আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হবে কোন দল? বেঙ্গালুরু, সালগাওকর না ইস্টবেঙ্গল? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে ফুটবল-অঙ্কে বিশেষজ্ঞ লোকেরা যতটা না চিন্তিত, তার চেয়েও বেশি সমস্যায় তাঁরা পড়েছেন অবনমনের হিসেব কষতে গিয়ে।
এই মুহূর্তে যে তিনটি দল আই লিগ তালিকার নেমে যাওয়ার প্রশ্নে সবথেকে খারাপ জায়গায়, সেই তিন ক্লাবের হট-সিটে রয়েছেন তিন বঙ্গসন্তান। মহমেডানের কোচ সঞ্জয় সেন, চার্চিল ব্রাদার্সের টিডি সুভাষ ভৌমিক এবং ইউনাইটেড টিডি সুব্রত ভট্টাচার্য। সবথেকে মজার ব্যাপার হল, আতঙ্কে থাকলেও মুখে তিন জনই বলছেন, তাদের অঙ্ক মিললে টিমের অবনমন হবে না।
লিগ টেবিলের যা পরিস্থিতি তাতে তিন দলের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ডুরান্ড-আইএফএ শিল্ড জয়ী মহমেডানের। ২১ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট পেন-জোসিমারদের। খেলতে হবে আরও তিনটি ম্যাচ। এবং সব ম্যাচকেই নক আউট হিসেবে দেখছেন সঞ্জয়। লিগ টেবিলের লাস্ট বয়দের মধ্যে যাতে অতঙ্ক ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য সাদা-কালো ড্রেসিংরুমে এখন একটাই স্লোগান ঝুলিয়ে দিয়েছেন চেতলার বাসিন্দা, “ডু ওর ডাই, সব ম্যাচ জেতা চাই।” সঞ্জয় নিজেও বললেন, “লড়াইটা কঠিন হলেও আমরা এখনও অবনমন বাঁচাতে পারি। সে কথা বলেই ফুটবলারদের মানসিক ভাবে প্রস্তুত করছি।” মহমেডানের সামান্য হলেও সুবিধা পাহাড় থেকে আসা দুই দল রাংদাজিদ এবং লাজং এফ সি কলকাতায় এসে তীব্র গরমে মুখোমুখি হবে লুসিয়ানোদের।
অভিজ্ঞ চার্চিল ব্রাদার্সের টিডি আবার অবনমন নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নন। বরং তিনি আত্মবিশ্বাসী, তাঁর দলের কোনও ভাবেই অবনমন হবে না। লিগ টেবিলের ১২ নম্বরে থাকা গোয়ান দলটির পয়েন্ট ২০ ম্যাচে ১৯। খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে নড়বড় করছে চার্চিল। তবু কোন অঙ্কে এত নিশ্চিন্তে রয়েছেন নিউ আলিপুরের বাসিন্দা? “আমার মাথায় সব অঙ্কের হিসেব রয়েছে। গোলগুলো মিস না হলে, স্পোর্টিং ম্যাচেই তিন পয়েন্ট আমরা পেয়ে যাই। তবে ঘাবড়ানোর মতো কোনও কারণ নেই। আমরা সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলেছি। চার ম্যাচ হাতে রয়েছে। গাড়ির কখন গতি বাড়াতে হয় আর থামাতে হয় আমি জানি।”
মহমেডান বা চার্চিলের চেয়ে কিছুটা ভাল জায়গায় রয়েছে সুব্রতর দল। তবে ‘ডেঞ্জার জোন’-এর বাইরে নয়। ২১ ম্যাচে দীপক মণ্ডল-লালকমল ভৌমিকদের পয়েন্ট ২২। সুব্রতও ময়দানে পোড় খাওয়া কোচ। বাগানের অবনমন বাঁচিয়েছেন। লিগ তালিকার সিঁড়ি ভাঙার অঙ্কে তিনিও সুভাষের মতোই দক্ষ। “কোনও ভাবে গোল খাওয়াটা আটকাতে হবে। আর বাকি ম্যাচগুলোর মধ্যে একটি ম্যাচ জিততে পারলে তো কোনও সমস্যাই থাকবে না।” এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, “মোহনবাগান (২২ ম্যাচে ২৪) এবং রাংদাজিদও (২২ ম্যাচে ২৪) কিন্তু অবনমনের আওতায় বাইরে নয়।”
রবিবার কম-বেশি অবনমনের আওতায় থাকা পাঁচ দলেরই ম্যাচ রয়েছে। মুখোমুখি হবে মোহনবাগান-ইউনাইটেড, মহমেডান-রাংদাজিদ, চার্চিল-স্পোর্টিং ক্লুব। সুতরাং ১৩ এপ্রিল অবনমনের ছবিটা অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।