জুটি: ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে মঙ্গলবার খালিদ ও সুভাষ। নিজস্ব চিত্র
মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য-কে আই লিগের সময় মাঠে নামতে দেননি। সুভাষ ভৌমিক-কে সুযোগ দেবেন তো?
প্রশ্ন করার সঙ্গেই খালিদ জামিল বলে উঠলেন, ‘‘এর কোনও জবাব দেব না।’’ আর ঠিক তখনই নাটকীয় ভঙ্গিতে সুভাষ পিঠে চাপড় মেরে খালিদের কাছে জানতে চাইলেন, ‘‘কী রে, আমাকে মাঠে নামতে দিবি না?’’ খাঁচায় বন্দি বাঘের ভঙ্গি নিয়ে ইস্টবেঙ্গল কোচ সম্মতিসূচক মাথা নাড়লেন।
সুপার কাপের মতো এক বা দুই ম্যাচের সংক্ষিপ্ততম টুনার্মেন্টের দায়িত্ব জীবনে প্রথম বার নেওয়ার পিছনে অঙ্কটা কী? ইস্টবেঙ্গলের নতুন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষের জবাব, ‘‘পর্দার পিছনে আরও অনেক কারণ আছে। ইস্টবেঙ্গল তো ফুটবলার ও কোচ হিসাবে আমাকে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। সেই বৃত্তটা সম্পূর্ণ হল।’’ কিন্তু গুঞ্জন তৈরি হল, তা হলে পরের মরসুমে কলকাতা লিগের দায়িত্বটাও পাচ্ছেন সুভাষ-ই। পর্দার পিছনের রহস্য হয়তো সেটাই।
মঙ্গলবার বিকেলে ক্লাব তাঁবুতে কর্তাদের সঙ্গে যে আলোচনাই হোক সুভাষের, নয় বছর পর লাল-হলুদে ফিরে প্রথম দিনই ‘তুকতাক কোচ’কে কার্যত ‘পকেটে’ পুরে ফেললেন তিনি। তাঁর ব্যক্তিত্বের ছটায়, আরোপিত কৌশলে। সাংবাদিক সম্মেলনে সুভাষকে দেখে মনে হচ্ছিল তিনিই চিফ কোচ, খালিদ ছাত্র। যা চাইছিলেন কর্তারা।
কখনও লাল-হলুদ টিডি-কে বলতে শোনা গেল, ‘‘ফুটবলার ও কোচিং জীবনে এ রকম কঠিন পরিস্থিতিতে অনেক বার পড়েছি। এ বারও একটা চ্যালেঞ্জ নিলাম।’’ কখনও চমকে দিয়ে সুভাষকে হেসে বলতে শোনা গেল ‘‘খালিদের সহকারী হয়ে কাজ করতেও আমি রাজি। পদে কী এসে যায়? কাজটাই তো আসল।’’ আবার পরমুহূর্তে আবেগ সংবরণ করে নয় বছর পর লাল-হলুদে ফেরা সুভাষের বাস্তবোচিত মন্তব্য, ‘‘চেয়ারে বসে কাজ করা যায় না। মাঠে নেমেই কাজ করব। যে ফুটবলাররা আছে তাদের নিয়েই জেতার চেষ্টা করব। সময় কম। কাজটা কঠিন। তবুও হাল ছাড়ার লোক আমি নই।’’
সুপার কাপের আগে নতুন দায়িত্ব পেয়ে সুভাষ যখন কথার তুবড়ি ছোটাচ্ছেন, তখন খালিদ তাঁর পাশে জড়সড় হয়ে বসে। টিডি হিসাবে মাথার উপর সুভাষকে মেনে নিচ্ছেন তা হলে? প্রশ্ন শুনে খালিদের মন্তব্য, ‘‘যা হচ্ছে ভালর জন্যই হচ্ছে। গুড নিউজ। সুভাষদা শ্রদ্ধেয় ও সফল কোচ।’’ সুপার কাপে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ম্যাচ ৫ এপ্রিল।