Sports News

রাজ্য টিটি নিয়ে সোমনাথ বনাম পার্থ

টাকা নিয়ে বাংলার টেবল টেনিস দলে নিয়মিত খেলোয়াড় ঢোকানো হয়, আনন্দবাজারে প্রকাশিত এই খবরে কিছুদিন আগেই উত্তাল হয়েছিল রাজ্যের ক্রীড়ামহল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:০১
Share:

প্রাপ্তিকে নিয়ে বিতর্ক।

টাকা নিয়ে বাংলার টেবল টেনিস দলে নিয়মিত খেলোয়াড় ঢোকানো হয়, আনন্দবাজারে প্রকাশিত এই খবরে কিছুদিন আগেই উত্তাল হয়েছিল রাজ্যের ক্রীড়ামহল।

Advertisement

সেই কলঙ্কের রেশ মিটতে না মিটতেই আবার নতুন ঝামেলা। রাজ্যের এক নম্বর খেলোয়াড় প্রাপ্তি সেনকে বাদ দিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে নয় নম্বর কৌশানি নাথকে জুনিয়র বাংলা দলে ঢোকানো নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। আনন্দবাজারেই প্রকাশিত খবরের জেরে পরিস্থিতি এ বার এতটাই ঘোরালো যে, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ‘বেনিয়ম’ আটকাতে হস্তক্ষেপ করতে পারেন বলে শুক্রবার ইঙ্গিত দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থবাবু শুক্রবার বলে দিলেন, ‘‘টিটি সংস্থার এই বেআইনি এবং অন্যায় কাজকর্ম রাজ্য সরকার বরদাস্ত করবে না। একটা ছোট মেয়ে বার্ষিক পরীক্ষার জন্য শিবিরে যেতে পারেনি বলে বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ কোচেরা সবাই আমাকে বলেছেন, মেয়েটি নামলেই বাংলার একটা সোনার পদক নিশ্চিত। ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে আমি কথা বলব। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীও এই ঘ়টনায় হস্তক্ষেপ করবেন। দরকার হলে আমরা সর্বভারতীয় সংস্থার সঙ্গে কথা বলে মেয়েটিকে সরাসরি পাঠাব।’’

চমকপ্রদ ব্যাপার হল, যে ক্রীড়া সংস্থার কাজের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে রাজ্য সরকার তাঁর প্রেসিডেন্ট প্রাক্তন লোকসভা স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, তিন বছর আগে নিজের দলের দুই মন্ত্রীকে থামিয়ে রাজ্য টিটি সংস্থার সর্বোচ্চ পদে সোমনাথবাবুকে বসানোর ব্যাপারে বড় ভূমিকা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। পার্থবাবু যে তাঁকে ফোন করেছিলেন সেটা স্বীকার করে নিয়েছেন সোমনাথবাবু। এ দিন সন্ধ্যায় তিনি বললেন, ‘‘উনি আমাকে ফোন করেছিলেন। ওঁকে বলেছি, আমি অসুস্থ। সব দেখতে পারি না। যাঁরা এটা করেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলব। নিশ্চয়ই সমস্যা আছে।’’

Advertisement

বরোদায় জাতীয় জুনিয়র টিটি শুরু হচ্ছে ৬ জানুয়ারি। সেই দলে সুযোগ পেয়েছিল নবম শ্রেণীর ছাত্রী প্রাপ্তি সেন। টিটি-তে রাজ্য চ্যাম্পিয়ন এবং নিজের বিভাগে দেশের দু’নম্বর খেলোয়াড় প্রাপ্তি। কিন্তু স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার জন্য প্রথম দিন যোগ দিয়ে আর শিবিরে আসতে পারেনি বেহালা পর্ণশ্রীর মেয়েটি। চিঠি দিয়ে সেটা রাজ্য সংস্থাকে জানানো সত্ত্বেও তাকে বাদ দেওয়া হয় বাংলা দল থেকে। তার বদলে চার জনকে টপকে র‌্যাঙ্কিংয়ে নয় নম্বর কৌশানি নাথের নাম পাঠানো হয় সর্বভারতীয় টিটি সংস্থার কাছে। এ জন্য কোনও নির্বাচনী বৈঠকও ডাকা হয়নি প্রথমে। কিন্তু বিতর্ক শুরু হওয়ায় নিজেদের সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিতে শুক্রবারই সভা ডাকা হয়। মেয়ে এ ভাবে বাদ যাওয়ায় প্রাপ্তির বাবা-মা যোগাযোগ করেন স্থানীয় বিধায়ক ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবুর সঙ্গে। যিনি এ দিন বললেন, ‘‘আমি সোমনাথদাকে ফোন করে বলেছিলাম, পড়া ও খেলা দুটোই দরকার। প্রাপ্তি পরীক্ষা দিচ্ছিল। না হলে তো শিবিরে যেত। ওকে দলে নিলে বাংলার পদক আসবে। রাজ্যেরই সুনাম হবে।’’

রাজ্য টিটি সংস্থার সচিব ও সোমনাথাবাবুর জামাতা দেবীপ্রসাদ বসুরও আপাতত মুখে কুলুপ। শুধু বললেন, ‘‘আমি এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দেব না।’’ এ দিকে ‘অন্যায়ের’ প্রতিবাদে সর্বভারতীয় টিটি সংস্থার সচিব ধনরাজ চৌধুরীকে চিঠি দিয়েছিলেন বিওএ সচিব স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরে ধনরাজ নাকি লিখেছেন, তিনি বাংলা টিটি সংস্থাকে এই সিদ্ধান্ত বদলানোর জন্য বলবেন। শিক্ষামন্ত্রীর তোপ, বিওএ-র প্রতিবাদ সত্ত্বেও টিটি কর্তারা অবশ্য একের বদলে নয়-কে সুযোগ করে দিতে মরিয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন