বিশ্বকাপ জয় ছিল সচিনকে উপহার
Virat Kohli

অনু প্রেমেই বিরাট বদল

অনুষ্কা এসে আমার জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে। অনেক কিছু নতুন করে দেখতে শিখিয়েছে। আগে খুব চাপা স্বভাবের ছিলাম।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২০ ০৪:১৫
Share:

জুটি: অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জিতে এ ভাবেই মাঠে ঘুরছিলেন বিরুষ্কা। ফাইল চিত্র

তাঁদের প্রেম কাহিনি এবং নাটকীয় বিয়ে যে কোনও বলিউড সিনেমাকে টেক্কা দেবে। তেমনই বাইশ গজে তাঁর ব্যাটিং জায়গা করে নিয়েছে ক্রিকেট রূপকথায়। সতীর্থ মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অনুষ্কা শর্মা থেকে নিজের ব্যাটিং— সব কিছু নিয়েই অকপট বিরাট কোহালি। ভারত অধিনায়ক আরও জানিয়েছেন, ২০১২ সালের আইপিএলে কী ভাবে চার-পঁাচ দিনের মধ্যে গোটা চল্লিশেক টফি পাগলের মতো খেয়ে ফেলতেন তিনি। এর পরে নিজেকে বদলে নেওয়ার পালা শুরু। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে সেই

Advertisement

সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ...

অনুষ্কার প্রভাব: অনুষ্কা এসে আমার জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে। অনেক কিছু নতুন করে দেখতে শিখিয়েছে। আগে খুব চাপা স্বভাবের ছিলাম। সে রকম বাস্তববাদীও ছিলাম না। কিন্তু অনুষ্কাকে জীবনসঙ্গী পেয়ে দেখলাম, ওর দৃষ্টিভঙ্গিটা আলাদা। যা আমাকে ভীষণ প্রভাবিত করে। জীবনে অনুষ্কা আসার পরে আমার মানসিকতাই বদলে যায়। মানুষ হিসেবেও আমাকে বদলে দিয়েছে ও। আগে একগুঁয়ে ছিলাম, অনেক কিছুই বুঝতাম না। কিন্তু অনুষ্কা আমাকে বৃহত্তর ক্যানভাসটা বুঝতে শিখিয়েছে। যেমন একজন খেলোয়াড় হিসেবে কী ভাবে সবার সামনে উদাহরণ হয়ে ওঠা উচিত। এই সব কিছুই বোঝা সম্ভব হয়েছে অনুষ্কার জন্য। ওর মতো জীবনসঙ্গী পাওয়াটা একটা আশীর্বাদ আমার কাছে। আমি কৃতজ্ঞ।

Advertisement

আরও পড়ুন: শেষের দিকে..মেনে নিচ্ছেন ফেডেরার, শুরু অবসর-চর্চা

বোলার-শাসনের মন্ত্র: বোলারের সব কিছু আমি খুঁটিয়ে দেখি। যদি সেই বোলার বিশেষ কোনও একটা বল করে থাকে, তা হলে মনে করার চেষ্টা করি, ডেলিভারির আগে ওর শরীরী ভাষা কী রকম ছিল। রান আপটা একটু অন্য রকম ছিল বা কব্জিটা অন্য ভাবে ব্যবহার করেছিল কি না। যখন দেখি, যেখানে আশা করেছ্লিাম, বোলার বলটা সেখানেই ফেলেছে আর আমি সেটা বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছি, তখন দারুণ একটা অনুভূতি হয়। তবে একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে। যদি খুব ভয় পেয়ে থাকি, তা হলে এ সব কিছুই খেয়াল করতে পারব না। তখন মনে হবে, কিছুতেই আউট হওয়া চলবে না। ভয় দূর করতে পারলে সামনে একটা লক্ষ্যই থাকবে— শাসন করা।

মায়াঙ্ককে টেস্টে সুযোগ: ঘরোয়া ক্রিকেটে তোমার (মায়াঙ্ক আগরওয়াল) রানের চেয়েও আমাকে প্রভাবিত করেছিল তোমার অনমনীয় চরিত্র। যে কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মেলবোর্ন টেস্টে তোমাকে সুযোগ দিই (অভিষেক ইনিংসেই হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন মায়াঙ্ক)। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে তোমার ব্যাটিং দেখেছিলাম। তখনও তুমি আন্তর্জাতিক বোলারদের আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলেছ। ওদের পাল্টা আক্রমণ করেছ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও তুমি খুব আধিপত্য নিয়ে ব্যাট করো। যেটা তোমার একটা চারিত্রিক বৈশিষ্ট। যা আমাকে প্রভাবিত করেছিল। আমি তো বলব, রানের চেয়েও তোমার চরিত্র তোমাকে আলাদা করে দিয়েছে। জানতাম, কোনও চাপ না নিয়ে ভয়ডরহীন ব্যাট করে যাবে।

সচিনকে বিশ্বকাপ উপহার: ২ এপ্রিলের ওই রাতে ওয়াংখেড়েতে বিশ্বকাপ জেতার পরে বাঁধনহারা উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছিলাম আমরা। পাজিকে (সচিন তেন্ডুলকর) ঘিরে আবেগে ভেসেযাই আমরা। আমরা জানতাম, এটাই ওর শেষ সুযোগ বিশ্বকাপ জেতার। এত দিন ধরে দেশের প্রতিনিধিত্ব করে এসেছে ক্রিকেট মাঠে, দেশকে এত ম্যাচ জিতিয়েছে। আমাদের সবার কাছে প্রেরণা হয়ে উঠেছিল সচিন তেন্ডুলকর। তাই তো ওই বিশ্বকাপ জয়টা আমাদের তরফ থেকে একটা উপহার ছিল সচিনের জন্য। এর আগে পর্যন্ত ও শুধু দিয়ে গিয়েছে। সে দিন ওর হাতে কিছু তুলে দেওয়া গিয়েছিল। একটা পূর্ণতা এসেছিল।

আরও পড়ুন: ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব নিশ্চিত নন ওয়ার্নার

ধোনির জায়গায় কিপার: কখনও মাহি ভাইকে জিজ্ঞেস করে দেখো, কেন আমি ওর জায়গায় কিপিং করেছিলাম (২০১৫ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটা ম্যাচে)। মাহি ভাই এসে বলে, ‘ইয়ার, দু’তিন ওভার একটু কিপিং করে দে।’ আমি কিপিং করার পাশাপাশি ফিল্ডিংও সাজিয়েছিলাম। তখন বুঝেছিলাম, মাহি ভাইকে কত কী করতে হয়। কিপিং করার সময় একটু ভয় লাগছিল। উমেশ যাদব তখন পুরো গতিতে বল করছিল। ভয় পাচ্ছিলাম, আমার নাকে না লেগে যায়। মনে হয়েছিল, হেলমেট পরে ফেলি। কিন্তু তার পরে ভাবলাম, ব্যাপারটা খুব লজ্জার হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন