Sidhamula

হাত বাড়ালেই নদী, পাহাড়, অরণ্য, দিন তিনেকের ছুটি থাকলে চলুন সিধামুলা

পাহাড়, অরণ্য, বন্যপ্রাণ নিয়ে সেজে উঠেছে সিধামুলা। ওড়িশার চেনা, জনপ্রিয় জায়গার তালিকায় এই জায়গার নাম না থাকলেও পর্যটনপ্রেমীদের আনাগোনা রয়েছে সেখানে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৫ ১২:৩৬
Share:

পাহাড়, অরণ্য, বন্যপ্রাণ নিয়ে সেজে উঠেছে সিধামুলা। ছবি: সংগৃহীত।

উঠল বাই তো কটক যাই। তবে কটকেই চলুন। সেখানে থাকতে হবে না। যেতে হবে শহর থেকে মোটামুটি ৯৮ কিলোমিটার দূরে মহানদীর তীরে।

Advertisement

পাহাড়, অরণ্য, বন্যপ্রাণ নিয়ে সেজে উঠেছে সিধামুলা। ওড়িশার চেনা, জনপ্রিয় জায়গার তালিকায় এই নাম নেই। পর্যটনপ্রেমী, ভ্রমণপিপাসুদের কেউ কেউ এমন জায়গার নাম শুনলেও শুনে থাকতে পারেন। তবে নারায়ণগড় জেলার এই স্থানের পর্যটন সম্ভাবনার কথা অনুমান করেই ওড়িশা সরকার এখানেই বানিয়েছে পরিবেশ বান্ধব পর্যটক আবাস।

গাড়ি নিয়ে ঘোরা যায় আশপাশ। তবে সরকারি থাকার জায়গাটি যে জায়গায়, সেখান থেকেই দৃশ্যমান পাহাড় এবং নদী। শীতের দিনেই এই সব স্থানে পর্যটকদের ভিড় বাড়ে। তবে বর্ষার মহানদীর রূপ একেবারেই ভিন্ন। যত দূর চোখ যায়, ঢেউ খেলানো টিলার মতো পাহাড় চলে গিয়েছে। একটা শেষ হয়েছে, আর একটি শুরু হয়েছে। তারই কোলে আপন গতিতে বয়ে চলেছে মহানদী। শীতে জল শুকিয়ে বালির চর জেগে উঠলে সে এক রকম রূপ, আর বর্ষার সৌন্দর্য একেবারেই ভিন্ন। চর ছাপিয়ে বয়ে চলে মহানদী। বৃষ্টির জলে ধুলোর পরত মুছে গিয়ে পাহাড়, অরণ্য হয়ে ওঠে ঘন সবুজ। মনে হতে পারে, বর্ষা যেন এক নিমেষেই একটি ছবির রঙের ঔজ্জ্বল্য বাড়িয়ে দিয়েছে।

Advertisement

বর্ষা নয়, বর্ষার শেষে পুজোর মরসুমে, শীতেও এই জায়গা ঘোরা যায়। তবে ঋতুভেদে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা হবে ভিন্ন। গাছগাছালি ঘেরা সিধামুলায় দেখার বলতে নদী এবং পাহাড়ের রূপ। আর রয়েছে পাখি, বন্যপ্রাণ। দিনভরই কমবেশি কানে আসে পাখির কিচিরমিচির। সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের রূপও কম আকর্ষক নয়।

মহানদী অসংখ্য কুমিরের আশ্রয়। সিধামুলা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বাদমূল। এই জায়গার পরিচিতি সাতকোশিয়া নামেও। সেখান থেকেই বোটিংয়ের ব্যবস্থা। যন্ত্রচালিত নৌকোয় ভেসে পড়া যায় মহানদীর বুকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি চোখে পড়তে পারে কুমিরের আনাগোনা। চরের দিকে চোখ রাখলে দেখতে পেতেও পারেন, বিশাল বপু নিয়ে থম মেরে পড়ে রয়েছে তারা। রোদ পোহাচ্ছে একটুও না নড়েচড়ে।

পায়ে হেঁটে বেরিয়ে পড়তে পারেন সিধামুলার আশপাশ ঘুরতে। সামনেই নজরমিনারে উঠে চারপাশের সৌন্দর্য দেখে নিন। দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দৃশ্যমান হয় এখান থেকে। কাছেই রয়েছে ওড়িশার স্বাপত্যশৈলীতে নির্মিত গোকুলানন্দ মন্দির। গাড়ি নিয়ে চলে যেতে পারেন বাজারেও। স্থানীয় খাবারের স্বাদ না পেলে কি ভ্রমণ সম্পূর্ণ হয়?

প্রকৃতি যাঁরা ভালবাসেন, তাঁদের এ স্থান পছন্দ হবেই। পাখি দেখা এবং ফোটো তোলার শখ থাকলে বেরিয়ে পড়তে পারেন কাকভোরেই। দু’টো দিন উন্মুক্ত পরিবেশের সান্নিধ্য, স্থানীয় খাবারের স্বাদ ভুলিয়ে দেবে শহুরে ক্লান্তি।

সিধামুলায় এক বা দু’দিন কাটিয়ে ফেরার পথে ঘুরে নিন দেওঝড় জলপ্রপাত। ছবি: সংগৃহীত।

সিধামুলায় এক বা দু’দিন কাটিয়ে ফেরার পথে ঘুরে নিন দেওঝড় জলপ্রপাত। বর্ষায় বা বর্ষার শেষে গেলেই তা সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য হবে। দূরত্ব ২৩ কিলোমিটারের মতো। তালাপুঞ্জি গ্রামে হিন্দোল-বাদামা ফরেস্ট রেঞ্জের কাছে তালাপুঞ্জি গ্রামে এই জলপ্রপাতটি স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। মূল প্রবেশদ্বার থেকে জলপ্রপাতের দূরত্ব ৩৫০ মিটার। গাছগাছালি ঘেরা পথ দিয়ে হেঁটে সেখানে পৌঁছতে হয়। অরণ্যের মধ্যে জলপ্রপাতের অবস্থান, এই জায়গার রূপ বাড়িয়েছে।

কী ভাবে যাবেন?

কটক, ভুবনেশ্বর, ঢেঙ্কানল— ওড়িশার এই তিন জায়গায় ট্রেনে পৌঁছে গাড়িতে সিধামুলা যেতে পারেন। কটক থেকে দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের মতো। ভুবনেশ্বর থেকে দূরত্ব ৯৫ কিলোমিটার। ঢেঙ্কানল থেকে দূরত্ব ৮০ কিলোমিটার। কাছের স্টেশন দশপাল্লা। বিমানে বা বাসে ভুবনেশ্বর পৌঁছে, বাকি রাস্তা গাড়িতে যেতে পারেন। কলকাতা থেকে সড়কপথে দূরত্ব ৫১০ কিলোমিটার। যেতে ১১-১৩ ঘণ্টার মতো সময় লাগতে পারে।

কোথায় থাকবেন?

প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে চাইলে ওড়িশা ইকো ট্যুরিজ়মের সিধামুলা নেচার ক্যাম্প আছে। এ ছাড়া, সেখান থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে নরসিংহপুরে অনেকগুলি হোটেল আছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement