ক্রিজে যাওয়ার সময় বলে গেল, দাঁড়াও জিতিয়ে আসছি

কেকেআরের অন্দরমহলের সব খবর নিয়ে পূর্ব ভারতে শুধু আনন্দবাজারে কলম ধরছেন ক্যাপ্টেন গৌতম গম্ভীরইউসুফ পাঠান এক কথায় সুপারম্যানের মতো ব্যাট করল। প্রথম দিকে ওর ক্যাচ পড়াকে বাদ দিলে, ওকে দেখে মনে হল যেন বললে জলের উপর দিয়েও হেঁটে যাবে! আমার মনে হয়, কখনও না কখনও ইউসুফ পাঠানের মতো পারফর্মারকে দেখাটা ইডেন গার্ডেন্সের মতো মঞ্চের প্রাপ্য। ভাল লাগছে ভেবে যে, দুর্দান্ত একটা সময়ে পাঠান ইডেনকে সেই প্রতিদানটা দিল। আপনারা নিশ্চয়ই বরোদা বম্বারের নির্মম দিকটা দেখে রাখলেন। কিন্তু আমি ওর মধ্যেকার শিশুকেও শনিবার দেখে ফেললাম!

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৪ ০৩:৫৪
Share:

ইউসুফ পাঠান এক কথায় সুপারম্যানের মতো ব্যাট করল। প্রথম দিকে ওর ক্যাচ পড়াকে বাদ দিলে, ওকে দেখে মনে হল যেন বললে জলের উপর দিয়েও হেঁটে যাবে! আমার মনে হয়, কখনও না কখনও ইউসুফ পাঠানের মতো পারফর্মারকে দেখাটা ইডেন গার্ডেন্সের মতো মঞ্চের প্রাপ্য। ভাল লাগছে ভেবে যে, দুর্দান্ত একটা সময়ে পাঠান ইডেনকে সেই প্রতিদানটা দিল। আপনারা নিশ্চয়ই বরোদা বম্বারের নির্মম দিকটা দেখে রাখলেন। কিন্তু আমি ওর মধ্যেকার শিশুকেও শনিবার দেখে ফেললাম!

Advertisement

মণীশ আর রবিন যখন ব্যাট করছিল, আমার পাশেই বসেছিল পাঠান। আর ও এমন ভাবে একটা প্রশ্ন আমাকে করল, যা কি না পাঠানের পক্ষেই করা সম্ভবঅব ক্যয়া করনা হ্যায়? ম্যায় ক্যায়সে খেলুঁ? আমাকে এখন কী করতে হবে? কী ভাবে খেলতে হবে? আমার উত্তরটা খুবই সোজাসাপ্টা ছিল: হর বল পর মারনা হ্যায়। প্রত্যেকটা বলে চালাতে হবে তোমাকে। পাঠানকে দেখলাম একটু হাসল, হেসে বলল, “বস অব মুঝ পর ছোড় দে, ম্যায় ম্যাচ জিতা কর আউঙ্গা।” ওকে দেখে মনে হল, বাড়িতে একা রাজত্ব করার লাইসেন্স পেয়ে গিয়েছে। মনে হয়, পরিস্থিতিটাও ওর জন্যই তৈরি ছিল।

তার পর পাঠান দেখলাম, আমাদের কম্পিউটার অ্যানালিস্ট শ্রীকান্তের কাছে গেল। লিগ টেবলে দু’নম্বর স্লটটায় উঠতে হলে অঙ্কের ব্যাপাস্যাপারগুলো কী আছে না আছে, জানতে। শ্রীকান্ত ওকে বোঝাতে শুরু করল দু’নম্বরে শেষ করার গুরুত্বটা কত গভীর। তা হলে ফাইনালে ওঠার জন্য আমরা দু’টো সুযোগ পাব। পাঠান ওকে মাঝপথেই থামিয়ে দিল। বলল, “মুঝে উয়ো সব নহি পুছনা। মুঝে সিরফ ইতনা বোল ম্যাচ কিতনে ওভার মে খতম করনা হ্যায়।” অর্থাৎ, আমার ও সব জানার দরকার নেই। শুধু বলো ম্যাচটা কত ওভারের মধ্যে শেষ করতে হবে। অ্যানালিস্ট উত্তর দিল, “১৫.২”। জানি না ইউসুফ কী ভেবে বলল, “বস অব মুঝ পে ছোড় দে।” তার পর যা হল, এ বারের আইপিএলে কেকেআরের জন্য সেটা গর্বের ইতিহাস।

Advertisement

ডেল স্টেইনকে যে ভাবে ধ্বংস করল পাঠান সেটা আমার বিশেষ ভাল লেগেছে। বিশ্বসেরাকে মারা সহজ নয়। তার উপর যখন আস্কিং রেট অত বেশি। পাঠানের মনোভাব দেখলাম আমারই মতো। ম্যাচের আগে গোটা টিমকে বলেছিলাম, এটা আমাদের জন্য কুড়ি ওভারের ম্যাচ নয়। টার্গেট যা-ই থাকুক, আমরা হারি বা জিতি, ম্যাচটা আমাদের ১৫.২ বা তার কম ওভারে শেষ করতে হবে। আরও বলেছিলাম, আমি এ রকম একটা পরিস্থিতি চাই না যেখানে পনেরো ওভারের পর স্কোরটা ১২০-৪, আর আমরা জেতার জন্য ঝাঁপাচ্ছি। শুধু রেকর্ডের জন্য জিততে চাওয়ার মতো ক্যাপ্টেন আমি নই। আমি এমন একজন লিডার হতে চাই যে অর্থপূর্ণ জয় খোঁজে, যে বিপক্ষকে ধ্বংস করে দিতে চায়। ব্যাপারটা পাঠান খুব ভাল বুঝেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন