Sikkim Travel Tips

পরিকল্পনা করেও যেতে পারছেন না উত্তর সিকিম? গ্যাংটক হয়ে আর কোথায় যেতে পারেন?

যাওয়ার কথা ছিল ইয়ুমথাং, গুরুদোংমার। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তায় ধস। উত্তর সিকিম যাওয়ার অনুমতি মিলছে না। শেষ মুহূর্তে গ্যাংটক হয়ে আর কোথায় যেতে পারেন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৫ ১২:০৬
Share:

সিকিমের ছবির মতো সুন্দর গ্রাম ছায়াতাল। ছবি: শাটারস্টক।

গুরুদোংমার দেখার আশ বহু দিনের? সেই স্বপ্ন ছুঁতেই পরিকল্পনা ছিল উত্তর সিকিম যাওয়ার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভেস্তে গেল সব। সম্প্রতি প্রবল বৃষ্টিতে উত্তর সিকিম বিপর্যস্ত। পর্যটকদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি মিলছে না। গ্যাংটকের একটি ভ্রমণ সংস্থা জানাচ্ছে, কবে সেই অনুমতি মিলবে, এখনও কোনও খবর নেই। ফলে, পরিকল্পনা বাতিল করতে হচ্ছে বা হয়েছে পর্যটকদের। উত্তর সিকিম যেহেতু গ্যাংটক হয়েই যাওয়া হয়, সেখানেই আগাম ঘর বুকিং করে ফেলেছেন? ঘোরা বাতিল করতে না চাইলে গ্যাংটক ছুঁয়ে কী ভাবে, কোথায় নতুন করে বেড়ানোর পরিকল্পনা করতে পারেন?

Advertisement

গ্যাংটকের আনাচ কানাচ: সিকিমের নানা প্রান্তে ভ্রমণের সম গ্যাংটক ছুঁয়ে গেলেও, এই শহরটি ঘোরার জন্য অনেকেই সে ভাবে সময় বরাদ্দ করেন না। শেষ মুহূর্তে দূরে কোথাও না গিয়ে গ্যাংটকই ঘুরে নিতে পারেন। এখানকার এমজি মার্গ বা মল সবচেয়ে জমজমাট। রাস্তার দু’পাশে রেস্তরাঁ, দোকানপাট। কাছেই রয়েছে শীতের জিনিসপত্র কেনাকাটার জন্য লাল বাজার। একটি দিন পায়ে হেঁটে ঘুরতে পারেন এই জনপদের আনাচ-কানাচ। রাস্তার পাশে অজস্র ক্যাফে, স্থানীয় খাবারের রেস্তরাঁ রয়েছে। আছে পানশালাও। খেয়ে, ঘুরে নিজস্ব মেজাজে উপভোগ করা যায় শহর।

একটি দিন গাড়ি ভাড়া করে ঘুরে নিতে পারেন গ্যাংটকের আশপাশ। দ্রষ্টব্যের মধ্যে পাবেন বাকথং জলপ্রপাত, দো দ্রুল চোর্তেন মনাস্ট্রি, রাজভবন, সাগলাখাং মনাস্ট্রি। তবে সাইটসিইংয়ের অন্যতম আকর্ষণ রুমটেক মনাস্ট্রি। পাহাড়ের মাথায় শান্ত, সুন্দর স্থানটি পর্যটকদের ভারি পছন্দের।

Advertisement

ছাঙ্গু থেকে বাবা মন্দির যাওয়ার পথে কুপকুপ লেক। নিজস্ব চিত্র।

ছাঙ্গু, বাবা মন্দির, নাথুলা

গ্যাংটকে থেকে ঘুরে নিতে পারেন ছাঙ্গু লেক, বাবা মন্দির এবং নাথুলা। এ জন্য আগাম অনুমতি প্রয়োজন। দরকার পাসপোর্ট ছবি এবং ভোটার কার্ড বা পাসপোর্ট। ১২ হাজার ৩১৩ ফুট উচ্চতায় পাহাড় ঘেরা হ্রদটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পর্যটনক্ষেত্র। সেখানে যাওয়ার পথটিও কম আকর্ষক নয়। রয়েছে ছোট-বড় ঝর্না। পথের ধারে প্রবল হাওয়ায় উড়তে থাকা রঙিন পতাকার সারি সেই সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। গ্যাংটক থেকে এক দিনেই এই স্থানগুলি ঘুরে ফিরে আসা যায়। গাড়ি ভাড়া করে যেমন যাওয়া যায়, তেমনই রয়েছে শেয়ার জিপের ব্যবস্থাও।

