রেকর্ডের ম্যাচে চুরমার ইংল্যান্ড

বল হাতে এক জন করলেন তাঁর দেশের সর্বকালের সেরা ওয়ান ডে বোলিং। আর তাঁর দলের অধিনায়ক ব্যাট হাতে করলেন বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি। এবং নিউজিল্যান্ড শুধু ইংল্যান্ডকে ৮ উইকেটে বিধ্বস্ত করল তাই নয়, একশো ওভারের ম্যাচ ৪৫.৪ ওভারেই সাঙ্গ করে দিল!

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়েলিংটন শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৮
Share:

২৫ বলে ৭৭

বল হাতে এক জন করলেন তাঁর দেশের সর্বকালের সেরা ওয়ান ডে বোলিং। আর তাঁর দলের অধিনায়ক ব্যাট হাতে করলেন বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি। এবং নিউজিল্যান্ড শুধু ইংল্যান্ডকে ৮ উইকেটে বিধ্বস্ত করল তাই নয়, একশো ওভারের ম্যাচ ৪৫.৪ ওভারেই সাঙ্গ করে দিল!

Advertisement

টিম সাউদির ৭-৩৩ নিউজিল্যান্ডের সেরা ওয়ান ডে বোলিং। তার মধ্যে দ্বিতীয় স্পেলে কিউয়ি পেসার ১৮ বলে পাঁচ উইকেট নেন ১০ রান দিয়ে। যার ধাক্কায় ইংল্যান্ড ১২৩ অলআউট হয়ে যায়। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাকালাম ২৫ বলে ঝোড়ো ৭৭ রান তুলে ওয়েস্টপ্যাক স্টেডিয়ামে দু’উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন টিমকে। মাত্র ১২.২ ওভারেই।

সাউদির বোলিং হিসেব যদি বিশ্বকাপের সর্বকালীন সেরার তালিকায় তিন নম্বরে থাকে, তা হলে ম্যাকালাম মাত্র ১৮ বলে পঞ্চাশ করে কাপ ইতিহাসে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড গড়লেন। ভাঙলেন নিজেরই পূর্ব রেকর্ড (২০০৭ বিশ্বকাপে ২০ বলে হাফসেঞ্চুরি)।

Advertisement

যা দেখেশুনে ইংরেজ মিডিয়া ইয়ন মর্গ্যানদের সমালোচনায় ফেটে পড়েছে। ‘দ্য স্পোটির্ং টাইমস’-এর তীব্র কটাক্ষ, ‘ইংলিশ ক্রিকেট মৃত। মৃতদেহকে কবর দেওয়া হয়েছে। ছাইভষ্ম নিউজিল্যান্ডে নিয়ে যাওয়া হবে।’

বিরানব্বইয়ে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ফাইনাল খেললেও এ বার পুল থেকে নকআউটেই যাবে কি না সেটাই প্রশ্ন ইংরেজ সমর্থকদের। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১১১ রানে বিধ্বস্ত হওয়ার পর নিউজিল্যান্ডের কাছে ম্যাচের অর্ধেকেরও বেশি থাকতে চুরমার হয়ে এখনও পয়েন্টের খাতাই খুলতে পারেনি মর্গ্যানের দল।

ওয়েলিংটন মাঠ ঠাসা ৩৩ হাজার সমর্থকের গর্জনের মধ্যে চূড়ান্ত একপেশে ম্যাচ জিতে কিউয়ি ক্যাপ্টেন ম্যাকালাম বলেই ফেলেন, “এ তো অবিশ্বাস্য জয়! যাকে শুধু গ্রেট বলাটা বোধহয় কম বলা হয়ে যাবে।” তাঁর প্রাক্তন কেকেআর সতীর্থ ইয়ন মর্গ্যানের দলকে খোঁচা দিয়ে ম্যাকালামের আরও মন্তব্য, “ইংল্যান্ড দল এই মুহূর্তে একটু ঘেঁটে রয়েছে জানতাম, সে জন্য চেয়েছিলাম আজ মাঠে ওদের একদম চুপ করিয়ে দিতে। কিন্তু তা বলে ইংল্যান্ডকে ম্যাচের এত বেশি ওভার বাকি থাকতে, এত বড় ব্যবধানে হারানোটা অভাবনীয়!”

ম্যাকালামের কাপ-রেকর্ড সত্ত্বেও ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন সাউদি। এবং তাঁর পেসারকে নিউজিল্যান্ড নেতার দরাজ সার্টিফিকেট, “বহু বছরের মধ্যে আমার দেখা সেরা বোলিং। টিম আমাদের বোলিং গ্রুপকে অনেক দিন ধরেই নেতৃত্ব দিচ্ছে। আর বিশ্বকাপে ট্রেন্ট বোল্টের সঙ্গে ওর পেস বোলিং জুটি ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। দু’জনই দেদার সুইং করে ব্যাটসম্যানদের অবস্থা বেহাল করে তুলছে।” সাউদি আবার নিজের সাফল্যের কৃতিত্ব দিচ্ছেন বোলিং কোচ শেন বন্ডকে। “পর্দার আড়ালে বন্ডের প্রচুর অবদান রয়েছে। আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে ও প্রচুর কাজ করে চলেছে। তা ছাড়া আজ আমাদের সব কিছুই ঠিকঠাক হয়েছে। এ রকম এক একটা দিন এক-একটা টিমের জন্য আসে। আর সেই রকম দিন যদি আজকের মতো সমর্থকে ঠাসা ঘরের মাঠে আসে তা হলে কথাই নেই।”

অন্য দিকে হতাশ ইংল্যান্ড অধিনায়কের ব্যাখ্যা, “কন্ডিশনটা নিউজিল্যান্ড পেসারদের সাহায্য করেছে। আমাদের গোটা ইনিংসে ওরা সুইং পেয়েছে। যা অপ্রত্যাশিত! তবে আমরা ক্রিকেটের প্রাথমিক জিনিসগুলো কিন্তু ঠিকঠাক করিনি। যা প্র্যাকটিস করেছি, তা ম্যাচে দেখাতে পারিনি। তা সত্ত্বেও এখনও আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারি। জানতামই গ্রুপের প্রথম দু’টো ম্যাচ আমাদের জন্য কঠিন। তাই এই দুটো হারে প্যানিক না করে বাকি চারটে ম্যাচ থেকে আমাদের পুরো পয়েন্ট তোলার জন্য ঝাঁপানো উচিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন