কেনদের বিশ্রাম দেওয়া নিয়ে বিতর্কের ঝড়

সাউথগেট বলেছেন, ‘‘আগামী সপ্তাহে যাই হোক, বেলজিয়াম ম্যাচে আমার সিদ্ধান্তকে সঠিক বলেই মনে করি। জানি শেষ ষোলোয় জিততে পারলেই লোকে বলবে আমার সিদ্ধান্তে ভুল ছিল না।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৮ ০৪:১৭
Share:

বেলজিয়াম ম্যাচে রিজার্ভ বেঞ্চে কেন-লিংগার্ড। ছবি: টুইটার

বিশ্ব ফুটবলে নতুন বিতর্ক। ইংল্যান্ড ইচ্ছে করেই নাকি বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে দুর্বল দল নামিয়েছে। যাতে ম্যাচটা হেরে নক-আউটে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে এড়ানো যায়।

Advertisement

এখন যা অবস্থা তাতে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়াকে হারাতে পারলে শেষ আটে ইংল্যান্ড খেলবে সুইৎজারল্যান্ড-সুইডেন ম্যাচের বিজয়ীর সঙ্গে।

ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁর দাবি, নক-আউটে যে কোনও ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ফুটবলারদের সুস্থ থাকাটা সব চেয়ে জরুরি। তাই তিনি হ্যারি কেন, দালে আলি-সহ প্রথম একাদশের বেশির ভাগ ফুটবলারকে খেলাননি বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে।

Advertisement

সাউথগেট বলেছেন, ‘‘আগামী সপ্তাহে যাই হোক, বেলজিয়াম ম্যাচে আমার সিদ্ধান্তকে সঠিক বলেই মনে করি। জানি শেষ ষোলোয় জিততে পারলেই লোকে বলবে আমার সিদ্ধান্তে ভুল ছিল না। কিন্তু আমি অনেক কিছু ভেবেই প্রথম একাদশের সবাইকে খেলাইনি। নক-আউটে সুস্থ, তাজা এগারো জনকে আমার দরকার।’’

আরও পড়ুন: একা রোনাল্ডোই এগিয়ে রাখছেন পর্তুগালকে

ফুটবল পণ্ডিতেরা বলছেন, সাউথগেট অনেকটা এগিয়ে ভেবে ফেলেছেন। না হলে বেলজিয়মাকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে অপেক্ষাকৃত দুর্বল জাপানকে পেত ইংল্যান্ড। সেক্ষেত্রে তাদের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলাটা অনেক সহজ হয়ে যেত। এখন হ্যারি কেনদের হারাতে হবে কলম্বিয়াকে। যারা যে কোনও দিন অসাধারণ ফুটবল খেলে দিতে পারে। সাউথগেট অবশ্য এই ধরনের কথাবার্তাও মানছেন না। ‘‘বেলজিয়ামের বিরুদ্ধেও জিততে নেমেছিলাম। সঙ্গে এটাও মাথায় রেখেছি, নক-আউটের লড়াইটা আরও বড়। তাই আমার প্রধান ফুটবলাররা যাতে সুস্থ থাকে সেটা দেখতে হয়েছে। শেষ দশ মিনিটের জন্য খেলালেও যদি কোনও ট্যাকলে হ্যারির গোড়ালি ভেঙে যেত তা হলে? তাই ঝুঁকি নিইনি,’’ বলেছেন ইংল্যান্ড কোচ। আর তাঁর দলের ডিফেন্ডার গ্যারি ক্যাহিলও মনে করেন ফুটবলারদের চোট থেকে বাঁচানো ছাড়া অন্য কিছু দল গড়ার সময় ভাবেননি। তাঁর দাবি, কলম্বিয়া কঠিন প্রতিপক্ষ হলেও তাঁরা জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।

এ দিকে অপেক্ষাকৃত কঠিন দিকে পড়ে গেলেও ব্রাজিলের মতো শক্তিশালী দলের মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছেন না বলে দাবি করলেন বেলজিয়ামের কোচ রবের্তো মার্তিনেস। তিনি নিজেও কিন্তু প্রথম দলের ন’জনকে নামাননি। অনেকের অনুমান বেলজিয়াম কোচও সাউথগেটের অঙ্কটাই মাথায় রেখেছিলেন। কিন্তু তাঁর দল নতুনদের নামিয়েই ম্যাচ জিতে গিয়েছে!

এই জয় নিয়ে মার্তিনেস এখন বলছেন, ‘‘জিততেই হবে এমন মানসিকতা নিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দল নামেনি। তবে এক বার মাঠে খেলতে শুরু করলে কেউই ড্র বা হারের কথা ভাবে না। আমার নতুন ছেলেরা যে ভাবে লড়েছে তার জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। একটা দলের সব চেয়ে ইতিবাচক দিক তার মানসিকতা। আমি খুশি যে এই বেলজিয়ামের তেইশ জনই সব সময় জেতার কথা ভাবে।’’

মার্তিনেস অবশ্য এই মুহূর্তে শুধু জাপান ম্যাচ নিয়েই ভাবতে চান। বলেছেন, ‘‘এখন মাথায় শুধু জাপান। এর থেকে বেশি ভাবা মানেই ঝুঁকি নেওয়া। সেটা আমি অন্তত নেব না।’’

জাপানকে হারাতে পারলে কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের খেলা পড়বে ব্রাজিল-মেক্সিকো ম্যাচের বিজয়ীর সঙ্গে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে। যদিও বেলজিয়াম কোয়ার্টার ফাইনালে যাবেই মানছেন না মার্তিনেস। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা ঘটনা যে জাপান ম্যাচের আগে আমরা যথেষ্ট সময় হাতে পাচ্ছি। যাদের চোট আছে তারাও আশা করি সুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু প্রতিপক্ষ হিসেবে জাপান মোটেই দুর্বল নয়। যারা ভাবছেন আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেই গিয়েছি, তাদের জন্য আমার একটাই কথা, কাজটা মোটেই সহজ নয়।’’

মার্তিনেস আরও বলেছেন, ‘‘সবাই বুঝছে বিশ্বকাপ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা কত কঠিন। জার্মানির মতো দল ছিটকে গিয়েছে। আমার তো মনে হয় কেউই এতটা ভাবেনি। তাই আমরাও শেষ আটে যাবই বলে দেওয়া বোকামো। মোদ্দা কথা, জাপানকে হারাতে আমাদের আরও ভাল খেলতে হবে।’’

জাপানকে কেন এতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন, মার্তিনেস তা-ও ব্যাখ্যা করেছেন, ‘‘গত বছরের শেষেই আমরা জাপানের সঙ্গে ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলেছিলাম। সেই ম্যাচ আমরা এক গোলে জিতেছিলাম ঠিকই কিন্তু দারুণ উপভোগ্য লড়াই হয়েছিল। জানি ওদের দলে এখন নতুন কোচ এসেছে। কিন্তু দলটা একই আছে।’’

জাপানের প্রশংসা করতে গিয়ে তাঁর আরও কথা, ‘‘এশিয়ার এই দলটা সব সময় উন্নতি করছে। দারুণ সুসংগঠিত ওরা। একটা সুনির্দিষ্ট রণনীতি নিয়ে খেলে। তাই এমন একটা শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে নিজেদের এগিয়ে রাখতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন