ধারালো, ভয়ঙ্কর বোলার। ভাল গতি এত বিরল একটা জিনিস যে, ক্রিকেট পণ্ডিতরা ঠিকই বলেন— তাকে খুব বেশি দিন লুকিয়ে রাখা উচিত নয়। আর এখানে তো ভারতের হারানোর কিছুই নেই। বরং পাওয়ার অনেক কিছু দেখতে পাচ্ছি।
ক্রিকেট উৎসাহী বা ঐতিহাসিকরা ইনদওর স্টেডিয়াম ভালই চেনেন। কিন্তু টেস্ট কেন্দ্র হিসেবে মাঠটাকে দেখার বেশ আগ্রহ হচ্ছে। এই শহরের দুই কিংবদন্তি সিকে নায়ডু আর মুস্তাক আলি আমাদের সবার নায়ক। ক্রিকেটে হোলকার মানে তো প্রায় আমাদের সবার পূর্বপুরুষ। স্বাধীনতার আগের এবং পরের কয়েকটা দশকে ওই পরিবারটাই আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের কারিগর। ভারতীয় ক্রিকেটের ওঁরাই সত্যিকারের রাজপরিবার।
তবে অতিথিদের এই মাঠ কতটা স্বাগত জানাবে, সন্দেহ আছে। এই মাঠে একটা ওয়ান ডে-তে বীরেন্দ্র সহবাগের ডাবল সেঞ্চুরি আছে। তবে ও রকম ব্যাটিং সহায়ক উইকেট এই টেস্ট ম্যাচে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং এমনিতেই এই সিরিজে ওদের ভোগাচ্ছে। ইনদওরে তা আরও লজ্জায় পড়তে পারে।
বলে রাখা ভাল, আমি কিন্তু ওদের অসম্মান করছি না। ভবিষ্যদ্বাণীও করছি না। কিন্তু সিরিজে নতুন কিছু করতে গেলে নিউজিল্যান্ডের একাধিক ভাল পার্টনারশিপ দরকার। দুটো ইনিংসেই। দুশো বা তার আশেপাশে স্কোর করলে চলবে না। ওদের একশোর বেশি ওভার ব্যাট করতে হবে। নিউজিল্যান্ডের সম্মানের জন্য লড়াই করার সময় এসেছে।