বেড়াতে যাওয়ার অজানা খরচে পকেটে চাপ পড়ে? কী ভাবে তা কমাবেন? ছবি: সংগৃহীত।
বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গে মাথায় রাখতে হয় বাজেটের কথাও।শুধু ইচ্ছামতো জায়গা, হোটেল বেছে নিলেই হয় না, প্রতিটি ধাপে হিসাব কষতেই হয়।বিশেষত কম ব্যয়ে ঘুরতে গেলে খুঁটিনাটি খরচ আগে থেকে বুঝে না নিলে সমস্যা হয় ভীষণ। কিন্তু তার পরেও দেখা যায়, বাজেটের সঙ্গে বাস্তব খরচ মিলছে না। যতই চেষ্টা করুন না কেন মাথা পিছু ১৫ হাজার খরচ ধরলে তা ১৭-১৮ হাজার টাকা হয়েই যায়।
কিন্তু এত হিসাবেরও পরেও কী ভাবে খরচ বাড়ে? ভ্রমণ নিয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের কথায়, ভাবনা আর বাস্তবে তফাত থেকে যায়।সেই কারণেই এমন কিছু ব্যয় হয়, যা কিছুতেই আটকানো সম্ভব হয় না।
কোন দিকে নজর দিলে সফরের অজানা খরচ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে?
হোটেল: অনলাইনেই হোটেল বুকিং করেন অনেকে। নানারকম আকর্ষণীয় ছাড়ও থাকে। সেই ছাড় দেখে বাজেট তৈরি করলে কিন্ত মুশকিল হতে পারে। ছাড় বা অফারের সঙ্গে অনেক শর্ত জুড়ে দেওয়া হয় অনেক সময়, আবার যে লোভনীয় দাম দেখানো হয়, তার সঙ্গে ট্যাক্স যুক্ত থাকে না। ফলে হোটেল বুকিং করার আগে ট্যাক্স নিয়ে পুরোপুরি কত খরচ হচ্ছে, সেই হিসাব কষে নেওয়া জরুরি।দরকার হলে সরাসরি হোটেলের সঙ্গে কথা বলে দেখতে পারেন, কোনও অফার পাওয়া যায় কি না। হোম স্টের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে বুকিং করলেও খরচ কিছুটা কমানো যায়।
অজানা খরচ: বেড়ানোর জন্য প্রতি দিনের গাড়ির খরচ হিসাব করেছেন, কিন্তু পার্কিং খরচ, টোল, হঠাৎ করে গাড়ি বুক করতে গেলে বাড়তি খরচের ধাক্কাগুলি হিসাব করেন কী? অ্যাপ ক্যাব বুক করলেও, পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুযায়ী ভাড়ায় তফাত হয়। তা ছাড়া, হয়তো খুব ভোরে ট্রেন বা অনেক রাতে উড়ান— সেই সময় গণ পরিবহণ পাওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গাড়ি ভাড়া করে গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্যও অতিরিক্ত টাকা লেগে যায়।এই খরচগুলিও ধরতে হবে।
আনুষঙ্গিক খরচ: খরচ বাঁচাতে গণ পরিবহণ বেছে নিলেন। রাতের উড়ান ধরতে অনেক আগেই বিমানবন্দরে পৌঁছলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে কফি, স্ন্যাক্স কিনতে গেলেই পকেটে চাপ পড়বে। যে যে খাবার সঙ্গে রাখা যায়, সেগুলি রাখতে পারেন।যে কোনও জায়গায় জল কিনে খাওয়া কিন্তু ব্যয় অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। সঙ্গে একটি পুনর্ব্যবহারযোগ্য বোতল রাখুন। হোটেল হোক বা বিমানবন্দর— যে কোনও জায়গা থেকে সুবিধামতো জল ভরে নিন। বিমানে জল নিয়ে উঠতে দেয় না। সেক্ষেত্রে বোতল খালি করে নিতে হবে। যে জায়গাতে যাচ্ছেন, সেখানে দোকানপাট পেলে মুখরোচক খাবার বা শুকনো খাবার কিনে রাখতে পারেন। এতেও রেস্তরাঁয় খাবার খরচ কিছুটা হলে কমানো যায়।
পর্যটক দেখলেই দাম বেড়ে যায়: যে কোনও পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক দেখলেই গাড়ি ভাড়া হোক বা জিনিসের দাম বাড়িয়ে বলার প্রবণতা থাকেই। সে কারণে দরাদরি জরুরি। এমন ঝামেলা এড়াতে, অ্যাপ বাইক, ক্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। গণ পরিবহণ ব্যবহার করলে স্থানীয়দের থেকে নির্দিষ্ট স্থানের অটো ভাড়া, রিকশা ভাড়া জেনে নিন। চেষ্টা করুন এমন জায়গা থেকে পোশাক, ঘর সাজানোর জিনিস না কিনতে।
বুকিং অ্যাপ: কোনও একটি পর্যটন কেন্দ্রে বিশেষ স্থানে বেড়ানোর জন্য এক বা দুই দিন অথবা পাঁচ-দিনের বিশেষ প্যাকেজ করে দেয় বিভিন্ন বুকিং অ্যাপ। নিজে একবার খোঁজ নিতে পারেন, সেখানকার খরচ-খরচা কী রকম? অনেকে প্যাকেজ সুবিধাজনক বলে সেটি বেছে নেন। খরচের হিসাব করেন না। কিন্তু নিজেরা উদ্যোগী হলে অনেক সময়েই কম খরচে সেই সফর করা যায়।