ভরসা: সুপার কাপ ফাইনালে বেঙ্গালুরু তাকিয়ে সুনীলের দিকে। ফাইল চিত্র
প্রায় এক বছর আগে চোটের কারণে কটকে ফেডারেশন কাপ ফাইনালে খেলতে পারেননি তিনি। মোহনবাগানকে হারিয়ে বেঙ্গালুরু এফ সি-র চ্যাম্পিয়ন হওয়া দেখেছিলেন মাঠের বাইরে বসে। সেই যন্ত্রণা এখনও কাঁটার মতো বিঁধে রয়েছে সুনীল ছেত্রীর।
তাঁর নেতৃত্বে আইএসএলে অভিষেকের বছরে ফাইনালে উঠে চমকে দিয়েছিল বেঙ্গালুরু। কিন্তু চেন্নাইয়িন এফ সি-র বিরুদ্ধে হেরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি সুনীলের। আজ, শুক্রবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে সুপার কাপ জিতেই সব যন্ত্রণা ভুলতে চান বেঙ্গালুরু অধিনায়ক।
বৃহস্পতিবার ভুবনেশ্বর থেকে আনন্দবাজারকে সুনীল বললেন, ‘‘ফাইনালে খেলতে না পারার চেয়ে হতাশার কিছু হয় না। মাঠের বাইরে বসে থাকতে আমি একদম পছন্দ করি না। এমনকী, পরিবর্ত হিসেবে নামাও আমার কাছে যন্ত্রণার।’’ যোগ করেন, ‘‘গত মরসুমে ফেডারেশন কাপ ফাইনালে খেলতে না পারার কষ্ট কিছুটা কমেছিল দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায়। কিন্তু আইএসএলে দুর্দান্ত শুরু করেও চ্যাম্পিয়ন হতে না পারার আক্ষেপ দূর হচ্ছে না। তবে আরও একটা ফাইনাল খেলার সুযোগ পাচ্ছি। এ বার খালি হাতে ফিরতে চাই না।’’
সেমিফাইনালে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে পিছিয়ে গিয়েও দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছিল বেঙ্গালুরু। ৪-২ গোলে জেতা ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছিলেন নিকোলাস ফেদর ফ্লোরেস (মিকু)। একটি গোল করেছিলেন সুনীল। ফাইনালে প্রতিপক্ষ কলকাতার আর এক প্রধান ইস্টবেঙ্গল। কারা বেশি শক্তিশালী? সুনীলের ব্যাখ্যা, ‘‘এই মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও ম্যাচ খেলিনি। সেমিফাইনালে ওরা খেলেছিল একাধিক সমস্যায় বিপর্যস্ত এফ সি গোয়ার বিরুদ্ধে। তাই দু’টো দলের মধ্যে তুলনা করা উচিত নয়। তবে ইস্টবেঙ্গল ভাল দল। ফুটবলাররা সবাই অভিজ্ঞ। তাই ফাইনালে লড়াইটা কঠিন।’’ সুনীল অবশ্য মোহনবাগানকেও শক্তিশালী বলছেন। যদিও সেমিফাইনালে দিপান্দা ডিকাদের চার গোলে চূর্ণ করেই ফাইনালে উঠেছে বেঙ্গালুরু। সুনীলের কথায়, ‘‘মোহনবাগানের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে আমরা নিজেদের ছাপিয়ে গিয়েছিলাম। তাই পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়িনি। বিশ্বাস করেছিলাম, আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব। এই মানসিকতাই আমাদের ম্যাচটা জিততে সাহায্য করেছিল।’’
সুনীল শুধু বেঙ্গালুরুর অধিনায়কই নন, সতীর্থদের প্রধান পরামর্শদাতাও। গত বছর চোটের জন্য ফেডারেশন কাপে খেলতে পারেননি। কিন্তু ফাইনালের আগে সতীর্থদের উজ্জীবিত করতে কটক পৌঁছে গিয়েছিলেন। সুপার কাপ ফাইনালের আগে কী বললেন মিকু, উদান্ত সিংহদের?
সুনীল বললেন, ‘‘ওরা সবাই জানে ফাইনালের গুরুত্ব। তাই আলাদা করে কাউকে উজ্জীবিত করার প্রয়োজন নেই।’’ তবে সতীর্থদের তিনি আইএসএলের ফাইনালের উদাহরণ দিয়ে সতর্ক করেছেন। সুনীল বললেন, ‘‘অতীতের ম্যাচগুলোয় যে ভুল-ত্রুটি করেছি, তা শুধরে নিতে হবে।’’
মোহনবাগানের বিরুদ্ধে লাল কার্ড দেখায় ফাইনালে খেলতে পারবেন না ডিফেন্ডার নিশু কুমার। সুনীলের দাবি, তাঁরা একেবারেই উদ্বিগ্ন নন। বললেন, ‘‘নিশু অবশ্যই ভাল ফুটবলার। কিন্তু আমরা দল হিসেবে খেলি। তাই বিশেষ কেউ খেলতে না পারলে আমরা ভেঙে পড়ি না। ওর অভাব পূরণ করার মতো ফুটবলার আমাদের দলে অনেক আছে।’’