রেশমপথ

গ্যাংটকে পৌঁছে পরিকল্পনা করতে পারেন পূর্ব সিকিমে রেশমপথ ভ্রমণের। সে ক্ষেত্রে আলাদা করে ছাঙ্গু, নাথুলা যাওয়ার দরকার হবে না। ছাঙ্গু, বাবা মন্দিরের রাস্তা ধরেই গাড়ি ছুটবে নাথাং ভ্যালির দিকে। এই পথে যেতেও আগাম অনুমতি নিতে হয়। ১৩, ৫০০ ফুট উচ্চতার নাথাং পাহাড় ঘেরা ছোট্ট উপত্যকা। পরিষেবা যৎসামান্য। কয়েকটি মাত্র হোম স্টে রয়েছে থাকার জন্য। তবে নাথাংয়ের রূপ অবর্ণনীয়। প্রবল ঠান্ডার কামড় সহ্য করার ক্ষমতা থাকলে এক রাতের জন্য থেকে যেতে পারেন সেখানে। রেশমপথের আর এক রাত্রিবাসের আস্তানা জুলুখ। এ ছাড়া একটু নীচের দিকে পদমচেন, লিংথামে থেকে যেতে পারেন। থাম্বি এবং গানেক ভিউ পয়েন্ট থেকে দেখা যায় পাহাড়ের বুকে সর্পিলাকার রেশম পথ।

গানেক ভিউ পয়েন্ট থেকে রেশম পথ বা সিল্ক রুট। নিজস্ব চিত্র।

আগমলোক

যদি সঙ্গে শিশু বা বয়স্ক থাকেন, বেশি উচ্চতার স্থান বা অতিরিক্ত ঠান্ডার জায়গা বাদ দিতে চান, সরাসরি পূর্ব সিকিমের আগমলোকে চলে আসতে পারেন। পাহাড়ি শান্ত জনপদটি নিরালায় দু’দিন ক্লান্ত জীবন থেকে বিরতি নেওয়ার জন্য উপযুক্ত। ঘুরে নিতে পারেন রোলেপ, আরিটারও। সেখান থেকে ট্রেন ধরার জন্য কালিম্পং হয়ে নেমে যেতে পারেন নিউ জলপাইগুড়ি।

পেলিং-রাবাংলা

সিকিমের পশ্চিমপ্রান্তে পেলিং এবং রাবাংলাও জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ১০ নম্বর জাতীয় স়়ড়ক ধরে গেলে গ্যাংটক থেকে পেলিংয়ের দূরত্ব ১২৫ কিলোমিটারের কাছাকাছি। নদী, ঝর্না, স্কাইওয়াক, রাজধানীর ধ্বংসাবশেষ—সব কিছুই নিয়েই পেলিং। রিম্বি এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা এখানের দু’টি প্রসিদ্ধ জলপ্রপাত। বর্ষার মরসুমে তা হয়ে ওঠে আরও সুন্দর। পেলিংয়ের অন্যতম আকর্ষণ স্কাইওয়াকের কাচের সেতু। পাহাড়ের মাথায় বৌদ্ধ মন্দির আর তার উপরে রয়েছে চেংরিজ়ের সুউচ্চ মূর্তি। মেঘমুক্ত দিনে সেখান থেকে দৃশ্যমান হয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। পেলিংয়ের জনপ্রিয়তা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়ার জন্য। আকাশ পরিষ্কার থাকলে ভোরের প্রথম রবিকিরণ যখন শ্বেতশুভ্র শিখরে পড়ে, তা দেখার মতো দৃশ্য বটে। পেলিং থেকে ঘুরে নেওয়া যায় রাবদানসে রুইনস। পাহাড়ি জঙ্গলপথে হেঁটে পৌঁছতে হয় সেখানে। ঘুরে নিতে পারেন রাবাংলাও।

গ্যাংটকের এমজি মার্গ। নিজস্ব চিত্র।

রিংচেংপং, ছায়াতাল

আর পাঁচটা পাহাড়ি জনপদ যেমন হয়, রিংচেংপং-ও তেমনই। ঝকঝকে আকাশে কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ-দর্শনের জন্যই এর জনপ্রিয়তা। রয়েছে মনাস্ট্রি এবং আশপাশে ঘোরার কয়েকটি জায়গা। এখান থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরেই ছায়াতাল। এই জায়গাও যেন ক্যানভাসে আঁকা ছবি। পাহাড়ি উপত্যকায় রয়েছে ছায়া নামে ছোট্ট হ্রদ, যাকে বলা হয় তাল।


আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement