Group Travel tips

পর্যটন দলের সঙ্গে ঘুরতে যাবেন? যাওয়ার আগে কোন ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন? জেনে নিন ভাল-মন্দ

দলগত ভ্রমণের যেমন সুবিধা আছে, তেমন কিছু সীমাবদ্ধতাও আছে। পর্যটন সংস্থা হোক বা পরিচিতদের নিয়ে একসঙ্গে ভ্রমণ, দলগত ভ্রমণ শান্তিপূর্ণ করতে হলে কোন ধরনের মানসিক প্রস্তুতি জরুরি?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:২৩
Share:

দলে ঘুরতে যাবেন? তার আগে কোন ধরনের মানসিক প্রস্তুতি থাকা ভাল? ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

ঝক্কি নেই, ঝামেলা নেই, লোকবল না থাকলেও সমস্যা নেই। শুধু পছন্দের জায়গা বেছে নিলেই হল। তার পর নির্দিষ্ট ভ্রমণসূচিতে, নির্দিষ্ট সময়ে বেরিয়ে পড়া। কোথায় খাবেন, কোন গাড়িতে যাবেন, কোনও ভাবনা নেই। কারণ সবটাই পূর্বনির্ধারিত।

Advertisement

অতীতেও এমন দলগত ভ্রমণের চল ছিল। ইদানীং তা আরও বেড়েছে। বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থা এমন দলগত ভ্রমণ করায়, যেখানে বেড়ানোর স্থান, দিনক্ষণ, খরচের হিসাব নির্দিষ্ট করা থাকে। কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে, তা-ও বলে দেওয়া হয়। তাঁদের সময়ের সঙ্গে নিজের সময়টা মানিয়ে নিতে পারলেই হল।

বিশেষত বয়স্ক মানুষেরা বা দম্পতিরা অনেকেই এই ধরনের দলগত ভ্রমণে আগ্রহী। একাকী পুরুষ, মহিলারাও এমন দলে যেতে চান। কারণ মূল সুবিধা হল, খরচ নির্দিষ্ট। তা ছাড়া, বেড়ানোর সঙ্গী না থাকলেও অসুবিধা নেই। একসঙ্গে অনেক জন মিলে বেড়াতে গেলে, বাইরে কোনও বিপদ-আপদ হলে ঝুঁকি কম হয়, সাহায্য পাওয়া যায়। দম্পতি বা একাকী ভ্রমণার্থীদের সমস্যা হল, লম্বা সফরে গেলে গাড়ির খরচটা মাথাপিছু অনেক বেশি হয়ে যায়। যেটা দলগত ভ্রমণে অনেক কম হয়। তা ছাড়া, বয়স্ক মানুষদের পক্ষে সুবিধাজনক কারণ, ঘর বুকিং, টিকিট কাটা, গাইড জোগাড়, খাওয়া— সব কিছু করে দেওয়া হয়।

Advertisement

এই দল যেমন কেউ বন্ধু বা আত্মীয় বা পরিচিতদের নিয়ে তৈরি করতে পারেন, তেমনই বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থাও এমন দলগত ভ্রমণ করায়। তবে দল বেছে নেওয়া বা তৈরি করার আগে, এর সুবিধা-অসুবিধাটুকুও জানা দরকার।

১। দলগত ভ্রমণ মানে নিজের স্বাধীনতা পুরোটাই চলা যায় না। কী ভাবে ঘোরাঘুরি হবে, তা পূর্বনির্ধারিত থাকে। অনেক সময় স্থানীয় আবহাওয়া খারাপ হতে পারে। কিংবা বন্‌ধ হতে পারে। ট্রেন দেরি করতে পারে। আবার আচমকা কারও শরীর খারাপও হতে পারে। ফলে বদলে যাওয়া পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মানসিকতা না থাকলে অশান্তির আবহ তৈরি হবে।

২। একেবারে অচেনা দলে ভ্রমণ করতে হলে, পর্যটন সংস্থার সঙ্গে কথা বলে, জেনে নিতে পারেন, আপনার সমবয়সি কেউ আছেন কি না বা দলের বাকিদের কেমন বয়স। সম্ভব হলে তাঁদের কারও সঙ্গে আগাম আলাপ করে নিতে পারেন। দলের লোকজন সম্পর্কে জেনে সিদ্ধান্ত নিন, মানিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে কি না।

৩। কোনও জায়গায় গিয়ে নিজের মতো ঘুরতে চাইলে, আগেই পরিকল্পনা করে নিতে পারেন। তবে একলা ঘুরলেও, আপনার জন্য যেন নির্ধারিত সময়সূচি মেনে বাকিদের ঘোরাফেরায় যেন অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করা দরকার। এ ক্ষেত্রে দলের বাকিদের সঙ্গে না গিয়ে, নির্দিষ্ট কোনও দিন একেবারে আলাদা করে ঘোরার পরিকল্পনা রাখতে পারেন।

৪। নিয়মানুবর্তীতা দলগত ভ্রমণের মূল শর্ত। কোনও একটি সৈকত দেখে খুব ভাল লাগল। হয়তো মনে হচ্ছে, আর কোথাও না গিয়ে সেখানে বসে থাকলেই ভাল সময় কাটবে। দলগত ভ্রমণে সেই সুযোগ না-ও মিলতে পারে। প্রতিটি স্থানে ঘোরার নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়। তা মেনে চলতে না পারলে, দলের বাকিরা বিরক্ত হতে পারেন, তাঁদের সময় নষ্ট হতে পারে। সুতরাং সকালে ঘুম থেকে উঠে বেরোনোর জন্য প্রস্তুতি হোক বা কোনও স্থানে গিয়ে ঘোরা— দলের নেতৃত্বের নির্দেশ একবারে উড়িয়ে দিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে, যা অভিপ্রেত নয়।

৫। খাবার নিয়ে প্রত্যেকেরই পছন্দ-অপছন্দ রয়েছে। তবে রোজ নিজের পছন্দের খাবারটি মিলবে, এমনটা ভাবা ঠিক নয়। কেউ আমিষ না খেলে, মাছ অথবা ডিম খাওয়ায় আপত্তি থাকলে, আগাম এই বিষয়ে জানিয়ে রাখা যায়। কোনও খাবারে অ্যালার্জি থাকলে তা-ও বলে দেওয়া দরকার। তবে দলগত ভ্রমণে গিয়ে নিজের চাহিদা মেনে খেতে হলে, বাইরে থেকে পছন্দের খাবার কিনে খাওয়া যেতে পারে।

দল এবং ভ্রমণের স্থান বাছাইয়ের আগে মাথায় রাখা দরকার, যে ভাবে ভ্রমণসূচি করা হয়েছে, তা আদৌ পছন্দের সঙ্গে মিলছে কি না। একসঙ্গে অনেক মানুষ থাকলে মতের অমিল হওয়াই স্বাভাবিক। সে ক্ষেত্রে গাড়িতে বসার আসন হোক বা ঘর— মানিয়ে নেওয়ার মানসিকতা খুব জরুরি।

একই সঙ্গে, দলগত ভ্রমণ শেখায় মানুষের পাশে থাকতে। টানা কয়েকটি দিন একসঙ্গে ভ্রমণের ফলে অচেনা মানুষও পরিচিত হয়ে ওঠেন। সকলে মিলে হইহই করা যায়। সঙ্গী সম মানসিকতার হলে একসঙ্গে খাওয়া, ঘোরা— পরিবারের অনুভূতি তৈরি করে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement