সতর্ক: কোহালির চোট নিয়ে সাবধানতা। ফাইল চিত্র
শেষ পর্যন্ত কাউন্টি খেলা হচ্ছে না বিরাট কোহালির। এ নিয়ে নানা রকম তর্ক-বিতর্ক দেখা দিলেও চোটের জন্য সতর্কতা হিসেবেই নিজেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন ভারত অধিনায়ক। যদিও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব উদ্বেগজনক চোট কোহালির নেই।
ভারতীয় বোর্ড থেকে বৃহস্পতিবার জানানো হয় যে, আইপিএলে গত ১৭ মে সানরাইজার্স বনাম আরসিবি ম্যাচে ঘাড়ে চোট পান কোহালি। ম্যাচটি বেঙ্গালুরুতে চিন্নাস্বামীতেই ছিল। সেই চোটের ব্যাপারেই সাবধানতা অবলম্বনের জন্য কাউন্টি থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত সচিব অমিতাভ চৌধুরি জানাচ্ছেন, আগামী ১৫ জুন কোহালির ফিটনেস পরীক্ষা হবে। তার আগে কোনও ম্যাচ খেলার মতো অবস্থায় তিনি থাকবেন না।
কোহালিকে নিয়ে জল্পনা ছড়ায় যে, তাঁর নাকি ‘স্লিপ্ড ডিস্ক’ ধরা পড়েছে। সেই কারণে তড়িঘড়ি মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যেতে হয় বুধবার। তবে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে গেলেও মারাত্মক কোনও চোট ধরা পড়েনি তাঁর। ‘স্লিপ্ড ডিস্ক’-এর খবরও সত্যি নয় বলেই জানা গিয়েছে। তবে টানা খেলে যাওয়া কোহালিকে যে সামনের দীর্ঘ মরসুমের কথা ভেবে বিশ্রাম নিতে হবে, সেটা তাঁর ঘনিষ্ঠমহলও মেনে নিচ্ছে। ঘাড়ে লাগা চোট খুব গুরুতর না হলেও দীর্ঘ মরসুমের কথা ভেবেই কাউন্টিতে খেলতে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে তাঁকে।
গত এক বছরে ২৯টি টেস্ট এবং ৩২টি ওয়ান ডে খেলেছেন কোহালি। ভারতের হয়ে গত এক বছরে ১৮টি টি-টোয়েন্টির মধ্যে ৯টিতে খেলেছেন। মাঠের মধ্যে সব সময়ই যে-হেতু তিনি খুব বেশি তীব্রতা নিয়ে খেলেন, তাঁর ধকলের পরিমাণও অন্যদের চেয়ে বেশি বলে মনে করা হয়। এর সঙ্গে আইপিএলের নিংড়ে নেওয়া সূচিও যোগ করতে হবে। সব রকম ক্রিকেট ধরলে গত এক বছরেই শুধু কোহালি খেলেছেন ৬১টি ম্যাচ।
ভারতীয় ক্রিকেটে গুরুত্বপূর্ণ মহলে কারও কারও সংশয় হচ্ছিল, এর পর কাউন্টি খেলতে যাওয়াটা না উল্টে ক্ষতি করে। একটানা ক্রিকেটে কোহালির শরীর এবং মন দু’টোই না ক্লান্ত হয়ে ওঠে। তখন ইংল্যান্ডের দীর্ঘ সফরে তরতাজা ভারত অধিনায়ককে পাওয়া নিয়েই সংশয় দেখা দেবে। জুনেই সারের হয়ে কাউন্টিতে খেলার কথা ছিল কোহালির। সেই কারণে তিনি আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আফগানদের অভিষেক টেস্টেও না খেলার সিদ্ধান্ত নেন। ইংল্যান্ডে গিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এর আগে ব্যর্থ হয়েছেন কোহালি। সেই ইতিহাসকে পাল্টানোর জন্যই তিনি কাউন্টি খেলে নিজেকে এ বার তৈরি করতে চেয়েছিলেন। যে সিদ্ধান্তের পক্ষে এবং বিপক্ষে দু’রকমই মতই ছিল। কেউ কেউ বলেছিলেন, টেস্ট ম্যাচ ছেড়ে কাউন্টি খেলতে গিয়ে ঠিক করছেন না তিনি। আবার অনেকে স্বাগত জানিয়ে বলেছিলেন, টি-টোয়েন্টির যুগেও টেস্ট ক্রিকেটকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি যে, ইংল্যান্ড সফরে ভাল করবেন বলে কাউন্টি খেলতে যাচ্ছেন। সে সব তর্ক-বিতর্কই অবশ্য থেমে গেল বৃহস্পতিবার।
বোর্ডের থেকে জানানো হয়েছে, কোহালি বেঙ্গালুরুর জাতীয় অ্যাকাডেমিতে গিয়ে রিহ্যাব করবেন। বোর্ডের ট্রেনার এবং ফিজিয়োরা তা জরিপ করবেন। এর মধ্যেই আরও একটি ব্যর্থ মরসুমের জন্য আরসিবি ভক্তদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন কোহালি। একই সঙ্গে প্রতিজ্ঞা নিয়ে বলেছেন, সামনের বছর আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরবেন তাঁরা!